এবিসি নিউজের বিরুদ্ধে মানহানি মামলায় দেড় কোটি ডলার পাচ্ছেন ট্রাম্প
নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দায়ের করা মানহানির মামলা মীমাংসা করতে ১৫ মিলিয়ন বা দেড় কোটি ডলার পরিশোধে সম্মত হয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজ। প্রতিষ্ঠানটির একজন জনপ্রিয় সংবাদ উপস্থাপকের ভুল মন্তব্যকে কেন্দ্র করে এই মামলা দায়ের করা হয়।
রবিবার (১৫ ডিসেম্বর) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, এবিসি নিউজ মানহানির মামলা নিষ্পত্তি করতে দেড় কোটি ডলার পরিশোধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
চলতি ২০২৪ সালের ১০ মার্চ, এবিসি নিউজের সঞ্চালক জর্জ স্টেফানোপলস একটি সাক্ষাৎকারে বারবার দাবি করেন যে ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘ধর্ষণের জন্য দায়ী’ বলে রায় দেওয়া হয়েছে। এটি ২০২৩ সালের একটি নাগরিক আদালতের রায়ের ভুল উপস্থাপনা। আসলে, আদালত ট্রাম্পকে ‘যৌন নির্যাতনের’ জন্য দায়ী বলেছিল, যা আইনি সংজ্ঞায় ধর্ষণ নয়। এই ভুল তথ্য প্রচার করার কারণে ট্রাম্প এবিসি নিউজের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করেন।
শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) ঘোষণা করা সমঝোতা অনুযায়ী, এবিসি নিউজ দেড় কোটি ডলার ‘প্রেসিডেন্সিয়াল ফাউন্ডেশন ও মিউজিয়ামে’ দান করবে, যা ট্রাম্পের পক্ষে প্রতিষ্ঠিত হবে। এছাড়াও, তারা ১ কোটি ডলার ট্রাম্পের আইনি খরচ মেটানোর জন্য প্রদান করবে। সমঝোতার অংশ হিসেবে, এবিসি নিউজ তাদের ওয়েবসাইটের ১০ মার্চের খবরের সঙ্গে একটি নোট যুক্ত করবে, যেখানে তারা ভুল তথ্য প্রচারের জন্য দুঃখ প্রকাশ করবে।
এতে লেখা থাকবে: “এবিসি নিউজ এবং জর্জ স্টেফানোপোলাস প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্পর্কে ১০ মার্চ ২০২৪ এবিসি’র ‘দিস উইক’ অনুষ্ঠানে জর্জ স্টেফানোপোলাসের সঙ্গে প্রতিনিধি ন্যান্সি ম্যাসের সাক্ষাৎকারে ট্রাম্পকে নিয়ে করা মন্তব্যের জন্য অনুতপ্ত।”
চলতি বছর ১০ মার্চ সাউদ ক্যারোলিনার রিপাবলিকান কংগ্রেসপার্সন ন্যান্সি ম্যাসের সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন স্টেফানোপোলাস। সে সময় ট্রাম্পকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যটি করেন তিনি। স্টেফানোপোলাস বলেন, বিচারক ও দুটি পৃথক জুরি ট্রাম্পকে ধর্ষণের জন্য দায়ী বলেছে। ট্রাম্পকে সমর্থনের পেছনে ম্যাসের কারণ জানতে চেয়ে সাক্ষাৎকার চলাকালে ১০ বার এই মন্তব্য করেন তিনি।
২০২৩ সালে নিউ ইয়র্কের একটি আদালত রায় দিয়েছিল, ম্যাগাজিন কলামিস্ট ই. জিন ক্যারলকে যৌন নির্যাতন করেছেন ট্রাম্প। যৌন নির্যাতন ও মানহানির জন্য ট্রাম্পকে পৃথক দুই মামলায় দায়ী করে আদালত। তবে আদালত উল্লেখ করে যে, নিউ ইয়র্কের আইনে সুনির্দিষ্ট সংজ্ঞা অনুযায়ী ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। এক মামলায় ক্যারলকে আট কোটি ৩৩ লাখ ডলার ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য ট্রাম্পের প্রতি নির্দেশনা জারি করা হয়।
বিবিসির মার্কিন অংশীদার প্রতিষ্ঠান সিবিএসের বিরুদ্ধেও ‘প্রতারণামূলক আচরণের’ অভিযোগে মামলা করেছেন ট্রাম্প। এর আগে, ২০২৩ সালে সিএনএনের বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করেছেন তিনি। তার অভিযোগ, অ্যাডলফ হিটলারের সঙ্গে তাকে তুলনা করেছে প্রতিষ্ঠানটি। অবশ্য এই মামলাটি খারিজ হয়। এছাড়া নিউ ইয়র্ক টাইমস ও ওয়াশিংটন পোস্টের বিরুদ্ধে করা মামলাও বাতিল হয়েছে।
এবিসি নিউজের একজন মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেছেন, কোম্পানি ‘খুশি যে উভয়পক্ষ আদালতে দাখিল করা শর্ত অনুযায়ী মামলা মিটমাট করেছে।’
ঢাকা/ফিরোজ