ইসরায়েলে অস্ত্র বিক্রির প্রতিবাদে ব্রিটিশ কর্মকর্তার পদত্যাগ
ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রির প্রতিবাদ জানিয়ে পদত্যাগ করেছেন যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তা মার্ক স্মিথ। সন্ত্রাস দমনে কাজ করা স্মিথ বলেছেন, যুক্তরাজ্য সরকার ‘যুদ্ধাপরাধে জড়িত থাকতে পারে’।
সোমবার (১৯ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্ক স্মিথ গত শুক্রবার এক ই-মেইলে সহকর্মীদের কাছে লিখেছেন, অফিসিয়াল হুইসেল ব্লোয়িং মেকানিজমসহ পররাষ্ট্র দপ্তরের ‘প্রতিটি স্তরে’ উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি। তবে তিনি (তার অভিযোগের) মৌলিক স্বীকৃতি ছাড়া আর কিছুই পাননি।
মার্ক স্মিথ ডাবলিনের ব্রিটিশ দূতাবাসে কর্মরত ছিলেন। যুক্তরাজ্যের ফরেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস তার পদত্যাগের বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছে। দপ্তরটি বলেছে, ব্রিটিশ সরকার আন্তর্জাতিক আইন সমুন্নত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
মার্ক স্মিথ তার পদত্যাগের ই-মেইলটি সরকারি কর্মকর্তা, দূতাবাস কর্মী এবং পররাষ্ট্র দপ্তরের মন্ত্রীদের বিশেষ উপদেষ্টাসহ অনেকের কাছে পাঠিয়েছেন।
পদত্যাগের ই-মেইলে মার্ক স্মিথ উল্লেখ করেছেন, ‘তিনি পূর্বে মধ্যপ্রাচ্যে ব্রিটিশ সরকারের অস্ত্র রপ্তানি লাইসেন্সিং মূল্যায়নে কাজ করেছেন। প্রতিদিনই তিনি ও তার সহকর্মীরা গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধাপরাধ এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘনের ‘স্পষ্ট এবং প্রশ্নাতীত উদাহরণ’ প্রত্যক্ষ করেছেন।’
তিনি লিখেছেন, ‘ইসরায়েলি সরকার ও সেনাবাহিনীর সিনিয়র সদস্যরা প্রকাশ্য গণহত্যার অভিপ্রায় প্রকাশ করেছে, ইসরায়েলি সৈন্যরা ইচ্ছাকৃতভাবে বেসামরিক সম্পত্তি পোড়ানো, ধ্বংস এবং লুট করার ভিডিও তুলেছে। গাজায় সব রাস্তা এবং বিশ্ববিদ্যালয় গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, মানবিক সহায়তা অবরুদ্ধ করা হচ্ছে এবং বেসামরিক নাগরিকদের পালিয়ে যাওয়ার জন্য কোনো নিরাপদ জায়গা নেই। রেড ক্রিসেন্টের অ্যাম্বুলেন্সে হামলা হয়েছে, স্কুল-হাসপাতালকে নিয়মিত টার্গেট করা হচ্ছে। এগুলো যুদ্ধাপরাধ।’
তার মতে, ‘এমন পরিস্থিতিতে ইসরায়েলের কাছে যুক্তরাজ্যের অস্ত্র বিক্রি অব্যাহত রাখার কোনো যুক্তি নেই।’
উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি হামলায় গাজায় এখন পর্যন্ত ৪০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন ৯২ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি।
এই পরিস্থিতিতে মানবাধিকার গোষ্ঠী এবং অন্যান্য সমালোচকরা ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহ করার জন্য এবং ইসরায়েলের বর্বর আগ্রাসনের পক্ষাবলম্বনের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমা দেশগুলোকে অভিযুক্ত করছেন।
/ফিরোজ/