ফ্রান্সের সেনাদের দেশ ছাড়তে বলল আইভরি কোস্ট
বছরের প্রথম দিনে ফ্রান্সের সেনাবাহিনীকে দেশ ছাড়ার কথা বলল পশ্চিম আফ্রিকার দেশ আইভরি কোস্ট। একসময় ফ্রান্সের উপনিবেশ ছিল এই দেশটি। কয়েক দশক ধরে সেখানে ফরাসি সেনার ঘাঁটি আছে। এখন সেই ঘাঁটি সরিয়ে নেওয়ার কথা বলল দেশটি।
বুধবার (১ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল বছর শেষের ভাষণে আইভরি কোস্টের প্রেসিডেন্ট আলাসানা ওয়াত্তারা বলেন, “এই পদক্ষেপটি দেশের সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকীকরণের প্রতিফলন।”
এর আগে গতমাসে পশ্চিম আফ্রিকার আরেকটি দেশ সেনেগাল তার ভূখণ্ড থেকে ফ্রান্সকে তার সামরিক ঘাঁটি সরিয়ে নেওয়ার নিদের্শ দেয়। ২০২৫ সালের শেষের মধ্যে প্রত্যাহার সম্পন্ন হবে বলে নিশ্চিত করেছে দেশটি।
আফ্রিকার আইভরি কোস্টে ফরাসি সেনাবাহিনীর সবচেয়ে বড় অবশিষ্ট সামরিক ঘাঁটি অবস্থিত। দেশটিতে প্রায় ৬০০ ফরাসি সামরিক কর্মী রয়েছে। সেনেগালে রয়েছে ৩৫০ জন।
আইভরি কোস্টের প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, জানুয়ারি থেকেই ধীরে ধীরে ফ্রান্সকে সেনা সরিয়ে নিতে হবে। তিনি বলেন, “আমরা আইভরি কোস্টে ফরাসি বাহিনীর সমন্বিত এবং সংগঠিত প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
তিনি যোগ করেন, “ফরাসি সেনাবাহিনী পরিচালিত পোর্ট বুয়েটের সামরিক পদাতিক ব্যাটালিয়ন আইভোরিয়ান সৈন্যদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।”
এর আগে মালি, বুরকিনা ফাসো, নাইজার থেকে ফ্রান্সকে সেনাঘাঁটি সরাতে হয়েছে। এই প্রতিটি দেশেই এক সময় ফরাসি উপনিবেশ ছিল।
গত নভেম্বরে চাদ সরকার, যারা এ অঞ্চলে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পশ্চিমাদের অন্যতম প্রধান মিত্র- হঠাৎ করেই ফ্রান্সের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তির সমাপ্তি টেনে সেনা প্রত্যাহার করতে বলে।
সেনেগালের প্রেসিডেন্ট বাসিরু দিওমায়ে বলেছেন, “আমি সশস্ত্র বাহিনীর মন্ত্রীকে প্রতিরক্ষা ও সুরক্ষায় সহযোগিতার জন্য একটি নতুন মতবাদ প্রস্তাব করার নির্দেশ দিয়েছি। যার মধ্যে রয়েছে ২০২৫ সালের মধ্যে সেনেগালে সমস্ত বিদেশি সামরিক উপস্থিতি শেষ করা।”
দিওমায়ে গত মার্চ মাসে সার্বভৌমত্ব প্রদান এবং বিদেশি দেশগুলোর উপর নির্ভরতা শেষ করার প্রতিশ্রুতিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
বিবিসি জানিয়েছে, আইভরি কোস্ট থেকে ফরাসি সেনা চলে গেলে আফ্রিকার জিবুতি এবং গ্যাবন- এই দুটি দেশে ফ্রান্সের সেনা ঘাঁটি থাকবে।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, ফ্রান্স আফ্রিকায় তার ক্ষয়প্রাপ্ত রাজনৈতিক ও সামরিক প্রভাব পুনরুজ্জীবিত করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
ঢাকা/ফিরোজ