রক্ষক যখন নিজেই কারাগারে
মাকসুদুর রহমান : ডিআইজি পার্থ গোপাল বণিক। চট্টগ্রাম, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন কারাগারে দায়িত্ব পালন করেছেন। হাজার-হাজার বন্দির ছিলেন রক্ষক। কিন্তু নিয়তির নির্মম পরিহাস, দুর্নীতির দায়ে গ্রেপ্তার হয়ে সেই কারাগারেই ঠাঁই হলো তার।
মঙ্গলবার রাতে এ বিষয়ে কথা হয় কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মাহাবুবুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘ডিআইজি একজন প্রথম শ্রেণির নাগরিক। এ কারণে তিনি কারাগারে ডিভিশন পাবেন। সেটি মেনেই তাকে প্রথম শ্রেণির বন্দির সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেয়া হচ্ছে। রাখা হয়েছে একটি সেলে।’
কারাগার সূত্রে জানা গেছে, একটি জেলার কারাগারের গুরুত্বপূর্ণ সব নির্দেশই ডিআইজি দিয়ে থাকেন। কারাগারে বন্দিদের খাবার থেকে শুরু করে কোন সেলে কাকে রাখতে হবে তার নির্দেশ দিয়ে থাকেন। কারা অভ্যন্তরে কিছু হলে তিনিই দ্রুত হস্তক্ষেপ করেন। তার অধীনে জেলা কারাগারের জেল সুপার, জেলার, ডেপুটি জেলার এমনকি শত শত কারারক্ষীও তার অধীনে কাজ করেন। বলা যায় একটি কারাগারের গুরুত্বপূর্ণ পদ বা ব্যক্তিই হলেন ডিআইজি। সে সুবাদে কারা অভ্যন্তরে সরকারি ক্রয়, বন্দিদের কাছে অতিরিক্ত মূল্যে খাবার বিক্রি এমনকি সিট বিক্রি করেও তিনি লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে দুদকের তদন্তে এসেছে। তার বাসা থেকে উদ্ধার হওয়া ৮০ লাখ টাকার উৎসও এগুলো।
দুদকের কাছে তথ্য আছে, পার্থ বণিক ২০১৬ সালের ৮ আগস্ট চট্টগ্রাম কারাগারে ডিআইজি হিসেবে যোগ দেন। ২০১৮ সালের ২৬ অক্টোবর নগদ ৪৪ লাখ ৩৩ হাজার টাকা ও প্রায় ৫ কোটি টাকার নথিপত্রসহ ভৈরব রেলওয়ে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন চট্টগ্রামের জেলার সোহেল রানা বিশ্বাস। এরপরই পার্থ গোপালসহ আরো কয়েকজন কারা কর্মকর্তার দুর্নীতির তথ্য বেরিয়ে আসে।
উল্লেখ্য, রোববার বিকেলে ধানমণ্ডির ভূতের গলিতে পার্থ গোপাল বণিকের ফ্ল্যাট থেকে ৮০ লাখ টাকা উদ্ধার করে দুদক। এর পরেই তাকে আটক করা হয়। পরে দুর্নীতির মামলায় তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩১ জুলাই ২০১৯/মাকসুদ/হাকিম মাহি
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন