ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ০৬ মার্চ ২০২৫ ||  ফাল্গুন ২১ ১৪৩১

কঙ্গোতে বিদ্রোহীদের সঙ্গে লড়াইয়ে ৭০০ জনের মৃত্যু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৩৫, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫   আপডেট: ১৩:৪৩, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
কঙ্গোতে বিদ্রোহীদের সঙ্গে লড়াইয়ে ৭০০ জনের মৃত্যু

আফ্রিকার দেশ কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলে বিদ্রোহীগোষ্ঠী এম২৩ গ্রুপের সঙ্গে লড়াইয়ে পাঁচ দিনে ৭০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। 

জাতিসংঘের বরাত দিয়ের শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।  

জাতিসংঘের মুখাপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেছেন, গত রবিবার থেকে রুয়ান্ডা সমর্থিত এম২৩ গ্রুপের সঙ্গে লড়াইয়ে উত্তর কিভু প্রদেশের রাজধানী গোমায় এ পর্যন্ত আহত হয়েছে ২ হাজার ৮০০ জন।  

আরো পড়ুন:

শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) ডুজারিক বলেন, রবিবার থেকে বৃহস্পতিবারের মধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও এর অংশীদার সংস্থা এবং কঙ্গো সরকারের সঙ্গে পরিচালিত একটি যৌথ মূল্যায়ন থেকে হতাহতের এই পরিসংখ্যান পাওয়া গেছে।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের শুরু থেকে কঙ্গো সেনাবাহিনী ও এম২৩ বিদ্রোহীদের মধ্যে লড়াই আরো তীব্র হয়েছে। এম২৩ বিদ্রোহীগোষ্ঠী উত্তর কিভু প্রদেশের রাজধানী গোমা দখলে নিয়েছে। তারা এখন দক্ষিণ কিভু প্রদেশের রাজধানী বুকাভুর দিকে এগোচ্ছে বলে জানা গেছে।

বার্তা সংস্থা এএফপির খবর বলছে, এম২৩-এর অগ্রগতি থামানোর জন্য কঙ্গোর সামরিক বাহিনী গোমা ও বুকাভুর মধ্যবর্তী রাস্তায় একটি প্রতিরক্ষামূলক লাইন স্থাপন করেছে।

বুকাভুকে রক্ষা করার জন্য শত শত বেসামরিক স্বেচ্ছাসেবককে নিয়োগ করা হয়েছে।

একজন তরুণ এএফপিকে বলেছেন: “আমি আমার দেশের জন্য মরতে প্রস্তুত।”

গত সপ্তাহে, এম২৩ বিদ্রোহী গোষ্ঠী পশ্চিমে প্রায় ২,৬০০ কিলোমিটার দূরে রাজধানী কিনশাসায় পৌঁছানো পর্যন্ত আক্রমণ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

‘এম২৩’ কঙ্গোর তুতসিস আদিবাসীদের একটি বিদ্রোহী সশস্ত্রগোষ্ঠী। এটি এক সময় কঙ্গোর সেনাদের সঙ্গে কাজ করত। তবে ১০ বছর আগে এটি কঙ্গো সেনাবাহিনী থেকে আলাদা হয়ে যায়। ২০২২ সাল থেকেই এম২৩ বিদ্রোহীগোষ্ঠী কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলীয় বিভিন্ন এলাকা দখল নেওয়া শুরু করে।  

এম২৩ বলছে, তারা সংখ্যালঘু অধিকারের জন্য লড়াই করছে। অন্যদিকে কঙ্গোর সরকার বলছে, রুয়ান্ডা-সমর্থিত বিদ্রোহীরা পূর্ব অঞ্চলের বিশাল খনিজ সম্পদের নিয়ন্ত্রণ চাইছে।

কঙ্গোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী থেরেস কাইকওয়াম্বা ওয়াগনার বিবিসিকে বলেছেন, রুয়ান্ডা অবৈধভাবে তাদের দেশ দখল করছে এবং শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনের চেষ্টা করছে।

ওয়াগনার বলেন, “আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় রুয়ান্ডার প্রেসিডেন্ট পল কাগামেকে কয়েক দশক ধরে দায়মুক্তি দিয়েছে এবং আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের জন্য তাকে জবাবদিহি করতে ব্যর্থ হয়েছে।”

তবে রুয়ান্ডা সরকারের মুখপাত্র ইয়োলান্ডে মাকোলো এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, দেশটির সেনারা কেবল সংঘাতকে তার ভূখণ্ডে ছড়িয়ে পড়া রোধ করার জন্য কাজ করছে।

বিবিসির নিউজডে প্রোগ্রামে মাকোলো বলেন,  “আমরা যুদ্ধে আগ্রহী নই, আমরা সংযুক্তিতে আগ্রহী নই, আমরা শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনে আগ্রহী নই।

জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা গত বছর বলেছিলেন, কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলে এম২৩ গোষ্ঠীকে রুয়ান্ডার ৩,০০০ থেকে ৪,০০০ সেনা সহযোগিতা করছে।

গত সপ্তাহে কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলে বিদ্রোহীদের সঙ্গে লড়াইয়ে ১৩ শান্তিরক্ষী নিহতের কথা জানায় জাতিসংঘ। 

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, এ সংঘাতের কারণে চলতি বছরই প্রায় চার লাখ মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়