ঢাকা     শুক্রবার   ১০ জানুয়ারি ২০২৫ ||  পৌষ ২৭ ১৪৩১

যে কারণে টিউলিপকে এখনো সমর্থন দিচ্ছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:০২, ১০ জানুয়ারি ২০২৫   আপডেট: ১৫:২০, ১০ জানুয়ারি ২০২৫
যে কারণে টিউলিপকে এখনো সমর্থন দিচ্ছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী

বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানন্ত্রী শেখ হাসিনার বোনের মেয়ে এবং ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কাছ থেকে বিনামূল্যে ফ্ল্যাট পাওয়ার তথ্য সামনে এসেছে। শুধু তা-ই নয়, এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে তিনি ব্রিটিশ দৈনিক ডেইলি মেইলকে মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন এবং পত্রিকাটির সাংবাদিককে হুমকি দিয়েছেন। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর রাজনৈতিকভাবে চাপে আছেন টিউলিপ। 

তবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনীতিবিষয়ক মিনিস্টার টিউলিপের বিরুদ্ধে এখনো কোনো পদক্ষেপ নেননি প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার। বেশ কঠোর বলেই পরিচিত স্টারমার কেন পদক্ষেপ নেননি তার নেপথ্যের কারণ জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ।

সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, টিউলিপ ও স্টারমারের মধ্যে বন্ধুত্ব দীর্ঘদিনের। কিয়ার তার যে কয়েকজন ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক বন্ধুর প্রতি আনুগত্যশীল টিউলিপকে সেই পক্ষেরই একজন বলা হচ্ছে। তাদের রাজনৈতিক বন্ধন ২০১৪ সাল থেকে শুরু। ওই সময় টিউলিপ হ্যাম্পস্টেড এবং কিলবার্নে লেবারের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। আর তার নির্বাচনী এলাকার প্রতিবেশী হলবর্ন এবং সেন্ট প্যানক্রাসে বিজয়ের জন্য লড়ছিলেন স্যার কিয়ার। টিউলিপ ওই সময় কিয়ারের পাশে দাঁড়ান।

২০১৫ সালের নির্বাচনে একই রাতে একসঙ্গে পার্লামেন্টে প্রবেশ করেন এই দুজন। ২০২০ সালের গোড়ার দিকে যখন লেবার পার্টির শীর্ষ পদে নির্বাচনের সময় আসে তখন টিউলিপই প্রথম লেবার এমপিদের মধ্যে স্যার কিয়ারকে প্রকাশ্যে নেতা হিসেবে মনোনীত করেন। এমনকি তার প্রার্থিতাকে লেবার ফ্রেন্ডস অফ বাংলাদেশও সমর্থন করে। এ গ্রুপটি দলীয় চাপ বৃদ্ধিতে বেশ সহায়কের ভূমিকায় ছিল। এটা স্পষ্ট যে, টিউলিপের সঙ্গে সম্পর্ক থাকাতেই গ্রুপটি কিয়ারকে সমর্থন দেয়।

টিউলিপ বিভিন্ন সময় স্টারমারের পাশে বন্ধুর মতো থাকার কথা সংবাদমাধ্যমে বলেছেন। এ জয়ের পেছনে তার ভূমিকা নিয়েও তিনি প্রকাশ্যে মন্তব্য করেছেন। কমন্স চেম্বারের বাইরে টিউলিপ হচ্ছেন মুষ্টিমেয় কয়েকজন এমপির একজন যাদের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার সহকর্মীর পরিবর্তে ব্যক্তিগত বন্ধু হিসেবে গণ্য করেন।

টিউলিপ ও কিয়ারের পরিবার একে অপরের সাথে সময় কাটিয়েছে বলেও জানা গেছে। এমনকি তারা একসাথে ছুটি কাটাতেও গিয়েছে। হয়তো এসব কারণেই টিউলিপের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিভঙ্গি ভিন্ন।

এই ভিন্নতার মাত্রা যে অনেক বেশি তা টিউলিপ সিদ্দিকের প্রতি স্যার কিয়ারের আচরণ এবং প্রাক্তন পরিবহনমন্ত্রী লুইস হাই-এর প্রতি আচরণের পার্থক্য দেখে বোঝা যাচ্ছে।

এক দশক আগের জালিয়াতির অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার খবর প্রকাশিত হওয়ার পর নভেম্বরে লুইস হাই পদত্যাগ করেন। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর ডাউনিং স্ট্রিট স্পষ্টতই তাকে সমর্থন দিতে ব্যর্থ হয়েছিল। পরে জানা গেছে যে তাকে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের চিফ অফ স্টাফ মরগান ম্যাকসুইনি পদত্যাগ করতে বলেছিলেন।

মজার ব্যাপার হচ্ছে, লুইস হাই ছিলেন মন্ত্রিসভার একজন সিনিয়র মন্ত্রী। অপরদিকে, টিউলিপ সিদ্দিক হচ্ছেন অর্থমন্ত্রী র‍্যাচেল রিভসের দলের সবচেয়ে জুনিয়র সদস্যদের একজন। 
 

ঢাকা/শাহেদ


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়