ঢাকা     রোববার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৪ ||  পৌষ ৭ ১৪৩১

‘সাবধান! অ-হিন্দু, রোহিঙ্গা মুসলিমরা এই গ্রামে ঢুকবেন না’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:০১, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪   আপডেট: ২২:০৯, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
‘সাবধান! অ-হিন্দু, রোহিঙ্গা মুসলিমরা এই গ্রামে ঢুকবেন না’

ভারতের উত্তরাখণ্ডের রুদ্রপ্রয়াগ জেলার বেশ কয়েকটি গ্রামের বাইরে ‘অ-হিন্দু’ এবং হকারদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে। রোববার হিন্দুস্তান টাইমস এ তথ্য জানিয়েছে।

উত্তরাখণ্ড পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল (ডিজিপি) অভিনব কুমার জানিয়েছেন, তিনি স্থানীয় পুলিশ ও গোয়েন্দা ইউনিটকে একাধিক গ্রামে এই ধরনের বোর্ড বসানোর রিপোর্ট খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন। রুদ্রপ্রয়াগের সার্কেল অফিসার প্রবোধ কুমার ঘিলদিয়াল নিশ্চিত করেছেন যে তারা বেশ কয়েকটি সাইনবোর্ড সরিয়ে ফেলেছে এবং যারা সেগুলো লাগিয়েছে তাদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছে।

তিনি বলেন, ‘কিছু গ্রামে এই ধরনের বোর্ড তৈরি হয়েছে। আমরা সেগুলো সরিয়ে দিচ্ছি। ইতিমধ্যে কয়েকটি গ্রাম থেকে এ ধরনের বোর্ড সরিয়ে ফেলা হয়েছে। যারা এসব বোর্ড বসিয়েছে তাদের পরিচয়ও জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।’

আরো পড়ুন:

ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে তা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন গ্রাম প্রধানদের সঙ্গে বৈঠকও করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

নিয়ালসু গ্রামের বাইরে লাগানো সাইনবোর্ডে লেখা রয়েছে, অহিন্দু/রোহিঙ্গা মুসলিম এবং হকারদের জন্য গ্রামে ব্যবসা বা ঘোরাফেরা নিষিদ্ধ। গ্রামের কোথাও প্রবেশ করলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই নির্দেশটি গ্রামসভা থেকে এসেছে বলেও জানানো হয়েছে সাইনবোর্ডে।

ন্যালসুর পঞ্চায়েত প্রধান প্রমোদ সিং জানিয়েছেন, শেরসি, গৌরীকুণ্ড, ত্রিযুগীনারায়ণ, সোনপ্রয়াগ, বারাসু, জামু, আড়িয়া, রবিগ্রাম এবং মাইখান্ডাসহ এই অঞ্চলের প্রায় সব গ্রামে একই বোর্ড তৈরি করা হয়েছে। 

তিনি বলেন, ‘পুলিশি যাচাই ছাড়া হকাররা যাতে গ্রামে ঢুকতে না পারে, তার জন্য বোর্ড বসানো হয়েছে। আমাদের গ্রামের বেশিরভাগ পুরুষ যাত্রার উপর নির্ভরশীল এবং তাই তারা যাত্রার সময় গৌরীকুন্ড ও সোনপ্রয়াগে থাকেন। মহিলারা একাই থাকেন ঘরে। বৈধ পরিচয়পত্র ও পুলিশ ভেরিফিকেশন ছাড়াই অনেক ফেরিওয়ালা গ্রামে আসেন। যাদের ভেরিফিকেশন আছে তারা নিয়মিত গ্রামে আসছেন, তাদের থামানো যাচ্ছে না। ফেরিওয়ালারা অপরাধ করে পালিয়ে গেলে তাদের খুঁজে পাওয়া যায় না।’

মাইখণ্ডা গ্রামের প্রধান চাঁদনী দেবীও নিশ্চিত করেছেন যে তার গ্রামের বাইরের গ্রামবাসীরা একই ধরনের বোর্ড স্থাপন করেছে। তাঁর দাবি, 'আমরা চাই না বহিরাগতরা আমাদের গ্রামে আসুক, কারণ আমাদের শিশু ও মহিলাদের জন্য আতঙ্কের কারণ রয়েছে।

গৌরীকুণ্ড গ্রামের প্রধান সোনি দেবী বলেন, ‘গ্রামবাসীরা ধরেছিলেন যে গ্রামে অহিন্দুদের প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। শুধু আমাদের গ্রামসভাতেই নয়, আরো বেশ কয়েকটি গ্রামেও এই ধরনের বোর্ড তৈরি হয়েছে।’

গ্রামের বাইরে কখন সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা না গেলেও, মুসলিম সেবা সংগঠন এবং এআইএমআইএম-এর দুটি মুসলিম প্রতিনিধি ৫ সেপ্টেম্বর ডিজিপি কুমারের সাথে দেখা করে এবং হিমালয়ের রাজ্যে ক্রমবর্ধমান সংখ্যালঘু বিরোধী ঘটনা নিয়ে তাদের উদ্বেগের কথা জানানোর পরে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।

ঢাকা/শাহেদ

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়