‘দুর্নীতির অভিযোগে টিউলিপ সিদ্দিককে বরখাস্ত করা উচিত’
আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম
যুক্তরাজ্যের সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিককে বরখাস্ত করতে প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির প্রধান বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টির প্রধান কেমি ব্যাডেনোচ। টিউলিপের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি এবং তার পরিবার বাংলাদেশে অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলার আত্মসাৎ করেছে।
রবিবার (১২ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কনজারভেটিভ পার্টির নেতা কেমি ব্যাডেনোচ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্ট করে টিউলিপ সিদ্দিককে মন্ত্রীসভা থেকে বরখাস্ত করার দাবি জানিয়েছেন।
পোস্টে বিরোধী দলীয় নেতা বলেন, “কিয়ার স্টারমারের টিউলিপ সিদ্দিককে বরখাস্ত করার সময় এসেছে। প্রধানমন্ত্রী তার ব্যক্তিগত বন্ধুকে দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন এবং তিনিই দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত।”
কেমি ব্যাডেনোচ এমন এক সময়ে এই দাবি করলেন, যার কিছু আগেই বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সানডে টাইমসকে বলেছেন, টিউলিপ সিদ্দিকের ক্ষমা চাওয়া উচিত।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, টিউলিপ সিদ্দিক লন্ডনের এমন কিছু বাড়ি বসবাস করেছেন যেগুলোর সঙ্গে তার খালা ও বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম জড়িত।
এদিকে, টিউলিপ সিদ্দিক নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর মানদণ্ড উপদেষ্টার কাছে হস্তান্তর করেছেন এবং জোর দিয়ে বলেছেন যে, তিনি কোনো অন্যায় করেননি। উপদেষ্টা স্যার লরি ম্যাগনাসের কাছে এক চিঠিতে তিনি বলেন, “আমি স্পষ্টভাবে জানাতে চাই, আমি কোনো ভুল করিনি।”
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এরই মধ্যে জানিয়েছে, স্যার লরি এখন বিষয়টি তদন্ত করবেন এবং যদি প্রয়োজন হয়, পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন।
বিরোধীদলীয় নেতা কেমি ব্যাডেনোচ বলেছেন, “টিউলিপ সিদ্দিক বর্তমান সরকারের জন্য একটি বিভ্রান্তির কারণ হয়ে উঠেছেন। বাংলাদেশ সরকার শেখ হাসিনার শাসনামলের সঙ্গে টিউলিপ সিদ্দিকের সম্পর্ক নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করছে।”
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সানডে টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “টিউলিপ সিদ্দিক যেসব সম্পত্তি ব্যবহার করেছেন তা তদন্ত করা উচিত এবং যদি সেগুলো লুটপাটের মাধ্যমে অর্জিত হয়ে থাকে, তবে সেগুলো বাংলাদেশের জনগণের কাছে ফেরত দেওয়া উচিত।”
টিউলিপ সিদ্দিক যুক্তরাজ্যের ট্রেজারির অর্থনীতিবিষয়ক মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি অর্থনৈতিক অপরাধ, অর্থ পাচার এবং অবৈধ অর্থায়ন মোকাবিলার দায়িত্বে আছেন।
টিউলিপ সিদ্দিক স্যার লরি ম্যাগনাসের কাছে লেখা চিঠিতে বলেছেন, “সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে আমি আমার আর্থিক বিষয় এবং বাংলাদেশের সাবেক সরকারের সঙ্গে আমার পরিবারের যোগসূত্র সম্পর্কে মিডিয়া রিপোর্টিংয়ের বিষয় হয়েছি, যার বেশিরভাগই ভুল তথ্য। আমি নিশ্চিত যে, আমি কোনো ভুল করিনি। তবে, সন্দেহ এড়ানোর জন্য আমি চাই, আপনি স্বাধীনভাবে বিষয়টি তদন্ত করুন।”
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার সাংবাদিকদের বলেছেন, তার মন্ত্রীর উপর তার আস্থা রয়েছে। তিনি আরো বলেন, “টিউলিপ সিদ্দিক নিজেকে তদন্তের জন্য রেফার করে সর্ম্পূর্ণ সঠিকভাবে কাজ করেছেন।”
ঢাকা/ফিরোজ