সামুদ্রিক কচ্ছপ খেয়ে তিনজনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৩২
রান্না করা বিরল প্রজাতির একটি সামুদ্রিক কচ্ছপ খাওয়ার পর ফিলিপাইনে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া কমপক্ষে ৩২ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
স্থানীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফিলিপাইনের মাগুইন্দানাও ডেল নর্তে প্রদেশের উপকূলীয় গ্রামে গত সপ্তাহে খাবারটি খাওয়ার পর থেকে কয়েক ডজন তেদুরে আদিবাসী মানুষ ডায়রিয়া, বমি এবং পেটে খিঁচুনি হওয়ার মতো উপসর্গের কথা জানিয়েছিলেন।
ফিলিপাইনের পরিবেশ সুরক্ষা আইনের অধীনে সামুদ্রিক কচ্ছপ শিকার করা বা খাওয়া বেআইনি। তারপরও কিছু সম্প্রদায়ের মধ্যে সামুদ্রিক কচ্ছপকে ঐতিহ্যবাহী একটি খাবার হিসেবে খাওয়া হয়ে থাকে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, সামুদ্রিক কচ্ছপ যেগুলো বিষাক্ত শ্যাওলা খায়, সেগুলো রান্না করার পরও বিষাক্ত হতে পারে।
স্থানীয় কর্মকর্তা আইরিন ডিলো বিবিসিকে বলেছেন, একই সামুদ্রিক কচ্ছপের মাংস খাওয়ানো কিছু কুকুর, বিড়াল ও মুরগিও মারা গেছে। তিনি জানিয়েছেন, কর্তৃপক্ষ মৃত্যুর কারণ তদন্ত করছে।
সামুদ্রিক কচ্ছপটি অ্যাডোবো হিসেবে রান্না করা হয়েছিল। এটি একটি জনপ্রিয় ফিলিপিনো খাবার যাতে ভিনেগার ও সয়া সসে স্টিউ করা মাংস ও শাকসবজি থাকে।
আইরিন ডিলো বলেন, “সাদা বালির সৈকত ও স্বচ্ছ জলের জন্য পরিচিত উপকূলীয় গ্রাম দাতু ব্লা সিনসুয়াতের বাসিন্দাদের খাবারের উৎস মূলত সাগর থেকে আসে। ঘটনাটি দুর্ভাগ্যজনক, কারণ তাদের গ্রামে অন্যান্য অনেক সামুদ্রিক খাবার রয়েছে, যেমন: গলদা চিংড়ি ও মাছ।”
স্থানীয় কাউন্সিলর দাতু মোহাম্মাদ সিনসুয়াত জুনিয়র বলেছেন, তিনি স্থানীয় কর্মকর্তাদের এই অঞ্চলে সামুদ্রিক কচ্ছপ শিকারের ওপর নিষেধাজ্ঞা কঠোরভাবে কার্যকর করতে বলেছেন। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেছেন, “এই ধরনের খাদ্য বিষক্রিয়া আর কখনো ঘটতে দেওয়া হবে না।”
বেশিরভাগ সামুদ্রিক কচ্ছপ প্রজাতি বিপন্ন হিসাবে তালিকাভুক্ত। ফিলিপাইনে সামুদ্রিক কচ্ছপ শিকার করা, ক্ষতি করা বা হত্যা করা বেআইনি। তবে কিছু সম্প্রদায়ের মধ্যে কচ্ছপের মাংস এবং ডিমের ঔষধি গুণের ধারণা থেকে এগুলো শিকার করা হয়।
২০১৩ সালে ফিলিপাইনের পূর্ব সামার প্রদেশে এমনই আরেকটি ঘটনা ঘটেছিল, সেসময় ৬৮ জন অসুস্থ এবং চারজনের মৃত্যু হয়েছিল।
ঢাকা/ফিরোজ