ঢাকা     সোমবার   ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ১ ১৪৩১

তুর্কি-মার্কিন তরুণী হত্যার পূর্ণ তদন্তের আহ্বান জাতিসংঘের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৫৩, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪   আপডেট: ১৩:৫৪, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
তুর্কি-মার্কিন তরুণী হত্যার পূর্ণ তদন্তের আহ্বান জাতিসংঘের

অধিকৃত পশ্চিম তীরে শুক্রবার বিক্ষোভ চলাকালে এক তুর্কি-মার্কিন তরুণী হত্যার বিষয়ে ‘পূর্ণ তদন্তের’ আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। 

স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২৬ বছর বয়সী তুর্কি-মার্কিন তরুণী আয়েশেনুর এগজি এয়গি গতকাল শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) নাবলুসের কাছে বেইতা শহরে ইহুদি বসতি সম্প্রসারণের বিরুদ্ধে সাপ্তাহিক প্রতিবাদে অংশ নেওয়ার সময় ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে নিহত হন। 

আজ শনিবার বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, এ ঘটনার প্রতিক্রিয়া জানিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টেফান দুজারিক বলেছেন, ‘ঘটনার পূর্ণ তদন্ত এবং দোষীদের জবাবদিহির আওতায় আনা প্রয়োজন।’ তিনি আরও বলেন, ‘বেসামরিক নাগরিকদের সবসময় সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।’

ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা এ অঞ্চলে গুলি চালানোর ফলে এক বিদেশি নাগরিকের নিহত হওয়ার ঘটনার তদন্ত করছে।

যুক্তরাষ্ট্রও ঘটনার তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে। হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র শন স্যাভেট বলেন, ‘ইসরায়েলি সেনার গুলিতে এক মার্কিন নাগরিকের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় আমরা গভীরভাবে মর্মাহত।’

তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্র এ বিষয়ে ইসরায়েলি সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে এবং ঘটনার তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে।

ঘটনার কিছুক্ষণ পরের এক ভিডিওতে দেখা গেছে, চিকিৎসাকর্মীরা এয়গিকে তাড়াহুড়ো করে অ্যাম্বুলেন্সে নিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিবাদে উপস্থিত এক মানবাধিকার কর্মী জোনাথন পোলাক জানান, তিনি ছাদের ওপর থেকে সেনাদের গুলি চালাতে দেখেছেন।

তিনি আরও বলেন, এয়গিকে একটি জলপাই গাছের নিচে মাটিতে পড়ে থাকতে দেখেন। তার মাথা থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল।

পরে এয়গিকে নাবলুসের রাফিদিয়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালের প্রধান ড. ফুয়াদ নাফা নিশ্চিত করেন যে, এক মার্কিন নাগরিক মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এ মৃত্যুকে দুঃখজনক বলেছেন। তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেপ এরদোয়ান ইসরায়েলের এমন পদক্ষেপকে বর্বর বলে নিন্দা করেছেন।

তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এয়গি ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছেন। তিনি মধ্যপ্রাচ্যে যাওয়ার আগে ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটন থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে বলেছে, বেইতা এলাকায় ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযান চলাকালীন, সেনারা হিংসাত্মক কার্যকলাপের প্রধান প্ররোচকের দিকে গুলি দিয়ে জবাব দেয়, যারা বাহিনীকে লক্ষ্য করে পাথর ছুঁড়েছিল এবং তাদের জন্য হুমকি তৈরি করেছিল।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আইডিএফ ওই এলাকায় গুলি চালানোর ফলে একজন বিদেশি নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রতিবেদনগুলো খতিয়ে দেখছে। ঘটনার বিশদ বিবরণ এবং কোন পরিস্থিতিতে তাকে আঘাত করা হয়েছে তা পর্যালোচনা করা হচ্ছে।’ 

এদিকে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী জোনাথন পোলাক বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ইসরায়েলি সেনাদের জন্য হুমকিমূলক কোনো পরিস্থিতি সেখানে তৈরি হয়নি। পাথর নিক্ষেপের কোনো ঘটনা ঘটেনি। 

ইসরায়েলি বাহিনী অধিকৃত পশ্চিম তীরের জেনিন শহর এবং শরণার্থী শিবিরে ৯ দিনের অভিযান শুক্রবার শেষ করেছে। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের এই অভিযানে কমপক্ষে ৩৬ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। 

গত ৫০ বছরে ইসরায়েল পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে বসতি স্থাপন করেছে, যেখানে এখন সাত লাখেরও সাত লাখেরও বেশি ইহুদি বাস করে। বসতি স্থাপনাগুলোকে আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে অবৈধ বলে ধরা হয়। যদিও ইসরায়েল তা প্রত্যাখ্যান করে।

/ফিরোজ/


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়