অভিযোগ মমতার
বাংলাদেশে ভারতীয় মৎস্যজীবীদের লাঠি দিয়ে পেটানো হয়েছে
কলকাতা সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম
মমতা বন্দ্যোপাধ্যয়
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যয় অভিযোগ করে বলেছেন, “আমাদের মৎস্যজীবীদের মোটা লাঠি দিয়ে পেটানো হয়েছে। আর আমরা বাংলাদেশি মৎস্যজীবীদের চিকিৎসা দিয়েছি।
সোমবার (৬ ডিসেম্বর) গঙ্গাসাগরের সভায় দেশে ফিরে আসা মৎজীবীদের প্রয়োজনীয় সহায়তা তাদের হাতে তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গে তার অভিযোগ বাংলাদেশে মারধর করা হয়েছে ভারতের মৎস্যজীবীদের।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “একটা সময় ছিল যখন মত্সজীবীরা হারিয়ে গেলে, জেলে থাকলে বা হারিয়ে গেলে কেউ কোনো খবর রাখত না। কিন্তু আমাদের সরকার আসার পরে আমরা ওদের একাট আইডি কার্ড দিয়েছি। ওই কার্ডের গুরুত্ব হল, মাছ ধরতে গিয়ে কেউ যদি হারিয়ে যায়, অন্য কোথায় চলে যায় তাহলে তাদের ট্র্যাক করতে পারি। ওই কার্ডের ফলেই আমরা জানতে পারি বাংলার ওইসব মত্জীবীরা বাংলাদেশের সীমানায় চলে গিয়েছে। আমরা খবর নিতে শুরু করি। তখন জানতে পারি ওদের আটক করে রাখা হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে আমরা যোগাযোগ শুরু করি।”
বাংলাদেশ ফেরত মত্সজীবীদের উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আপনারা যারা ফিরে এসেছেন তাদের পরিবারের মানুষদের মুখে হাসি ফুটেছে। যতক্ষণ আপনারা ফিরে না আসছিলেন, আপনাদের মুখগুলো পরিবারের লোকজন দেখতে না পেয়ে গভীর চিন্তায় ছিল। একটা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে ছিল। আজ ওরা ফিরে এসেছে।এবার বাড়ি ফিরে যাবেন। একজন জলে ঝাঁপ দিয়েছিলেন। মারা গিয়েছেন। তার পরিবারকে আমরা ২ লাখ টাকা তুলে দিলাম। আর আমার ৯৫ জন ভাই যাদের অনেক কষ্টে আমরা ফিরিয়ে আনতে পেরেছি। আমি এটা জানতাম না, কয়েকজন খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটছিলেন। আমি জিজ্ঞাসা করলাম খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটছেন কেন? তারা বলতে চায়নি। জানতে পারলাম তাদের কয়েকজনকে মারধরও করা হয়েছে। তাদের দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছিল। মোটা লাঠি দিয়ে মারা হয়েছে। ফলে কয়েকজনের শারীরিক চোট হয়েছে। জামা কাপড় পরে রয়েছে বলে বোঝা যাচ্ছিল না। ওরা কাঁদছিল বলে বুঝতে পারলাম। ডিএমকে বলব ওদের ভালোভাবে চিকিত্সার ব্যবস্থা করে দেবে।”
বাংলাদেশি মত্সজীবীদের ভারতীয় জলসীমায় ঢুকে পড়ার প্রসঙ্গ টেনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ওদের একটি ট্রলার এখানে চলে আসে। অনেক সময় জলের মধ্যে সীমানা ঠিক করা যায় না। পথ হারিয়ে যায়। কিন্তু আমরা নিষেধ করব, কখনওই আমাদের সীমানার বাইরে যাবেন না। তাতে জীবন বাঁচবে। জীবন বেঁচে থাকলে অনেক মাছ উঠবে। এই যে দুমাস জেলে ছিলেন তাদের তাতে আপনাদের পরিবারের, আপানাদের কষ্ট হয়নি? অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে গিয়েছিলেন। বাংলাদেশি ট্রলার আমাদের এখানে চলে এসেছিল। তাদের আমরা ভালো করে রেখেছিলাম।তাদের চিকিত্সা করেছিলাম। তাদের ফেরতও দিয়েছি। দুদেশই মৈত্রীর বন্ধনে আবদ্ধ থাক আমরা চাই। ওদের ট্রলার আটকে ছিল, আমরা সাহায্য করলাম। যাতে দেশের কোনও বদনাম না হয়। আমরা বিষয়টি ভারত সরকারকে জানিয়েছিলাম। নিজেরাও কথা বলেছিলাম। রোজ আমরা খবর রাখতাম। তার পরেই দুদেশের মধ্যে একটা আদান-প্রদান হয়। বাংলাদেশের যারা ছিল তাদের আমরা হ্যান্ডওভার করে দিই। ওরাও আমাদের মত্সজীবীদের ফেরত দেয়।”
ঢাকা/সুচরিতা/সাইফ