গিনিতে ফুটবল ম্যাচে সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে নিহত প্রায় ১০০
পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গিনির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর এন’জেরেকোতে একটি ফুটবল ম্যাচে সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে প্রায় ১০০ মানুষ নিহত হয়েছেন। গতকাল রোববার এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
বার্তা সংস্থা এএফপির বরাতে সোমবার (২ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ফ্রান্স টুয়েন্টিফোর।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক বলেন, “হাসপাতালে যতদূর চোখ যায় শুধু লাশের সারি। মর্গও ভরে গেছে।”
স্থানীয় হাসপাতালের ওই চিকিৎসক জানান, হাসপাতালে প্রায় ১০০ জনের মরদেহ রয়েছে।
সামাজিক যোগামাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, মাঠের বাইরে সংঘর্ষ চলছে। মাটিতে অনেক মরদেহ পড়ে রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সংঘর্ষের ঘটনার পর ক্ষুব্ধ বিক্ষোভকারীরা এন’জেরকোর থানায় ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।
একজন প্রত্যক্ষদর্শী এফএফপিকে বলেছেন, রেফারির বিতর্কিত সিদ্ধান্তের পর সংঘর্ষ শুরু হয়। দুই পক্ষের সমর্থকরা খেলার মাঠেও নেমে আসে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, গিনির জান্তা নেতা মামাদি দোমবুয়ার সম্মানে আয়োজিত একটি টুর্নামেন্টের অংশ ছিল এই ফুটবল ম্যাচ। মামাদি ২০২১ সালের একটি অভ্যুত্থানে গিনির ক্ষমতা দখল করেন।
পশ্চিম আফ্রিকার দেশটিতে এই ধরনের টুর্নামেন্টের আয়োজন সাধারণ ঘটনা হয়ে উঠেছে। কারণ মামাদি আগামী বছর প্রত্যাশিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থী এবং রাজনৈতিক জোট গঠনের দিকে নজর দিচ্ছেন।
২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে প্রেসিডেন্ট আলফা কন্ডেকে ক্ষমতাচ্যুত করে জান্তা নেতা মামাদি ক্ষমতা দখল করেন। এরপর তিনি তৎকালীন কর্নেলকে এই ধরনের অভ্যুত্থান থেকে রাষ্ট্রের প্রধানকে রক্ষা করার জন্য একটি অভিজাত বাহিনীর দায়িত্বে নিযুক্ত করেন।
আন্তর্জাতিক চাপের কারণে মামাদি ২০২৪ সালের শেষ নাগাদ বেসামরিক সরকারের কাছে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে তিনি স্পষ্ট করে দেন যে, তিনি তা করবেন না।
সামরিক নেতা মামাদি ‘বিস্ময়করভাবে’ চলতি বছরের জানুয়ারিতে নিজেকে লেফটেন্যান্ট জেনারেল পদে উন্নীত করেন এবং গত মাসে তিনি নিজেকে সেনা জেনারেলের পদে উন্নীত করেন।
মামাদির বিরুদ্ধে ভিন্নমতাবলম্বীদের দমন করার অভিযোগ রয়েছে। অনেক বিরোধী নেতাকে আটক করা হয়েছে, আদালতে আনা হয়েছে বা নির্বাসনে বাধ্য করা হয়েছে।
২০২১ সালে অভ্যুত্থানের পরপরই জান্তার জারি করা একটি ‘ক্রান্তিকালীন সনদ’-এ বলা হয়েছিল, জান্তার কোনো সদস্য জাতীয় বা স্থানীয় নির্বাচনে দাঁড়াতে পারবে না।
তবে মামাদির সমর্থকরা সম্প্রতি পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তার প্রার্থীতার প্রতি তাদের সমর্থন প্রকাশ করেছে।
চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে কর্তৃপক্ষ ইঙ্গিত দেয় যে, সাংবিধানিক শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধারের উদ্দেশ্যে নির্বাচন ২০২৫ সালে অনুষ্ঠিত হবে।
ঢাকা/ফিরোজ