ঢাকা     রোববার   ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  ভাদ্র ২৪ ১৪৩১

ট্রাম্পের ওপর হামলা: ব্যর্থতার দায় নিয়ে সিক্রেট সার্ভিস প্রধানের পদত্যাগ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৩৫, ২৪ জুলাই ২০২৪   আপডেট: ০৯:৪৫, ২৪ জুলাই ২০২৪
ট্রাম্পের ওপর হামলা: ব্যর্থতার দায় নিয়ে সিক্রেট সার্ভিস প্রধানের পদত্যাগ

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও আসন্ন নির্বাচনে বিরোধী রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় নিরাপত্তা ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে পদত্যাগ করেছেন গোয়েন্দা সংস্থা সিক্রেট সার্ভিসের পরিচালক কিম চিটল।

বুধবার (২৪ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কিম চিটল ২০২২ সালের আগস্ট থেকে সিক্রেট সার্ভিসের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। ট্রাম্পকে হত্যাচেষ্টার পর থেকে তার পদত্যাগের দাবি ক্রমেই জোরদার হচ্ছিল।

এছাড়া কঠোর নিরাপত্তা বলয় ভেদ করে একজন বন্দুকধারী কিভাবে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর কাছে পৌঁছে গেল, সে প্রশ্ন সামনে একাধিক তদন্ত চলছে।

এমন পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) পদত্যাগের ঘোষণা দেন কিম চিটল। সিক্রেট সার্ভিস কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশে এক ই-মেইল বার্তায় তিনি বলেছেন, ‘নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ত্রুটির জন্য সব দায়ভার আমি নিজের কাঁধে নিচ্ছি। সাম্প্রতিক ঘটনাবলির আলোকে দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে আমি আপনাদের পরিচালক হিসেবে পদত্যাগের কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এক বিবৃতিতে বলেছেন, কিম চিটলের কয়েক দশকের জনসেবার জন্য তিনি কৃতজ্ঞ। 

বাইডেন বলেন, ‘গত ১৩ জুলাই যা ঘটেছিল তার গভীরে যাওয়ার জন্য স্বাধীন তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। আমি প্রকৃত ঘটনা জানতে উন্মুখ। আমরা সবাই জানি সেদিন যা হয়েছিল তা আর কখনোই ঘটতে পারে না।’

বাইডেন জানিয়েছেন যে, তিনি শিগগির একজন নতুন পরিচালক নিয়োগ করবেন। আপাতত, হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি আলেজান্দ্রো মায়োরকাস রোনাল্ড রোকে সিক্রেট সার্ভিসের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক হিসেবে নিযুক্ত করেছেন।

এর আগে স্থানীয় সময় সোমবার (২২ জুলাই) সকালে মার্কিন কংগ্রেসে সাক্ষ্য দেন সিক্রেট সার্ভিসের পরিচালক কিম চিটল। এ সময় ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে বন্দুকধারীর হামলার বিষয়ে আগে থেকেই ব্যবস্থা নিতে না পারায় নিজের ওপর সব দায় নেন তিনি। ট্রাম্পের ওপর হামলার ঘটনায় ৬ ঘণ্টা ধরে সিক্রেট সার্ভিস প্রধানের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। গুলির ঘটনাটিকে তিনি ‘এক দশকের মধ্যে সিক্রেট সার্ভিসের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অপারেশনাল ব্যর্থতা’ বলে স্বীকার করেন।

গত ১৩ জুলাই পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের বাটলার এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণায় এক বন্দুকধারীর গুলিতে আহত হন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে গোয়েন্দা সংস্থা সিক্রেট সার্ভিসের কর্মকর্তাদের তৎপরতায় প্রাণে বাঁচেন সাবেক এ প্রেসিডেন্ট। 

রয়টার্সের এক ভিডিওতে দেখা যায়, বন্দুকধারীর হামলার পরপরই সিক্রেট সার্ভিস সদস্যরা ট্রাম্পকে ঘিরে ধরেন। এর একটু পরই তাকে উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করতে দেখা যায়। তখন তার ডান কান থেকে রক্ত ঝরছিল; মুখমণ্ডলেও ছিল রক্ত।

ওই হামলায় ট্র্রাম্প প্রাণে বেঁচে গেলেও দর্শক সারিতে থাকা একজন নিহত ও আরও দুজন গুরুতর আহত হন। সিক্রেট সার্ভিসের সদস্যদের পাল্টা গুলিতে নিহত হন সন্দেহভাজন হামলাকারীও।

মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) ট্রাম্প তার ‘ট্রুথ’ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, ‘বাইডেন/হ্যারিস প্রশাসন আমাকে সঠিকভাবে সুরক্ষা দেয়নি এবং আমি গণতন্ত্রের জন্য বুলেট নিতে বাধ্য হয়েছিলাম।’

মঙ্গলবার ক্যাপিটল হিলে একটি পৃথক শুনানিতে পেনসিলভানিয়া রাজ্যের পুলিশ কমিশনার ক্রিস্টোফার প্যারিস ট্রাম্পের জনসভায় বেশ কিছু নিরাপত্তা ঘাটতির তথ্য তুলে ধরে ‘গুরুতর নিরাপত্তা ব্যর্থতা’ স্বীকার করে বলেন, ‘এ ঘটনায় সিক্রেট সার্ভিস শেষ পর্যন্ত দায়ী।’

/ফিরোজ/


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়