নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্তের আহ্বান টিউলিপের
যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিক নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন। বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দলের ঘনিষ্ঠ লোকজনের কাছ থেকে লন্ডনে বিনামূল্যে ফ্ল্যাট পাওয়ার খবর প্রকাশিত হওয়ার পর ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে তিনি এ আহ্বান জানালেন।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যের একটি স্বাধীন তদন্তকারী কর্তৃপক্ষ এটি তদন্ত করবে।
তদন্তের আহ্বান জানিয়ে টিউলিপ সিদ্দিক যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা (ইনডিপেনডেন্ট অ্যাডভাইজার অব মিনিস্ট্রিয়াল স্ট্যান্ডার্ডস) লাউরি ম্যাগনাসের কাছে চিঠি লিখেছেন।
চিঠিতে টিউলিপ লিখেছেন, গত কয়েক সপ্তাহে তিনি গণমাধ্যমের খবরের বিষয়বস্তু হয়েছেন। সেখানে তার আর্থিক বিষয় এবং বাংলাদেশের আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে তার পরিবারের সংযোগের বিষয়গুলো উঠে এসেছে। এর অনেক কিছুই সঠিক নয়।
তিনি লেখেন, “আমি নিশ্চিত যে আমি কোনো ভুল করিনি। তবে, সন্দেহ দূর করার জন্য আমি চাই আপনি স্বতন্ত্রভাবে এই বিষয়ের সত্য উদঘাটন করুন।”
এদিকে, লেবার পার্টির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, টিউলিপ সিদ্দিক এই সপ্তাহে চ্যান্সেলর র্যাচেল রিভসের নেতৃত্বে চীনে ট্রেজারি প্রতিনিধিদলের সফরে যোগ দেবেন না। তিনি দেশে থেকে তদন্তে সহযোগিতা করবেন।
টিউলিপ সিদ্দিক বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে। তিনি যুক্তরাজ্যের আর্থিক খাতে দুর্নীতি বন্ধের দায়িত্বে আছেন। তবে সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে টিউলিপ সিদ্দিকের বসবাস করা একাধিক ফ্ল্যাট নিয়ে বিতর্ক দেখা দেয়।
ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, লন্ডনের কিংস ক্রস এলাকার কাছে টিউলিপের মালিকানায় একটি ফ্ল্যাট রয়েছে। ২০০৪ সালে তাকে সেটি আবদুল মোতালিফ নামের একজন আবাসন ব্যবসায়ী বিনামূল্যে দিয়েছিলেন। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে ওই ব্যবসায়ীর সংশ্লিষ্টতা ছিল। আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট আরো কয়েকটি ফ্ল্যাটে টিউলিপ ও তার পরিবারের বসবাসের খবর পাওয়া গেছে।
তবে, টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ ওঠার পরেও তার ওপর আস্থা রেখেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। তার মতে, টিউলিপ যথাযথ পদক্ষেপই নিয়েছেন।
স্টারমার বলেন, “টিউলিপ সিদ্দিক স্বপ্রণোদিত হয়ে স্বার্থ বিষয়ক স্বাধীন উপদেষ্টার কাছে বিষয়টি উল্লেখ করেছেন, যা সম্পূর্ণ সঠিক পদক্ষেপ। আমি তার প্রতি আস্থা রাখি।”
এদিকে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) টিউলিপ, তার মা শেখ রেহানা, তার খালা শেখ হাসিনা ও তার খালার ছেলে সজীব ওয়াজেদের বিরুদ্ধে ৯ প্রকল্পে ৮০ হাজার কোটি টাকা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের বিরুদ্ধে গত ডিসেম্বরে অনুসন্ধান শুরু করেছে।
ঢাকা/ফিরোজ