হামাসের নতুন নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ার
গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস তাদের নতুন নেতা হিসেবে ইয়াহিয়া সিনওয়ারের নাম ঘোষণা করেছে। গাজার এই শীর্ষ হামাস কর্মকর্তা এখন থেকে দলটির রাজনৈতিক ব্যুরোর প্রধান হিসেবে কাজ করবেন। গত ৩১ জুলাই তেহরানে ইসমাইল হানিয়া নিহত হলে পদটি শূন্য হয়। খবর আল জাজিরার।
হামাস মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘ইসলামিক প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস আন্দোলনের রাজনৈতিক ব্যুরোর প্রধান হিসেবে কমান্ডার ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে নির্বাচনের কথা ঘোষণা করছে। তিনি শহিদ কমান্ডার ইসমাইল হানিয়ার স্থলাভিষিক্ত হবেন।’
ইয়াহিয়া সিনওয়ারের বয়স ৬১ বছর। গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডের ভেতরে ঢুকে হামাস যোদ্ধাদের নজিরবিহীন হামলার পেছনে তাকে প্রধান পরিকল্পনাকারী হিসেবে দেখে থাকে ইসরায়েল। এই হামলায় ১২০০ ইসরায়েলি নিহত এবং দুই শতাধিক ইসরায়েলিকে বন্দি করে গাজায় নিয়ে আসে হামাস।
হামাসের এই হামলার পরই প্রতিরোধ যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের নামে গাজায় গণহত্যা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। তাদের হামলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৪০ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু।
হামাসের রাজনৈতিক প্রধানের পদটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যুদ্ধের গুরু দায়িত্ব সামলানোর পাশাপাশি তাকে আন্তর্জাতিক দূতিয়ালিও করতে হয়। আগে ইসমাইল হানিয়া এ দায়িত্ব পালন করছিলেন। যুদ্ধবিরতি নিয়ে বহুপক্ষীয় আলোচনায় হানিয়া যেভাবে প্রধান হিসেবে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন এখন সেটি করতে হবে সিনওয়ারকে। একই সঙ্গে আঞ্চলিক রাজনীতির গতিবিধি অনুযায়ী প্রতিবেশী ও ইসলামী বিশ্বের সঙ্গে সুসম্পর্ক স্থাপন ও তা বজায় রাখারও দায়িত্ব এখন থেকে সিনওয়ারকে পালন করতে হবে।
হামাস নেতাদের হত্যা করার যে হুংকার দিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল, তাতে সিনওয়ারকে একইসঙ্গে নিজের নিরাপত্তা ও যুদ্ধের নেতৃত্ব দুই-ই সামলাতে হবে।
গত ৩১ জুলাই ইরানের তেহরানে হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়ার বাসভবনে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হলে তিনি নিহত হন। এই হামলার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করে কঠোর জবাব দেয়ার অঙ্গীকার করেছে ইরান, হিজবুল্লাহ ও হামাস। যদিও এই হামলার দায় স্বীকার কিংবা অস্বীকার করেনি তেল আবিব।
ইসমাইল হানিয়াকে হত্যার প্রতিশোধ নিতে ইরান যদি সত্যিই হামলা চালিয়ে বসে তাহলে মধ্যপ্রাচ্যে বড় যুদ্ধের শঙ্কা রয়েছে। এ অবস্থায় ইরানকে নিবৃত করতে চেষ্টা করছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। তবে ইরান বলেছে, ইসরায়েলকে তার অপরাধের শাস্তি ভোগ করতেই হবে। মঙ্গলবারই ইসরায়েলে একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান-সমর্থিত লেবাননভিত্তিক হিজবুল্লাহ গোষ্ঠী।
হিজবুল্লাহ হামাসের নতুন রাজনৈতিক প্রধান হিসেবে ইয়াহিয়া সিনওয়ারের নির্বাচনকে স্বাগত জানিয়েছে। তারা একে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি একটি শক্তিশালী বার্তা হিসেবে অভিহিত করেছে। এতে বোঝা যাচ্ছে যে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ব্যাপারে হামাস ঐক্যবদ্ধ।
/ফিরোজ/