ঢাকা     শনিবার   ১১ জানুয়ারি ২০২৫ ||  পৌষ ২৭ ১৪৩১

বুদ্ধদেবের মৃত্যুতে পশ্চিমবঙ্গে সরকারি ছুটি ঘোষণা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৪৮, ৮ আগস্ট ২০২৪   আপডেট: ১৩:৫২, ৮ আগস্ট ২০২৪
বুদ্ধদেবের মৃত্যুতে পশ্চিমবঙ্গে সরকারি ছুটি ঘোষণা

পশ্চিমবঙ্গের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য আজ সকালে মারা গেছেন। তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে পশ্চিমবঙ্গে আজ পূর্ণদিবস সরকারি ছুটি ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তিনি জানান, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে সম্পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সম্মান জানাবে রাজ্য সরকার।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৮০ বছর বয়সী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে নিজ বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। 

বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ পোস্ট করে শোক প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তিনি বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের আকস্মিক মৃত্যুতে আমি মর্মাহত। বিগত কয়েক দশক ধরেই আমি তাকে চিনতাম এবং গত কয়েক বছরে তিনি যখন অসুস্থ ছিলেন, তখন আমি বেশ কয়েকবার তাকে বাড়িতে দেখতে গিয়েছি।’

মমতা ব্যানার্জি আরও বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমি খুব দুঃখিত বোধ করছি। এই শোকের সময় মীরাদি (বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের স্ত্রী মীরা ভট্টাচার্য) এবং সুচেতনের (সন্তান সুচেতন) প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা জানাই। আমি সিপিআই(এম) দলের সব সদস্য-সদস্যা, সমর্থক এবং তার সব অনুগামীদের সমবেদনা জানাচ্ছি।’

দীর্ঘ পাঁচ দশকের রাজনৈতিক জীবন ছিল বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের। প্রথমে কাশীপুর-বেলগাছিয়া কেন্দ্রের বিধায়ক ছিলেন তিনি। এরপর ১৯৮৭ সালে যাদবপুর কেন্দ্র থেকে ভোটে দাঁড়ান। ২০১১ সাল পর্যন্ত টানা এই কেন্দ্রের বিধায়ক ছিলেন।

এরপর ১৯৮৭ সালে যাদবপুর কেন্দ্র থেকে ভোটে দাঁড়ান। ২০১১ সাল পর্যন্ত টানা এই কেন্দ্রের বিধায়ক ছিলেন তিনি।

১৯৪৪ সালের ১ মার্চ কলকাতায় বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের জন্ম। কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য তার কাকা। আজীবন বামপন্থায় বিশ্বাসী এই মানুষটির রুচিবোধ নিয়ে এখনও চর্চা হয়। রাজনীতির পাশাপাশি সাহিত্যচর্চাতেও সমান আগ্রহ ছিল তার। শৈলেন্দ্র সরকার বিদ্যালয় থেকে স্কুলজীবন শেষ করে প্রেসিডেন্সি কলেজে (অধুনা প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়) বাংলা সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করেন। এরপর সরকারি স্কুলে শিক্ষকতা করতেন।

১৯৬৬ সালে সিপিএমের প্রাথমিক সদস্যপদ নেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। ১৯৭২ সালে সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য হিসাবে নির্বাচিত হন। ১৯৭৭ সালে বিধানসভা ভোটে প্রথমবার লড়াই। ২০১১-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে পর্যন্ত সে জয়যাত্রা অব্যাহত থেকেছে। রাজ্যের বিভিন্ন দফতরের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। তথ্য সংস্কৃতি দফতর থেকে পর্যটন, নগরোন্নয়ন-কখনও পূর্ণ মন্ত্রী, কখনও আবার সাময়িকভাবে দফতরের দায়িত্ব পালন করেছেন।

১৯৯৬ সালের পর স্বরাষ্ট্র দফতরের মন্ত্রী ছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। ১৯৯৯ সালে ডেপুটি মুখ্যমন্ত্রী হন তিনি। জ্যোতি বসু অবসর নেওয়ার পর ২০০০ সালে মুখ্যমন্ত্রী পদে বসেন তিনি।

বুদ্ধবাবু ভট্টাচার্য মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময় দীর্ঘদিন বিরোধী নেত্রী ছিলেন মমতা ব্যানার্জি। সেই সময় একাধিকবার দুজনের সাক্ষাৎ হয়। এমনকি, পশ্চিমবঙ্গে ৩৪ বছরের বাম শাসনের পতন ঘটিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা ব্যানার্জি যখন মুখ্যমন্ত্রীর পদে বসেন, সেই শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।

/ফিরোজ/


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়