নিউ ইয়র্কে পাতাল রেলে এক নারীর গায়ে আগুন দিয়ে হত্যা
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে থেমে থাকা পাতাল ট্রেনে এক নারীর গায়ে আগুন দিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় সময় রবিবার ২২ (ডিসেম্বর) সকালে নিউ ইয়র্ক সিটির ব্রুকলিনের কনি আইল্যান্ড-স্টিলওয়েল অ্যাভিনিউ সাবওয়ে স্টেশনে একটি পাতাল (সাবওয়ে) ট্রেনে এ ঘটনাটি ঘটে। পুলিশের ধারণা, ওই নারী ঘুমন্ত অবস্থায় ছিলেন। আগুন দেওয়ার ঘটনায় এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
নিউ ইয়র্কের পুলিশ কমিশনার জেসিকা টিশ রবিবারের ঘটনাটিকে ‘একজন ব্যক্তি সম্ভবত অন্য একজন মানুষের বিরুদ্ধে ঘটাতে পারে এমন সবচেয়ে ঘৃণ্য অপরাধের একটি’ বলে বর্ণনা করেছেন।
সিসিটিভির ফুটেজ বিশ্লেষণ করে নিউ ইয়র্ক পুলিশ বিভাগ (এনওয়াইপিডি) জানিয়েছে, ওই নারী একটি থেমে থাকা ‘এফ’ ট্রেনের ভেতরে সকাল ৭:৩০ মিনিটে স্থির হয়ে বসে ছিলেন। এই সময় অজ্ঞাত এক ব্যক্তি তার কাছে এসে একটি লাইটার দিয়ে তার পোশাকে আগুন ধরিয়ে দেয়। এর আগে দুজনের মধ্যে কোনো ধরনের বাগ্বিতণ্ডা হতে দেখা যায়নি। এই দুই নারী-পুরুষ আগে থেকে একে অপরকে চিনতেন বলেও মনে করছে না পুলিশ।
পুলিশ কমিশনার জেসিকা টিশ বলেন, সন্দেহভাজন ব্যক্তি ট্রেন থেকে নেমে যায়, আর স্টেশনে টহলরত পুলিশ কর্মকর্তারা আগুনের দিকে দৌড়ে যান। পুলিশ কর্মকর্তারা ট্রেনের ভেতর একজন ব্যক্তিকে পুরোপুরি আগুনে জ্বলতে দেখেন। অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র ব্যবহার করে পুলিশ আগুন নেভায়। জরুরি বিভাগের কর্মীরা ঘটনাস্থলে ওই নারীকে মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি আরো জানান, পুলিশ কর্মকর্তারা সিসিটিভি ফুটেজ থেকে এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহভাজন ব্যক্তির খুব পরিষ্কার ছবি পেয়েছিল। অপরাধীর ছবি নিউ ইয়র্ক পুলিশ বিভাগ সর্বত্র ছড়িয়ে দিয়েছিল। পরবর্তীতে তিনজন হাইস্কুল শিক্ষার্থী ৯১১ নম্বরে ফোন করে জানায়, তারা সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে অন্য ট্রেনে চিনতে পেরেছে। এরপর হেরাল্ড স্কয়ার স্টেশন থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ কমিশনার বলেন, ওই ব্যক্তির পকেটে একটি লাইটার পাওয়া গেছে। ভুগভোগীর পরিচয় এবং আক্রমণের কারণ জানতে তদন্ত চলছে।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির পরিচায় প্রকাশ করেনি নিউ ইয়র্ক পুলিশ। তবে ওই ব্যক্তি ২০০৮ সালে গুয়েতেমালা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন বলে জানিয়েছে।
নিউ ইয়র্ক সিটির সাবওয়েতে প্রতিদিন প্রায় ৪ মিলিয়ন যাত্রী চলাচল করে, যেখানে সহিংস অপরাধ তুলনামূলকভাবে বিরল। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের নভেম্বর পর্যন্ত সাবওয়েতে ৯টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, যেখানে ২০২৩ সালের একই সময়ে এই সংখ্যা ছিল ৫।
ঢাকা/ফিরোজ