ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৭ অক্টোবর ২০২৪ ||  কার্তিক ১ ১৪৩১

পানির সঙ্কট বিশ্বের অর্ধেক খাদ্য উৎপাদনকে ঝুঁকিতে ফেলেছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:৩৩, ১৭ অক্টোবর ২০২৪  
পানির সঙ্কট বিশ্বের অর্ধেক খাদ্য উৎপাদনকে ঝুঁকিতে ফেলেছে

পানির সঙ্কটের কারণে আগামী ২৫ বছরের মধ্যে বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি খাদ্য উৎপাদন ব্যর্থ হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা একটি যুগান্তকারী পর্যালোচনায় এই সতর্কবার্তা দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার প্রকাশিত গ্লোবাল কমিশন অন দ্য ইকোনমিকস অফ ওয়াটারের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের অর্ধেক জনসংখ্যা ইতিমধ্যেই পানির অভাবের মুখোমুখি। জলবায়ু পরিস্থিতি আরো খারাপ হওয়ার সাথে সাথে পানির অভাব বাড়তে শুরু করেছে। বিশুদ্ধ পানির চাহিদা চলতি দশকের শেষ নাগাদ সরবরাহের মাত্রার চেয়ে ৪০ শতাংশেরও বেশি বাড়বে। কারণ বিশ্বের পানি ব্যবস্থাকে ‘অভূতপূর্ব চাপের’ মধ্যে রাখা হচ্ছে।

কমিশন তাদের বিশ্লেষণে দেখেছে, সরকার ও বিশেষজ্ঞরা মানুষের শালীন জীবনযাপনের জন্য প্রয়োজনীয় পানির পরিমাণকে ব্যাপকভাবে অবমূল্যায়ন করেছে। প্রত্যেক ব্যক্তির স্বাস্থ্য ও পরিচ্ছন্নতার জন্য প্রতিদিন ৫০ থেকে ১০০ লিটার পানির প্রয়োজন। তবে প্রকৃতপক্ষে পর্যাপ্ত পুষ্টি এবং একটি মর্যাদাপূর্ণ জীবনের জন্য মানুষের প্রতিদিন প্রায় চার হাজার লিটার পানির প্রয়োজন। বেশিরভাগ অঞ্চলের জন্য, সেই পরিমাণ স্থানীয়ভাবে অর্জন করা যায় না। তাই মানুষ তাদের চাহিদা মেটাতে খাদ্য, পোশাক ও ভোগ্যপণ্যের উপর নির্ভরশীল।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কয়েক দশক ধরে ধ্বংসাত্মকভাবে ভূমি ব্যবহার এবং পানির অব্যবস্থাপনা মানব সৃষ্ট জলবায়ু সঙ্কটের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছে। এটি বৈশ্বিক পানি চক্রের উপর ‘অভূতপূর্ব চাপ’ সৃষ্টি করেছে।

পানিচক্র হচ্ছে একটি জটিল ব্যবস্থা যার মাধ্যমে পানি পৃথিবীর চারপাশে ঘোরে। পানি হ্রদ, নদী ও গাছপালা থেকে বাস্পীভূত হয় এবং বায়ুমণ্ডলে উত্থিত হয়। জলীয় বাষ্প দীর্ঘ দূরত্ব ভ্রমণ করে শীতল ও ঘনীভূত হয় এবং অবশেষে বৃষ্টি বা তুষার হয়ে মাটিতে ফিরে আসে। মানবসৃষ্ট কারণে পানিচক্রে বিঘ্ন ঘটছে। এর ফলে বিশ্বের প্রায় ৩০০ কোটি মানুষ পানি সঙ্কটের সম্মুখীন। এর পরিণতিতে ফসল শুকিয়ে যাচ্ছে এবং ভূগর্ভস্থ পানি শুকিয়ে যাচ্ছে।

বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, জরুরি পদক্ষেপ না নিলে পরিণতি হবে আরো ভয়াবহ। পানি সঙ্কটের কারণে বিশ্বব্যাপী ৫০ শতাংশ খাদ্য উৎপাদন হুমকির সম্মুখীন এবং ২০৫০ সাল নাগাদ দেশগুলোর জিডিপি গড় ৮ শতাংশ কমিয়ে দেওয়ার ঝুঁকি তৈরি করছে। নিম্ন-আয়ের দেশগুলোতে এই হার ১৫ শতাংশের বেশি হতে পারে।

গ্লোবাল কমিশন অন দ্য ইকোনমিকস অফ ওয়াটারের সহ-সভাপতি জোহান রকস্ট্রোম বলেছেন, ‘মানব ইতিহাসে প্রথমবারের মতো আমরা বৈশ্বিক পানিচক্রকে ভারসাম্যের বাইরে ঠেলে দিচ্ছি। সব মিষ্টি পানির উৎস বৃষ্টির ওপর আর নির্ভর করা যায় না।’
 

ঢাকা/শাহেদ


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়