ঢাকা     সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ||  অগ্রহায়ণ ১১ ১৪৩১

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন যেভাবে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:৩২, ৫ নভেম্বর ২০২৪   আপডেট: ০৯:০৮, ৫ নভেম্বর ২০২৪
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন যেভাবে

ছবি: বিবিসি

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আজ ৫ নভেম্বর (মঙ্গলবার) প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দেবেন দেশটির নাগরিকেরা। কীভাবে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তা নিয়ে এই প্রতিবেদন।

সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট নয়, বরং মার্কিন প্রেসিডেন্ট কে হবেন, তা নির্ধারণ করে ‘ইলেকটোরাল কলেজ’। ইলেকটোরাল কলেজ নামের ব্যবস্থায় ৫৩৮ জন ইলেকটর নির্বাচিত হন। তারাই শেষমেশ নির্ধারণ করবেন, যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট কে হবেন।

ইলেকটোরাল কলেজে ৫০টি অঙ্গরাজ্যের নির্দিষ্টসংখ্যক প্রতিনিধি থাকেন। যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের উভয় কক্ষ মিলিয়ে রাজ্যটির যত প্রতিনিধি, সেটাই হলো তার ইলেকটরদের সংখ্যা।

আরো পড়ুন:

হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভসে (কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদ) একটি রাজ্যের প্রতিনিধি সংখ্যা নির্ভর করে রাজ্যটির জনসংখ্যার ওপর। অন্যদিকে সিনেটে প্রতি রাজ্যের দুটি করে আসন থাকে। সব মিলিয়ে ৫০টি রাজ্যের ৪৩৫ জন রিপ্রেজেন্টেটেটিভ এবং সেই সঙ্গে ১০০ জন সিনেটর। এছাড়া ডিস্ট্রিক্ট অব কলম্বিয়ার তিনজন ইলেকটর। সব মিলিয়ে ইলেকটোরাল কলেজ ভোট সংখ্যা ৫৩৮টি।

জনসংখ্যার দিক থেকে ক্যালিফোর্নিয়ায় সবচেয়ে বেশি ৫৪টি ইলেকটোরাল ভোট রয়েছে। অন্যদিকে ভারমন্টের তিনটি ইলেকটোরাল ভোট রয়েছে।

নির্বাচনে জিততে হলে কোনো প্রেসিডেন্ট প্রার্থীকে সংখ্যাগরিষ্ঠ বা অন্তত ২৭০টি ইলেকটোরাল ভোট পেতে হবে।

মেইন আর নেব্রাস্কা ছাড়া বাকি অঙ্গরাজ্যগুলোতে ‘উইনার টেকস অল’ ভিত্তিতে ইলেকটোরাল ভোট নির্ধারিত হয়। অর্থাৎ কোনো প্রেসিডেন্ট প্রার্থী যে রাজ্যে এগিয়ে থাকবেন, তিনি সেই রাজ্যের সব কজন ইলেকটরের সমর্থন পাবেন।

প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হতে সংবিধান অনুযায়ী তিনটি শর্ত পূরণ করতে হয়। প্রার্থীকে জন্মসূত্রে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হতে হয়, বয়স হতে হয় অন্তত ৩৫ বছর এবং ১৪ বছর যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করতে হয়। তবে মার্কিন সেনাবাহিনীর সদস্যদের জন্য শেষ শর্তটির ব্যতিক্রম রয়েছে।

প্রাপ্তবয়স্ক যেকোনো নাগরিক প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হতে পারেন। এমনকি অপরাধী সাব্যস্ত হওয়া ব্যক্তিরও প্রার্থী হতে বাধা নেই৷ রাজনৈতিক বন্দীরা যাতে প্রার্থী হওয়া থেকে বঞ্চিত না হন সেজন্য যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে আলাদা বিধান রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের ১৪তম সংশোধনীতে রাজনৈতিক পদে থাকা ব্যক্তি দেশের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে যুক্ত হলে বা শত্রুদের সহায়তা করলে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হতে পারবেন না।

প্রাইমারি ও ককাস কী?
নির্বাচনে লড়াইয়ের ময়দান উন্মুক্ত থাকলেও প্রাইমারি ও ককাসের মাধ্যমে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থীর সংখ্যা কমিয়ে আনা হয়। এই দুই পদ্ধতির মাধ্যমে দলগুলো তাদের প্রার্থী বাছাই করে। নির্বাচনী বছরের বসন্তের শুরুর দিকে অঙ্গরাজ্য পর্যায়ে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। স্বতন্ত্রভাবে কেউ প্রার্থী না হলে কোনো একটি রাজনৈতিক দলের অধীনে তাকে নিজ অঙ্গরাজ্যে নিবন্ধন করতে হয়।

প্রাইমারিতে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে দলের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ককাস প্রক্রিয়াটি আরো জটিল। এজন্য অঙ্গরাজ্যগুলোতে রাজনৈতিক দলের সদস্যরা একত্রিত হন। সেখানে তারা ভোটাভুটির মাধ্যমে নিজেদের প্রার্থী বাছাই করেন।

প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা হ্যারিস ও ডোনাল্ড ট্রাম্প

অঙ্গরাজ্য ও দলভেদে প্রাইমারি ও ককাসের ভিন্নতা থাকলেও মূল লক্ষ্য একই। প্রার্থীর সমর্থন নির্ধারণ ও সাধারণ নির্বাচনের জন্য একজন প্রার্থী বাছাই করা।

জাতীয় কনভেনশনের ভূমিকা
অঙ্গরাজ্য পর্যায়ে প্রাইমারি ও ককাস শেষ হলে রাজনৈতিক দলগুলো জাতীয় কনভেনশনের (সম্মেলন) মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ও তার রানিংমেট বা ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী বাছাই করে।

কনভেনশনে যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি রাজ্য থেকে আসা ডেলিগেটরা (প্রতিনিধি) প্রেসিডেন্ট প্রার্থী বাছাইয়ে ভোট দেন। একজন প্রার্থীকে মনোনয়ন পেতে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট পেতে হয়।

ডেলিগেটদের মধ্যেও দুটি ভাগ রয়েছে। ডেমোক্র্যাটদের ক্ষেত্রে বলা হয় প্লেজড বা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং আনপ্লেজড বা অপ্রতিশ্রুতিবদ্ধ। রিপাবলিকানদের ক্ষেত্রে বাউন্ড বা বাধ্যতামূলক এবং আনবাউন্ড বা বাধ্যতামূলক নন। প্রতিশ্রুতিবদ্ধ/বাধ্যতামূলক ডেলিগেটরা অঙ্গরাজ্য পর্যায়ে প্রাইমারিতে জিতে আসা প্রার্থীদেরই শুধু ভোট দিতে পারেন।

অন্যদিকে অপ্রতিশ্রুতিবদ্ধ/বাধ্যতামূলক নন এমন ডেলিগেটরা নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন। ডেমোক্র্যাট কনভেনশনে অপ্রতিশ্রুতিবদ্ধ ডেলিগেটরা দ্বিতীয় রাউন্ড থেকেই শুধু ভোট দিতে পারেন।

নির্বাচনে কী হয়
জাতীয় কনভেনশনের পরই নির্বাচনের উত্তাপ শুরু হয়। নির্বাচনের দিনে দেশজুড়ে কয়েক হাজার শহরে ভোটগ্রহণ চলে। নিবন্ধিত যেকোনো মার্কিন নাগরিক এই নির্বাচনে ভোট দিতে পারেন।

সূত্র : বাসস, সিএনএন 

/এসবি/


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়