পান্নুন হত্যাচেষ্টা মামলায় ভারতের উপর চাপ বাড়াল যুক্তরাষ্ট্র
ভারতে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন শিখস ফর জাস্টিসের (এসএফজে) প্রধান গুরপতবন্ত সিং পান্নুন
যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে শিখ আন্দোলনের নেতা গুরপতবন্ত সিং পান্নুনকে হত্যাচেষ্টার মামলায় ভারতের উপর চাপ আরও বাড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
হিন্দুস্তান টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী ও ভারত সরকারের সমালোচক মার্কিন নাগরিক পান্নুনকে হত্যাচেষ্টার যে অভিযোগ উঠেছে, সেই ঘটনায় ভারত যে তদন্ত চালাচ্ছে, তা নিয়ে ওয়াশিংটন সার্বিকভাবে দিল্লির প্রশংসা করলেও কঠোর বার্তা দিয়েছে।
ওয়াশিংটন বলেছে, ‘যতক্ষণ না ওই তদন্ত প্রক্রিয়া থেকে অর্থপূর্ণ জবাবদিহিতা পাওয়া যাচ্ছে, ততক্ষণ যুক্তরাষ্ট্র পুরোপুরি সন্তুষ্ট হবে না।’
ভারত এ বিষয়ে নতুন করে কোনো মন্তব্য করেনি। দিল্লি শুরু থেকেই পান্নুনকে হত্যার পরিকল্পনায় ভূমিকার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
গত সপ্তাহে পান্নুনকে হত্যার ষড়যন্ত্র করার মামলার ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিস উইং’ (র)-এর সাবেক কর্মকর্তা বিকাশ যাদবের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে আমেরিকা। পান্নুনকে খুনের জন্য ‘কিলার’ ভাড়ার মতো তিনটি অভিযোগ তোলা হয়েছে তার বিরুদ্ধে।
যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, চেক প্রজাতন্ত্র থেকে যে নিখিল গুপ্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাকে নিয়ে খলিস্তানি নেতা পান্নুনকে হত্যার পরিকল্পনা তৈরি করেছিলেন বিকাশ। পান্নুনকে খুন করার জন্য ‘কিলার’ ভাড়া করেছিলেন নিখিল। কিন্তু সেই ‘কিলার’ আসলে মার্কিন গোয়েন্দা বিভাগের ইনফর্মার ছিলেন। আর তার ফলে পুরো বিষয়টি ওয়াশিংটনের সামনে চলে আসে।
যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ভারত ইতিমধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটির সদস্যরা সম্প্রতি ওয়াশিংটনে মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
গতকাল মঙ্গলবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রিন্সিপাল ডেপুটি মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘গত সপ্তাহে ভারতের তদন্ত কমিটির সঙ্গে মূল্যবান আলোচনা হয়েছে। আমরা যে তদন্ত চালাচ্ছি, সেটা যাতে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়, সেজন্য আমাদের দুই সরকারের মধ্যে তথ্যের আদান-প্রদান করা হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, ভারতের কমিটি তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘গত সপ্তাহে আমাদের মধ্যে যে আলোচনা হয়েছে, সেটার ভিত্তিতে ভারত পদক্ষেপ করবে বলে আশা করছি আমরা। তদন্তের ফলাফল দেখতে পাব বলে আশা করছি। তদন্তের ফলাফলের বিরুদ্ধে জবাবদিহিতা দেখতে চাই আমরা। যতক্ষণ না ওই তদন্ত প্রক্রিয়া থেকে অর্থপূর্ণ জবাবদিহিতা পাওয়া যাচ্ছে, ততক্ষণ যুক্তরাষ্ট্র পুরোপুরি সন্তুষ্ট হবে না। আমি এটার থেকে বেশি কিছু বলব না। বাড়তি কোনো তথ্য দেব না। কারণ এই বিষয়টি নিয়ে সক্রিয় তদন্ত চলছে। দুই দেশের পক্ষ থেকে তদন্ত চালানো হচ্ছে।’
/ফিরোজ/