ঢাকা     সোমবার   ০৬ জানুয়ারি ২০২৫ ||  পৌষ ২৩ ১৪৩১

বাংলাদেশি নাবালিকাকে পাচারের অভিযোগে দোষী তিন ভারতীয়কে যাবজ্জীবন

কলকাতা সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:০৭, ৪ জানুয়ারি ২০২৫   আপডেট: ২২:২২, ৪ জানুয়ারি ২০২৫
বাংলাদেশি নাবালিকাকে পাচারের অভিযোগে দোষী তিন ভারতীয়কে যাবজ্জীবন

টিভি চ্যানেলে নাচের অনুষ্ঠানে প্রতিযোগী হিসেবে সুযোগ করে দেওয়া হবে। এমন প্রলোভন দেখিয়ে বাংলাদেশি এক নাবালিকা নারীকে ভারতে পাচারের অভিযোগ ওঠে। এতে দোষী সাব্যস্ত তিন ভারতীয়কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দয়েছে ভারতের আদালত।

ভারতের জনপ্রিয় বাংলা টিভি চ্যানেলের নাচের শো প্রতিযোগী হিসেবে সুযোগ করে দেওয়া হবে-এমন প্রলোভন দেখিয়ে ২০২১ সালের অক্টোবরে ঢাকার ওই কিশোরীকে দুই ভারতীয়র কাছে বিক্রি করে দেয় বাংলাদেশি নাগরিক দুই পাচারকারী মো. বাদশা ও তার স্ত্রী। যদিও শেষ রক্ষা হয়নি। পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার দর্শনা সীমান্তের কাছে দত্তফুলিয়া বর্ডার আউট পোস্ট এলাকা হয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশের সময় তাদের ধাওয়া করে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। এ সময় পাচারকারী বাদশা ও তার স্ত্রী পালিয়ে গেলেও বাংলাদেশি নাবালিকাকে আটক করে বিএসএফ। 

এদিকে, বিএসএফের পক্ষ থেকে আদালতে জানানো হয়, দত্তফুলিয়া সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় ওইদিন বিএসএফের ৮ ব্যাটালিয়ন রুটিন টহল দেওয়ার সময় অনুপ্রবেশকারীদের দেখতে পায় এবং তাদের একজনকে আটক করে। বিএসএফ জানায়, দুই পাচারকারীর সঙ্গে অবৈধ অনুপ্রবেশ করেছিলেন নাবালিকা। সঙ্গে থাকা দুই অনুপ্রবেশকারী বিএসএফের ধাওয়া খেয়ে পালিয়ে গেলেও আটক হয় নাবালিকা।

আরো পড়ুন:

বিএসএফ জওয়ানদের দেখে পালিয়ে যাওয়ার বদলে নাবালিকা রীতিমতো ছুটি এসে বিএসএফের কাছে দাবি করে তাকে ভারতে পাচার করে দেওয়া হচ্ছে। নাচের শো এর কথা বলা হলেও পরবর্তীতে তাকে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। পরে ওই নাবালিকাকে তুলে দেওয়া হয় নদীয়ার ধানতলা থানার পুলিশের হাতে।

এদিকে, বাংলাদেশি নাবালিকা বাজারের এই ঘটনার তদন্তে নেমেই দুই ভারতীয় নাগরিক বকুল মণ্ডল ও জসিম মণ্ডলকে সীমান্ত সংলগ্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে নদীয়ার ধানতলা থানার পুলিশ। পরে জিজ্ঞাসাবাদ ও দীর্ঘ তদন্তে এই মামলায় মুম্বাইয়ের বড় নারী পাচারকারী র‍্যাকেটের সন্ধান পায় জেলা পুলিশ। ঘটনা গুরুত্বপূর্ণ অনুধাবন করে গোটা মামলা পরবর্তীতে তুলে দেওয়া হয় সিআইডির হাতে। তদন্তে নেমে সিআইডি মুম্বাই থেকে এই মামলার মূল পাচারকারী লতা নামে আরেক ভারতীয় নারীকে গ্রেপ্তার করে।

সরকারপক্ষের আইনজীবী অপূর্ব কুমার ভদ্র জানান, মামলাটি শুরু থেকে রানাঘাট মহাকুমা আদালতের ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে বিচারাধীন ছিল। সব মিলিয়ে বিএসএফ জওয়ানসহ ১৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ দানের ভিত্তিতে রানাঘাট ফাস্ট ট্রাক আদালতের বিচারক মনোদিপ দাশগুপ্ত শনিবার (৪ জানুয়ারি) বকুল মণ্ডল ও জসিম মণ্ডল ও লতাকে যাবজ্জীবন সাজা ও ৫০ হাজার রুপি জরিমানার রায় দেন। 

ভুক্তভোগী বাংলাদেশি ওই নাবালিকাকেও ইতিমধ্যে বাংলাদেশে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

ঢাকা/সুচরিতা/সাইফ

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়