পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা উপনির্বাচনে বিজেপির ভরাডুবি
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীরা বাজিমাত করেছেন
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা উপনির্বাচনে ৬টি আসনেই ভরাডুবি হয়েছে বিজেপির। অন্যদিকে, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীরা বাজিমাত করেছেন। ৬টি আসনেই জয়লাভ করেছে দলটির প্রার্থীরা।
শনিবার (২৩ নভেম্বর) ভোটের ফলাফল ঘোষণার পর এ চিত্র দেখা গেছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, আরজি কর কাণ্ডের পর মমতার বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলন হয়েছিল। তবে ভোটের ফলাফলে দেখা গেছে, এসবের কোনো প্রভাবই নির্বাচনে পড়েনি। কোনো সুবিধাই করতে পারেনি বিজেপি। এমনকি রাজ্যের একটিমাত্র আসন ছিল। সেই আসনটিও খোয়া গেছে বিজেপির।
এবারের বিধানসভা নির্বাচনের পরে বিজেপি মাদারিহাটের আসনটি ধরে রাখতে পারবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছিল। ফল ঘোষণার পর দেখা গেছে, ইতিহাস গড়ে প্রথমবারের মতো আলিপুরদুয়ারের এ বিধানসভা আসনে জয়লাভ করেছে তৃণমূল।
গত ১৩ নভেম্বর পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের ৬টি বিধানসভা আসনের উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। মাদারিহাটে তৃণমূল কংগ্রেস ২৮ হাজার ১৬৮ ভোটে জিতেছে। তাদের ভোট পাওয়ার হার ৫৪.০৫ শতাংশ।
কোচবিহারের সিতাই আসনে তৃণমূল ১ লাখ ৩০ হাজার ৬৩৬ ভোটে জিতেছে। এখানে তৃণমূলের প্রাপ্ত ভোট হলো ৭৬.০৮ শতাংশ। মেদিনীপুরে তৃণমূল জয় পেয়েছে ৩৩ হাজার ৯৩৬ ভোটের ব্যবধানে। তাদের প্রাপ্ত ভোট ৫৩.৪৪ শতাংশ।
হাড়োয়া আসনে তৃণমূল কংগ্রেস ১ লাখ ৩১ হাজার ৩৮৮ ভোটে জয় পেয়েছে। সবমিলিয়ে তৃণমূল ৭৬.৬৩ শতাংশ ভোট পেয়েছে।
এছাড়া তালড্যাংরায় তৃণমূল জয় পেয়েছে ৩৪ হাজার ৮২ ভোটে। শতাংশের হিসাবে তৃণমূল পেয়েছে ৫২.০৭ শতাংশ ভোট।
এর বাইরে নৈহাটিতে তৃণমূল জয় পেয়েছে ৪৯ হাজার ২৭৭ ভোটে। এই আসনে তৃণমূলের প্রাপ্ত ভোট হলো ৬২.৯৭ শতাংশ।
এদিকে একমাত্র হাড়োয়া আসনে বাম সমর্থিত আইএসএফ প্রার্থী পিয়ারুল ইসলাম দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন। এই একটি আসনেই জামানত রক্ষা করতে পেরেছে বাম জোট। বাকি পাঁচ আসনেই জামানত হারিয়েছেন বামপন্থি প্রার্থীরা। অন্যদিকে পৃথকভাবে লড়ে ছয়টি আসনেই জামানত হারিয়েছে কংগ্রেস।
উপনির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা হওয়ার পরপরই তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করা শুরু করেন। সবুজ আবির খেলার মাধ্যমে বাংলাদেশের পরিচিত ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিতে শোন যায় তাদের।
তৃণমূল কংগ্রেসপ্রধান মমতা ব্যানার্জি দলীয় প্রার্থীদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, মানুষই আমাদের ভরসা। আমরা সবাই সাধারণ মানুষ। এটাই আমাদের পরিচয়। আমরা জমিদার নই, মানুষের পাহারাদার। আপনাদের আর্শিবাদ আজীবন হৃদয় স্পর্শ করে থাকবে। জয় বাংলা।
এদিকে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা অর্থাৎ বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, চিন্তার কোনো কারণ নেই। ২০২৬ সালের নির্বাচনে আমরা সব আসন উদ্ধার করবো। উপনির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের ভোটের কারচুপির ফলাফল এটা।
বাম ও বিজেপির প্রথম সারির নেতাদের দাবি, নির্বাচনী রাজনীতিতে তৃণমূলের গণভিত্তি অনেক গভীরে ছড়ানো। সংগঠনের পাশাপাশি অর্থনৈতিক বাস্তুতন্ত্র তৈরি করে ফেলেছে মমতার দল।
ঢাকা/ফিরোজ