ঢাকা     শনিবার   ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ ||  পৌষ ৭ ১৪৩১

কক্সবাজারের পরিবেশ পুনরুদ্ধারের দাবি

আবু বকর ইয়ামিন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:৩৮, ৪ জুন ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
কক্সবাজারের পরিবেশ পুনরুদ্ধারের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক : কক্সবাজারের প্রাকৃতিক সম্পদ সুরক্ষার স্বার্থে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করে দ্রুত প্রবর্তন ও পরিবেশ পুনরুদ্ধারের দাবি জানিয়েছে কোস্ট ট্রাস্ট ও কক্সবাজার সিএসও এনজিও ফোরাম।

‌সোমবার রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লা‌বে এক সংবাদ স‌ম্মেল‌নে এ দা‌বি জানায় সংগঠনটি।

সংবাদ স‌ম্মেল‌নে বক্তারা বলেন, অপরিকল্পিত নগরায়ন, অতিরিক্ত ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন, অধিক পর্যটকদের আগমনের কারণে হোটেলে পানির অতিরিক্ত চাহিদা, নোনা পানির অনুপ্রবেশ এবং জলবায়ু পরিবর্তন ইত্যাদি প্রবাহ কক্সবাজার থেকে শুরু করে টেকনাফ পর্যন্ত বিস্তৃত উপকূলীয় অঞ্চলে ভূগর্ভস্থ পানির ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলছে বলে গবেষণায় দেখা গেছে। এতে অদূর ভবিষ্যতে এই অঞ্চলে ভূগর্ভস্থ পানির সংকট দেখা দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

বক্তারা আরো জানান, মিয়ানমার থেকে চলে আসা প্রায় ১ মিলিয়ন মানুষ আশ্রয় নিয়েছে স্থায়ীভাবে তাড়াহুড়ায় তৈরি করা পলিথিনের তাঁবুর মধ্যে। যেসব পাহাড়ে শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। সেখানে ইতিমধ্যে প্রায় সকল গাছ কাটা পড়েছে। ঘাস ওঠে গেছে, ফলে আগামী বর্ষা মৌসুমে পাহাড় ধসে ব্যাপক প্রাণহানির সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও এই অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড় প্রবণতা র‌য়ে‌ছে। এখা‌নে সবমিলে মাত্র ৫৮০০ একর জমিতে ২৩ দশমিক ৪ বর্গকিলোমিটারে অবস্থান নিয়েছে এক মিলিয়ন মানুষ। এতো ঘনবসতি কোনভাবে মানবজীবনের উপযোগী নয়। এতে পরিবেশের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ।

বক্তারা বলেন, রোহিঙ্গাদের প্রবেশের ৯ মাসে সামাজিক অর্থনৈতিক সাংস্কৃতিক ও পরিবেশগত যতটা ক্ষতি হয়েছে, তা চলতে থাকলে ২০১৯ সালের মধ্যে ওই এলাকার বনভূমি ধ্বংস হয়ে যাবে।

তারা জানান, এক গবেষণায় দেখা গেছে রোহিঙ্গা শিবিরে আশ্রয় নেওয়া জনগণের রান্নার জন্য প্রতিদিন যে কাট পোড়ানো হচ্ছে। তাতে প্রতিদিন চারটি ফুটবল মাঠের সমান বনভূমি উজাড় হয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থা চল‌তে থাকলে ২০১৯ সালের মধ্যে উখিয়া ও টেকনাফের ভূমি বলে কিছু অবশিষ্ট থাকবে না।

বক্তারা আরো জানান, উখিয়া ও টেকনাফে অবস্থিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোর আশেপাশে অবস্থিত এবং সংযুক্ত মোট ২১টি খাল সবগুলোর পানি দূষিত হয়েছে। এসব খাল থে‌কে বেশিরভাগ মানুষ কৃষি ও পারিবারিক দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার করত। এখন তাদের জন্য ব্যবহার করা মারাত্মক হ‌য়ে পড়ে‌ছে। এসব খাল বিল থে‌কে রোগজীবাণু ছড়াচ্ছে।

কক্সবাজারের টেকনাফের পরিবেশ রক্ষার জন্য প্রস্তাব রেখে বক্তারা বলেন, পরিবেশ পুনরুদ্ধারের জন্য বিশেষ তহবিল বরাদ্দ করতে হবে। রোহিঙ্গা রিলিফের জন্য আন্তর্জাতিক বাজেটের একটা অংশ এই খাতে বরাদ্দ করতে হবে। এবং সকল খাল, বি‌লের পানির প্রকৃতি প্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে। কক্সবাজারের জেলায় ব্যাপক বৃক্ষরোপন কার্যক্রম চালু করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ বিজ্ঞানী ড. আতিউর রহমান, কোস্ট ট্রাস্টের নির্বাহী প্রধান রেজাউল করিম চৌধুরী, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন বাপা কক্সবাজার জেলা সভাপতি ফজলুল কাদের চৌধুরী প্রমুখ।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/৪ জুন ২০১৮/ইয়ামিন/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়