বিক্ষোভের মুখে দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক আইন প্রত্যাহার
সংসদ সদস্যদের বিক্ষোভের মুখে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল মঙ্গলবার রাতে আকস্মিকভাবে জারির কয়েক ঘণ্টা পর বুধবার ভোরে সামরিক আইন প্রত্যাহার করার ঘোষণা দিয়েছেন।
এ বিষয়ে পাল্টামেন্টে ভোটের পর তিনি জানান, সামরিক আইনের অবসান ঘটাতে পার্লামেন্টের অবস্থান মেনে নেওয়া হবে। এ ব্যাপারে মন্ত্রিসভার বৈঠক হবে এবং বৈঠকের পরই সামরিক আইন প্রত্যাহার করা হবে। খবর রয়টার্সের।
এদিকে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলেছে, দক্ষিণ কোরিয়ার মন্ত্রিসভা জরুরি বৈঠক করে সামরিক আইন প্রত্যাহারে সম্মত হয়েছে। অবিলম্বে সামরিক আইন জারির আদেশটি বাতিল হয়ে যাবে।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট স্থানীয় সময় মঙ্গলবার মধ্যরাতে কোনো ধরনের পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই দেশটিতে জরুরি ভিত্তিতে সামরিক আইন জারি করেছিলেন। তিনি টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বলেন, “দেশের মুক্ত ও সাংবিধানিক শৃঙ্খলা রক্ষা করার জন্য এ ধরনের পদক্ষেপ নেয়া ছাড়া তার আর কোনো উপায় ছিল না।” প্রধান বিরোধী দলকে উত্তর কোরিয়ার প্রতি সহানুভূতিশীল এবং রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপের জন্য অভিযুক্ত করেন তিনি।
ইউন সুক-ইওল আরও বলেন, “উদারপন্থী দক্ষিণ কোরিয়াকে উত্তর কোরিয়ার কমিউনিস্ট বাহিনীর হুমকি থেকে সুরক্ষা দিতে এবং রাষ্ট্রবিরোধী বিভিন্ন শক্তি নির্মূল করতে আমি জরুরি ভিত্তিতে সামরিক আইন জারি করছি।”
এই আইন বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয় সেনাপ্রধান জেনারেল পার্ক আন-সুকে। দেশটিতে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করা হয়।
তবে আকস্মিকভাবে সামরিক শাসন জারির আদেশ মেনে নিতে পারেননি দক্ষিণ কোরিয়ার আইনপ্রণেতারা। দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক আইন জারির পর দেশটির পার্লামেন্ট ঘিরে উত্তেজনা দেখা দেয়।
প্রেসিডেন্ট ইয়োলের ঘোষণার বিরুদ্ধে পথে নেমে আসে লাখ লাখ মানুষ। পার্লামেন্ট ভবনের সামনে দেখা যায় হাজারো নাগরিককে। সেখানে তাদের ‘মার্শাল ল’ এর বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে শোনা যায়।
একজন বিরোধী নেতা আইনপ্রণেতাদেরকে ‘মার্শাল ল’ জারির আদেশ আটকে দেওয়ার জন্য সংসদে একত্রিত হওয়ার আহ্বান জানালে তারা সবাই পার্লামেন্টে আসেন। একপর্যায়ে কিছু সময়ের জন্য পার্লামেন্ট ভবনে প্রবেশ করেন সেনাসদস্যরা।
এই পরিস্থিতির মধ্যেও রাতেই নিরাপত্তা বাহিনীকে এড়িয়ে পার্লামেন্টে প্রবেশ করতে সক্ষম হন সরকারি ও বিরোধী দলের ১৯০ জন আইনপ্রণেতা। তারা সামরিক আইন জারির বিরুদ্ধে ভোট দেন। দক্ষিণ কোরিয়ার সংবিধান অনুযায়ী, পার্লামেন্টের ৩০০ সদস্যের মধ্যে বেশির ভাগ সদস্য চাইলে সামরিক আইন তুলে নেওয়া যাবে।
ঢাকা/ফিরোজ