ঢাকা     রোববার   ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২৯ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

যে কারণে শেখ হাসিনার যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা বাতিল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০১:১৪, ৭ আগস্ট ২০২৪   আপডেট: ০১:৪৪, ৭ আগস্ট ২০২৪
যে কারণে শেখ হাসিনার যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা বাতিল

কোটাবিরোধী আন্দোলন ঘিরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়তে বাধ্য হওয়া শেখ হাসিনার ভিসা বাতিল করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে বলে জানিয়েছেন বৃটিশ সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যান। 

মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘মার্কিন সরকার বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিসা প্রত্যাহার করেছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ঘনিষ্ঠ সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।’

বার্গম্যান আরও লিখেছেন, ‘শেখ হাসিনা সোমবার বিকেলে বাংলাদেশ ছেড়েছেন এবং বর্তমানে ভারতে তার পরবর্তী পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। শেখ  হাসিনার যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার কোনো পরিকল্পনা ছিল কি না তা স্পষ্ট নয়। হাসিনা যুক্তরাজ্যে আশ্রয় চাওয়ার কথা বিবেচনা করছেন, সেখানে তার বোন (শেখ রেহানা) এবং ভাগ্নি (এমপি টিউলিপ সিদ্দিক) থাকেন। হাসিনা যে পদ্ধতিতে বৃটেনের কাছে আশ্রয় চেয়েছেন, অভিবাসন আইন অনুযায়ী তা সম্ভব নয়। ওই পদ্ধতিতে কাউকে আশ্রয় দিতে পারে না বৃটেন। যাই হোক, যুক্তরাজ্যের নিয়ম অনুযায়ী যাদের আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা প্রয়োজন তারা দেশ ছাড়ার পর প্রথম যে নিকটবর্তী নিরাপদ দেশে পা রাখছেন, সেখানেই আশ্রয় চাওয়ার কথা। সেটাই তার নিরাপত্তা পাওয়ার দ্রুততম রাস্তা। এক্ষেত্রে ভারতের নাম উঠে আসছে। তবে হাসিনার কাছে একটি ভিসা থাকতে পারে যা তাকে যুক্তরাজ্যে ভ্রমণের অনুমতি দেবে।’ 

এদিকে শেখ হাসিনার মার্কিন ভিসা কি কারণে বাতিল হলো, তা উঠে এসেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুর একটি প্রতিবেদনে। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও তার স্ত্রী, যিনি একজন মার্কিন আইনজীবী যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া রাজ্যে বসবাস করেন। সজীব ওয়াজেদ জয় বাংলাদেশ সরকারের ডিজিটাল উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করার সময় গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ও নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলার ঘটনায় সমালোচিত। এদিকে শেখ হাসিনা সোমবার (৫ আগস্ট) দেশ ছেড়ে পালানোর পর ড. মুহাম্মদ ইউনূস অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে মনোনীত হয়েছেন। 

বাংলাদেশের প্র্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন দীর্ঘদিন ধরে চলছিল। বাইডেন প্রশাসন বাংলাদেশে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সমর্থন করার জন্য ২০২৩ সালের মে মাসে বিশেষ ভিসা নীতি জারি করেছিল। যার লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করা। কিন্তু ২০২৪ সালে ৭ জানুয়ারি শেখ হাসিনা সরকারের একতরফা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন আরও বেড়ে যায়। চলতি বছরের মে মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘পশ্চিমা সরকার’ বলপ্রয়োগ করে বাংলাদেশে একটি সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের চেষ্টা করার জন্য বলে একটি গোপন মন্তব্যে যুক্তরাষ্ট্রকে অভিযুক্ত করেন। 

যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, হাসিনা বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার পরে মার্কিন ভিসার জন্য আবেদন করেছেন কিনা তা তারা জানেন না। তবে মার্কিন কর্মকর্তারা এটা নিশ্চিত করেছেন যে, শেখ হাসিনার সরকারি পাসপোর্টে তার বর্তমান মার্কিন ভিসা ‘আর বৈধ নয়’। কারণ তিনি প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন।

/ফিরোজ/

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়