আরজি কর কাণ্ড: ‘রাত্তিরের সাথী’ নিয়মবিধি চালু

মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসক, নার্স, নারী স্বাস্থ্যকর্মীদের পাশাপাশি রাজ্যের বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর্মরত নারীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্য ‘রাত্তিরের সাথী’ নিয়মবিধি চালু করা হয়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ সরকার। আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং হত্যার ঘটনায় যখন রাজ্য সরকার যখন উত্তাল হয়ে উঠেছে, তখন নবান্নে সংবাদ সম্মেলনে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি বৈঠকে সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব রাজ্যের সব জায়গায় সেই নিয়মবিধি চালু করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্য উপদেষ্টা।
রাজ্যের পক্ষে দেওয়া নির্দেশিকায় যা রয়েছে-
১) কর্মরত নারীদের জন্য আলাদা রেস্টরুম থাকবে। সেখানে টয়লেটের বন্দোবস্ত করতে হবে।
২) রাতে মোতায়েন করতে হবে ‘রাত্তিরের সাথী’ বা নারী স্বেচ্ছাসেবকদের। এটি প্রযুক্তিচালিত আচরণবিধি বলে জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা।
২) হাসপাতালে যে নারী নাইট শিফট করবেন, তাদের জন্য বাড়তি নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করা হয়েছে।
৩) নারীদের জন্য ‘সেফ জোন’ তৈরি করতে হবে। সেই ‘সেফ জোন’-কে পুরোপুরি সিসিটিভি ক্যামেরায় মুড়ে ফেলতে হবে।
৪) একটি বিশেষ মোবাইল ফোন অ্যাপ তৈরি করা হবে। যাতে অ্যালার্ম ডিভাইস থাকবে। প্রত্যেক কর্মরত নারীকে সেটা ডাউনলোড করতে হবে। যা স্থানীয় থানা বা পুলিশ কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে।
৫) জরুরি পরিস্থিতিতে হেল্পলাইন নম্বর ১০০ বা ১১২ ব্যবহার করতে হবে।
৬) সব মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে, সুপারস্পেশালিটি হাসপাতাল, জেলা হাসপাতালে ‘সিকিউরিটি চেক’ হবে। ব্রেথ অ্যানালাইজার টেস্ট করা হবে বলে জানিয়েছে রাজ্য সরকার। অর্থাৎ কেউ মদ্যপান করেছেন কিনা, তা পরীক্ষা করে দেখা হবে।
৭) নারীদের যৌন হেনস্থা রুখতে শাখা কমিটি তৈরি করতে হবে প্রতিটি সংস্থাকে (যদি এখনও না করা হয়)।
৮) নারীদের সুরক্ষা নিয়ে সব সরকারি প্রতিষ্ঠানে বিশেষ কর্মসূচি নেওয়া হবে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকেও সেই আর্জি জানানো হচ্ছে। প্রতিটি জেলায় সেই কর্মসূচি চলবে।
৯) ‘জোড়া-জোড়ায়’ কাজ করতে হবে। রাজ্যের পক্ষে জানানো হয়েছে, রাতে নারীদের কাজের সূচি এমনভাবে নির্ধারণ করতে হবে, যাতে একটা টিম হিসেবে তারা থাকেন। একা কোনও মহিলাকে নাইট ডিউটিতে দেওয়া যাবে না। আর একে অপর কোথায় যাচ্ছেন, সেটাও জানতে হবে।
১০) বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকেও ‘রাত্তিরের সাথী’ নিয়মবিধি চালু করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
ঢাকা/শাহেদ