‘ভুলে ছোড়া গুলিতে’ দুই পাইলটসহ যুক্তরাষ্ট্রের বিমান ভূপাতিত
লোহিত সাগরে রণতরী থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে ভুলক্রমে নিজেদের যুদ্ধবিমানই ভূপাতিত করেছে মার্কিন সামরিক বাহিনী। বিমানটি বিধ্বস্ত হলেও এর দুই পাইলটকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন সামান্য আহত হয়েছেন।
রবিবার (২২ ডিসেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ডের (সেন্টকম) বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।
সেন্টকম এক বিবৃতিতে বলেছে, রণতরী ইউএসএস গেটিসবার্গ থেকে ‘ভুলক্রমে ছোড়া’ গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্র নৌবাহিনীর একটি এফ/এ-১৮ যুদ্ধবিমানে আঘাত করে। এই যুদ্ধবিমানটি অন্য একটি জাহাজ, ইউএসএস হ্যারি এস. ট্রুম্যানের ক্রুরা পরিচালনা করছিলেন। নিজেদের ভুলক্রমে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র বা ফ্রেন্ডলি ফায়ারের এই ঘটনা শনিবার (২১ ডিসেম্বর) ঘটেছে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, কোনো শত্রুপক্ষের গুলিতে এই ঘটনা ঘটেনি। ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চলছে।
অ্যাসোসিয়েটড প্রেসের খবরে বলা হয়েছে, এই ভুলকে বিশ্লেষকরা ‘মারাত্মক বিপর্যয়’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। লোহিত সাগরে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলমান এই বিপজ্জনক মার্কিন অভিযানে এ ধরনের ভুলকে তারা অমার্জনীয় বলে অভিহিত করেন।
২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজার যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই লোহিত সাগর ও এডেন উপসাগরে নৌপরিবহনকে বিঘ্নিত করতে ইয়েমেনের সশস্ত্র হুতি বিদ্রোহীরা সচেষ্ট রয়েছে। প্রায় ২০০ বারেরও বেশিবার তারা ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্রদের ব্যতিব্যস্ত রেখেছে।
শনিবার যুক্তরাষ্ট্র ইয়েমেনের বিদ্রোহীদের দখলে থাকা রাজধানী সানায় বেশ কিছু সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে। এর কয়েক ঘণ্টা আগে হুতিদের ছোড়া শক্তিশালী হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ইসরায়েলের তেল আবিবে বেশ কয়েকজন মানুষ আহত হন।
যুক্তরাষ্ট্র লোহিত সাগরে হুতিদের বেশ কিছু ড্রোন ও জাহাজ বিধ্বংসী ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংসেরও দাবি করেছে।
গাজা উপত্যকায় গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি বাহিনীর হামলার জবাবে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে নভেম্বর থেকে লোহিত সাগর এবং এডেন উপসাগরে চলাচলকারী বাণিজ্যিক জাহাজগুলোতে হামলা চালিয়ে আসছে হুতি বিদ্রোহীরা। প্রথম দিকে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্কিত জাহাজগুলোতে হামলা চালালেও বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং অন্যান্য বাণিজ্যিক জাহাজেও হামলা চালাচ্ছে গোষ্ঠীটি। হুতিদের একের পর এক জাহাজে হামলার জবাবে মার্কিন ও ব্রিটিশ সামরিক বাহিনীও প্রায়ই হুতিদের অবস্থানে হামলা চালাচ্ছে।
হুতিদের দাবি, গাজায় যুদ্ধবিরতি চালু না হওয়া পর্যন্ত তারা এ ধরনের হামলা থামাবে না।
ঢাকা/ফিরোজ