পাপিয়ার সঙ্গে ওয়েস্টিনের সম্পৃক্ততা পেলে ব্যবস্থা: দুদক সচিব

যুব মহিলা লীগের আলোচিত বহিষ্কৃত নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়ার অবৈধ সম্পদ অর্জনের সঙ্গে হোটেল ওয়েস্টিন কর্তৃপক্ষের সম্পৃক্ততা পেলে অনুসন্ধান করবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সোমবার (৯ মার্চ) দুপুরে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সংস্থাটির সচিব দিলোয়ার বখত এই তথ‌্য জানান।

পাপিয়ার কর্মকাণ্ডের সঙ্গে হোটেল ওয়েস্টিনের সম্পৃক্ততার বিষয় খতিয়ে দেখা হবে কিনা—এমন প্রশ্নের জবাবে দিলোয়ার বখত বলেন, ‘পাপিয়ার অবৈধ সম্পদ অর্জনের সঙ্গে হোটেলের সম্পৃক্ততার কোনো তথ্য পাওয়া গেলে আলাদা অনুসন্ধানের মাধ্যমে দেখা হবে।’

দুদক সচিব বলেন, ‘অভিযোগের অনুসন্ধানের স্বার্থে বিভিন্ন জায়গায় চিঠি দেওয়া হচ্ছে। তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। ৫৯টি ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বিএফআইউ-তে এই সংক্রান্ত চিঠি দেওয়া হয়েছে। হোটেল ওয়েস্টিনকেও চিঠি দেওয়া হয়েছে। হোটেল কর্তৃপক্ষ কিছু তথ্য দিয়েছে। তদন্তের স্বার্থেই এই মুহূর্তে বিস্তারিত বলা যাচ্ছে না।’

প্রসঙ্গত, গত ৮ মার্চ পাপিয়া ও তার স্বামীর অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিভিন্ন অভিযোগ অনুসন্ধানে বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিআইএফইউ)-এর প্রধান নির্বাহী এবং ৫৯টি দেশে-বিদেশি ব্যাংকে চিঠি দেয় দুদক। সংস্থাটির উপ-পরিচালক শাহীন আরা মমতাজের স্বাক্ষর করা আলাদা চিঠি ৫৯টি ব্যাংকের এমডি ও বিএফআইইউ বরাবর পাঠানো হয়।

এর আগে, গত ২ মার্চ পাপিয়ার অঢেল সম্পদের হিসাব মেলাতে হোটেল ওয়েস্টিন ও রিয়েল এস্টেট কোম্পানি ডোম-ইনোকে চিঠি দেয় দুদক। চিঠিতে হোটেল ওয়েস্টিন থাকা ও খাওয়ার বিলের কপি, বিভিন্ন সময় হোটেল বুকিংয়ের নথিপত্র এবং কার কার নামে রুম বুকিং করা হয়েছে, সেসব বিষয়-সংশ্লিষ্ট নথি চাওয়া হয়।

বিদেশে অর্থ পাচারসহ কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরীর বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক।  তাদের বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসা, জাল টাকার ব্যবসা ও বিভিন্ন অনৈতিক কার্যকলাপের মাধ্যমে কোটি টাকার সম্পদ পাচার এবং কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে।

পাপিয়ার বিরুদ্ধে রাজধানীর বিমানবন্দর ও শেরেবাংলা নগর থানায় পৃথক তিনটি মামলা করে র‌্যাপিড ‌অ‌্যাকশন ব‌্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।  গত ২৩ ফেব্রুয়ারি বিমানবন্দর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি এবং ২৪ ফেব্রুয়ারি শেরেবাংলা নগর থানায় অস্ত্র আইনে একটি ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে আরেকটি মামলা করা হয়েছে।

গত ২২ ফেব্রুয়ারি দুপুরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে জাল টাকা বহন ও টাকা পাচারের অভিযোগে পাপিয়া ওরফে পিউসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। বাকিরা হলো, পাপিয়ার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী ওরফে মতি সুমন, সাব্বির খন্দকার ও শেখ তায়্যিবা।

এরপর রাজধানীর ফার্মগেটের ইন্দিরা রোডে ও নরসিংদীতে বিলাসবহুল বাড়ি-গাড়িসহ তাদের (স্বামী-স্ত্রী) নামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ অর্থ-সম্পদের সন্ধান পায় র‌্যাব। র‌্যাবের অভিযানে ফার্মগেটে ইন্দিরা রোডে এ দম্পতির বাসা থেকে পিস্তল, গুলি ও গুলির ম্যাগজিন, বিদেশি মদ, ৫৮ লাখ টাকা, ৫টি পাসপোর্ট, ৩টি চেক, বেশ কিছু বিদেশি মুদ্রা ও বিভিন্ন ব্যাংকের ১০টি এটিএম কার্ড উদ্ধার করা হয়।


ঢাকা/এমএরহমান/হক