প্রথম ইউরোপীয় দেশ হিসেবে ডিসপোজেবল ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করল বেলজিয়াম

স্বাস্থ্য ও পরিবেশগত উদ্বেগের কারণে ডিসপোজেবল ভ্যাপ বা একক ব্যবহারের ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করেছে বেলজিয়াম। দেশটিতে এ সংক্রান্ত নতুন আইন অনুসারে, আগামী ১ জানুয়ারি থেকে ডিসপোজেবল ভ্যাপ বিক্রি নিষিদ্ধ হবে।
রবিবার (২৯ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে এবিসি নিউজ।
বেলজিয়ামের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ফ্রাঙ্ক ভ্যানডেনব্রুক বলেন, “সস্তা ই-সিগারেট স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হয়ে উঠেছে। কারণ এটি কিশোর-কিশোরীদের ধূমপানে আকৃষ্ট ও নিকোটিনে আসক্ত হওয়ার একটি সহজ উপায়।”
তিনি আরো বলেন, “ডিসপোজেবল ভ্যাপ কেবল নতুন গ্রাহকদের আকর্ষণ করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। এতে প্রায়ই নিকোটিন থাকে। নিকোটিন আপনাকে এতে আসক্ত করে তোলে। নিকোটিন স্বাস্থ্যের জন্য খারাপ। এগুলো সত্য।”
তার মতে, পুনঃব্যবহারযোগ্য ই-সিগারেটগুলো মানুষজনকে ধূমপান ত্যাগ করতে সহায়তা করার একটি হাতিয়ার হিসাবে কাজ করতে পারে। কিন্তু ডিসপোজেবল ভ্যাপ বিশেষ করে কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে নিকোটিনে আসক্ত হওয়া সহজ করে ক্রমবর্ধমান স্বাস্থ্য হুমকি হয়ে উঠেছে।
তিনি পরিবেশগত প্রভাবও তুলে ধরে বলেন, “যেহেতু এটি ডিসপোজেবল তাই এর প্লাস্টিক, ব্যাটারি ও সার্কিটগুলো পরিবেশের জন্য একটি বোঝা। ব্যাটারি ফুরিয়ে গেলে বা ই-তরল ব্যবহার হয়ে গেলে ফেলে দেওয়া হয় বলে এগুলো বিপজ্জনক রাসায়নিক বর্জ্য তৈরি করে।”
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, কেবল ডিসপোজেবল ভ্যাপের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে, কারণ পুনঃব্যবহারযোগ্য ভ্যাপ মানুষজনকে ধূমপান ছেড়ে দিতে সাহায্য করার একটি হাতিয়ার হতে পারে; যদি তারা অন্য উপায় খুঁজে না পায়।
অস্ট্রেলিয়া চলতি বছরের শুরুতে ই-সিগারেটের বিরুদ্ধে বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি কঠোর পদক্ষেপ নেয়। আর এবার ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে বেলজিয়াম সর্বপ্রথম ই-সিগারেটের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিল।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী ফ্রাঙ্ক ভ্যানডেনব্রুক বলেন, “আমরা ইউরোপের প্রথম দেশ, যারা ডিসপোজেবল ভ্যাপ নিষিদ্ধ করেছি।” তিনি ২৭টি ইউরোপীয় দেশের জোট ইইউ-তে তামাক সংক্রান্ত কঠোর আইন দেখতে চান।
ফ্রাঙ্ক ভ্যানডেনব্রুক বলেন, ‘আমরা সত্যিই ইউরোপীয় কমিশনকে তামাক আইন আপডেট করার, আধুনিকীকরণের জন্য নতুন উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।”
বেলজিয়াম সরকারের সিদ্ধান্তটি দেশটির ভ্যাপ শিল্পকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে বলে মনে করা হলেও ব্রাসেলস ভ্যাপোথেকসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেছে।
ব্রাসেলস ভ্যাপোথেক দোকানের মালিক স্টিভেন পোমের্যাঙ্ক বলেন, “আমি মনে করি না যে, নতুন নিষেধাজ্ঞাটি ভ্যাপ শিল্পকে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে ফেলবে। অনেকগুলো বিকল্প সমাধান রয়েছে। আমাদের গ্রাহকদেরকে রিচার্জেবল পড সিস্টেম ব্যবহারের দিকে নিয়ে যেতে হবে, যা আরো পরিবেশবান্ধব।”
ঢাকা/ফিরোজ