ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি হিজবুল্লাহ প্রধানের
হিজবুল্লাহ প্রধান হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার প্রথম ভাষণে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন শেখ নাঈম কাসেম। একইসঙ্গে চলমান যুদ্ধে যুদ্ধবিরতির দরজাও খোলা রয়েছে বলেছেন তিনি।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে টাইমস অব ইসরায়েল।
গত সোমবার (২৮ অক্টোবর) হিজবুল্লাহ প্রধান হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর বুধবার (৩০ অক্টোবর) নিজের প্রথম টেলিভিশন ভাষণে কাসেম বলেন, ‘শত্রুকে অবশ্যই জানতে হবে যে আমাদের গ্রাম এবং শহরগুলোতে বোমা হামলা চালিয়ে আমাদের পিছু হটানো যাবে না এবং প্রতিরোধ শক্তিশালী হবে’।
কাসেম আরও বলেন, ‘আমরা নেতানিয়াহুর ঘরে একটি ড্রোন পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছি। নেতানিয়াহু এবার বেঁচে গেছেন, কিন্তু সম্ভবত তার সময় এখনও আসেনি।’
হিজবুল্লাহ প্রধান বলেন, ‘সম্ভবত একজন ইসরায়েলি তাকে (নেতানিয়াহুকে) হত্যা করবে, সম্ভবত তার বক্তৃতার সময়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের কূটনৈতিক যোগাযোগ আমাদের নিশ্চিত করেছে যে নেতানিয়াহু খুবই ভীতসন্ত্রস্ত, কারণ আমরা তাকে লক্ষ্যবস্তু করেছি।’
গত ১৯ অক্টোবর ইসরায়েলের কেন্দ্রীয় শহর সিজারিয়ায় ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত বাসভবনে আঘাত হানে হিজবুল্লাহর ড্রোন। ড্রোনটি নেতানিয়াহুর বেডরুমের সুরক্ষিত জানালায় আঘাত করে, এতে জানালায় ফাটল দেখা দেয়। নেতানিয়াহু ও তার স্ত্রী সারা তখন বাড়িতে ছিলেন না।
টাইমস অব ইসরায়েলের খবর বলা হয়েছে, অজ্ঞাত স্থান থেকে দেওয়া পূর্ব-রেকর্ড করা ভাষণটি হিজবুল্লাহ নেতা হিসেবে কাসেমের প্রথম ভাষণ। ৩২ বছর ধরে হিজবুল্লাহকে নেতৃত্ব দিয়ে আসা হাসান নাসরাল্লাহ গত মাসের শেষের দিকে ইসরায়েলি হামলায় নিহত হোন। এর এক সপ্তাহ পরে নাসরাল্লাহর সম্ভাব্য উত্তরসূরি হাশেম সাফিউদ্দীনকেও ইসরায়েল হত্যা করার পর গত সোমবার শেখ নাঈম কাসেমকে গোষ্ঠীর প্রধান হিসেবে ঘোষণা করে হিজবুল্লাহ।
কাসেম তার প্রথম ভাষণে নেতানিয়াহুকে হত্যার হুমকি দিলেও বলেছেন যে, হিজবুল্লাহ গ্রহণযোগ্য শর্তে ইসরায়েলের সাথে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হবে। তবে তিনি জানান, একটি কার্যকর চুক্তি এখনও উপস্থাপন করা হয়নি।
এর আগে লেবাননের রাজনৈতিক ও সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহর নতুন প্রধান হিসেবে নাঈম কাসেমের নাম ঘোষণার পর প্রতিক্রিয়া জানায় ইসরায়েল। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট হুমকি দিয়ে বলেন, নাঈম কাসেমের মেয়াদ হবে ‘সাময়িক’। তিনি বেশি দিন টিকবেন না।
অন্যদিকে ইসরায়েল সরকারের দাপ্তরিক আরবি ভাষার অ্যাকাউন্টে দেওয়া পোস্টে বলা হয়, তিনি (কাসেম) যদি তার পূর্বসূরি হাসান নাসরাল্লাহ ও হাশেম সাফিউদ্দিনের পদাঙ্ক অনুসরণ করেন, তাহলে এই অবস্থানে (হিজবুল্লাহপ্রধান) তার মেয়াদ সংগঠনটির ইতিহাসে সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত হতে পারে।
একই পোস্টে সতর্ক করে আরও বলা হয়, লেবাননে হিজবুল্লাহর সামরিক সক্ষমতাকে ধ্বংস করা ছাড়া আর কোনো সমাধান নেই।
/ফিরোজ/