ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

দলিল নিবন্ধনে দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ নিয়েছে: টিআইবি

আহমদ নূর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:২০, ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
দলিল নিবন্ধনে দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ নিয়েছে: টিআইবি

নিজস্ব প্রতিবেদক:  ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, তাদের পরিচালিত গবেষণায় দেখা গেছে দুর্নীতিতে নিমজ্জিত ভূমি দলিল নিবন্ধন সেবাখাতে ব্যাপক সুশাসনের ঘাটতি রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করেছে। সেবাগ্রহীতাদের কাছ থেকে বিভিন্নভাবে সেবা দেয়ার নামে জিম্মি করে, সময়ক্ষেপণ করে নিয়ম বহির্ভূতভাবে অর্থ আদায় ও ঘুষ আদায় করা হচ্ছে।

সোমবার বেলা সোয়া ১১ টায় ‘ভূমি দলিল নিবন্ধন সেবায় সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর ধানমণ্ডিস্থ মাইডাস সেন্টারে টিআইবি কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, অন্য প্রায় সকল খাতের মতোই আইনী দুর্বলতা, সেবার মানোন্নয়নে ও নীতি-নির্ধারণীর ক্ষেত্রে জনবল, অবকাঠামোগত, পরিকল্পনা ও উদ্যোগের ঘাটতি রয়েছে। একই সাথে ডিজিটাইজেশনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন পিছিয়ে পড়েছে। অবকাঠামোগত দিক থেকে অধিকাংশ ভূমি অফিস জরাজীর্ণ। সুশাসনের ঘাটতি উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে, যা সেবাগ্রহীতাদের মধ্যে ক্ষোভ পুঞ্জিভূত করছে।

তিনি বলেন, কোনো ভূমি দলিল নিবন্ধন অফিস ব্যতিক্রমও পেয়েছি। অনেক কর্মকর্তা জবাবদিহিতার সাথে স্বচ্ছতার সাথে দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু সে সংখ্যা তুলনায় খুবই কম।

অংশীদারিত্বের ও যোগসাজশের মাধ্যমে দুর্নীতি হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেখানে সর্বনিম্ন থেকে উচ্চপর্যায় পর্যন্ত অংশীদারিত্বের দুর্নীতি হচ্ছে, যা কিনা প্রাতিষ্ঠানিক রূপরেখায় রূপ নিয়েছে। সেবাখাত মানেই সুশাসনের ঘাটতি ও দুর্নীতিপ্রবণ। দলিল নিবন্ধন ও দুর্নীতি যেন অনেকটা সমার্থক হয়ে গেছে। এইখাতে নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে বড় ধরনের দুর্নীতি ও ঘুষ লেনদেনের চিত্র বিরাজ করছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে দৃষ্টান্ত আছে যে, একজন সাব- রেজিস্ট্রারকে বদলি করতে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ লেনদেন হয়েছে।

ভূমি দলিল নিবন্ধন সেবাখাতে দুর্নীতি ও অনিয়মের চিত্র নিয়ন্ত্রণ করতে দুটি জিনিসকে গুরুত্ব দেয়া উচিত উল্লেখ করে ড. ইফতেখার বলেন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। দুর্নীতি-অনিয়মের সাথে যারা জড়িত তাদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা। কর্তৃপক্ষের যদি সদিচ্ছা থাকে তাহলে দুর্নীতিপরায়ণ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শাস্তি নিশ্চিত করা সম্ভব। দুর্নীতির অংশীজনদের নিয়ন্ত্রণ ও মনিটরিং করা, দুর্নীতিপরায়ণদের শাস্তি নিশ্চিত করা সম্ভব হলে সেবাগ্রহীতারা হয়রানি থেকে রক্ষা পাবেন, সরকারের এখাতের রাজস্ব আরো বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে। দ্বিতীয়ত: প্রাতিষ্ঠানিক অগ্রগতি ও আধুনিকায়নকে গুরুত্ব দেয়া। যদিও সরকার এই কার্যক্রম গ্রহণ করলেও অগ্রগতি নেই। এক্ষেত্রে ই-নিবন্ধনসহ পুরো প্রক্রিয়াকে ডিজিটাইজেশন করতে হবে। এটা সম্ভব হলে এই খাতে দুর্নীতি ও অনিয়ম কমে আসবে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন টিআইবি’র ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য সুলতানা কামাল, উপদেষ্টা (নির্বাহী) অধ্যাপক সুমাইয়া খায়ের, পরিচালক (রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি) মোহাম্মদ রফিকুল হাসান।

গবেষণা পরিচালনা ও প্রতিবেদন উপস্থাপন করে প্রোগ্রাম ডেপুটি ম্যানেজার (রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি) শাম্মী লায়লা ইসলাম ও প্রোগ্রাম ম্যানেজার (রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি) নিহার রঞ্জন রায়।


রাইজিংবিডি/ঢাকা/৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯/নূর/হাকিম মাহি

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়