ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

স্বামীসহ পাপিয়া ফের ১৫ দিনের রিমান্ডে

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:৪৩, ১১ মার্চ ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
স্বামীসহ পাপিয়া ফের ১৫ দিনের রিমান্ডে

যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী শামিমা নূর পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরীর পৃথক তিন মামলায় পাঁচ দিন করে ১৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

বুধবার ঢাকার পৃথক দুই মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রিমান্ডের আদেশ দেন।

ঢাকা মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবব্রত বিশ্বাস বিমানবন্দর থানার দায়ের করা বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় ৫ দিন এবং আরেক মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাফুজ্জামান আনছারী বিশেষ ক্ষমতা ও অস্ত্র মামলায় ৫ দিন করে ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

বিমানবন্দর থানার মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা র‌্যাব-১ এর সহকারী পুলিশ সুপার মো. সালাউদ্দিন পাপিয়া, স্বামী সুমন চৌধুরী দুই সহযোগী সাব্বির খন্দকার ও শেখ তাইবা নূরের ১০ দিন করে রিমান্ড আবেদন করেন। প্রথমে এ মামলার রিমান্ড শুনানি হয়।

রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, পাপিয়া ও তার স্বামীকে দেশীয় ও বিদেশি মুদ্রার উৎস সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেনি। পাপিয়া, সুমন ও সাব্বির তাইবার সহযোগিতায় ও পরস্পর যোগসাজসে জ্ঞাতসারে জাল মুদ্রা বাজারজাত করার উদ্দেশ্যে বহন, বিপুল পরিমাণ সংঘবদ্ধ অপরাধলব্ধ অর্থপাচারের উদ্যোগ গ্রহণ করে অপরাধ করেছে মর্মে সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে।

আসামিদের নাম-ঠিকানা যাচাই, জাল টাকাসহ বিপুল পরিমাণ অবৈধ অর্থ ও বৈদেশিক টাকার উৎসের অনুসন্ধান, জাল টাকা তৈরিতে এবং দেশের অর্থপাচারের কাজে জড়িত সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের সদস্যদের সনাক্তকরণ, অবস্থান নির্ণয় ও গ্রেপ্তার, অপরাধ জগতে আসার কারণ এবং পেছনের শক্তির সন্ধান, অবৈধ মাদক ও অস্ত্রের ব্যবহার, চোরাচালান, অর্থের বিনিময়ে জমির দখল-বেদখল, অনৈতিক ব্যবসাসহ নানাবিধ অপরাধমূলক কাজের তথ্য-উপাত্ত উৎঘাটন ও যাচাই-বাছাইয়ের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করেন তদন্ত কর্মকর্তা।

সাব্বির খন্দকার ও শেখ তাইবা নূর কারাগারে রয়েছে। এদিন তাদের আদালতে হাজির করা হয়নি। এজন্য আদালত তাদের রিমান্ড শুনানির জন্য রোববার দিন ধার্য করেন। পাপিয়া এবং তার স্বামীর ৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এ সময় তাদের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। এরপর শেরেবাংলা নগর থানায় দায়ের করা অস্ত্র ও বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় রিমান্ড শুনানি হয়।

অস্ত্র আইনের মামলায় পাপিয়া ও তার স্বামীর রিমান্ড আবেদন করেন র‌্যাব-১ এর এসআই আরিফুজ্জামান। রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, আসামিরা নরসিংদী জেলায় একটি সংঘবদ্ধ অপরাধ চক্র/দল গঠন করে অবৈধ অস্ত্রের ব্যবসা, মাদবদ্রব্য চোরাচালান, অর্থের বিনিময়ে জমির দখল-বেদখল, অনৈতিক ব্যবসাসহ নানাবিধ অপরাধমূলক কাজ করে আসছিল। তারা দীর্ঘদিন ধরে অস্ত্রের মুখে সাধারণ জনগণকে জিম্মি করে ভূমি দখল, বেদখল, অনৈতিক ব্যবসাসহ নানাবিধ অপরাধমূলক কাজ করে আসছিল। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তারা বিপুল পরিমাণ অবৈধ ধন সম্পদের মালিক হয়। জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা বিদেশি পিস্তল ও গুলি নিজেদের কাছে রাখা সংক্রান্ত কোনো বৈধ কাগজ দেখাতে পারেনি। তারা অস্ত্রের প্রকৃত নম্বর টেম্পারিং করে বা অস্ত্রের নম্বর ঘষামাজা করে অন্যান্য ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করে মর্মে জানা যায়।

আসামিরা কিভাবে বিদেশি পিস্তল ও গুলি সংগ্রহ করেছে, বিদেশি পিস্তল কিভাবে ক্রয়-বিক্রয় করে থাকে, পিস্তল কোথায় কি ধরনের কাজে ব্যবহৃত হয়, পিস্তল দিয়ে গুলি করা হয়েছিল কি না, কতদিন পূর্বে  ব্যবহার করা হয়েছিল ইত্যাদি তথ্য জানার জন্য, বিদেশি পিস্তল চোরাচালানের মাধ্যম/রুট এবং এই সংঘবদ্ধ চোরাচালান চক্রের সদস্যদের সনাক্তকরণ ও গ্রেপ্তাসহ মূল রহস্য উদঘাটনের জন্য এ দুই আসামির ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করেন তদন্ত কর্মকর্তা।

বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় র‌্যাব-১ এর এসআই খোরশেদ আলম আসামিদের বাসা থেকে যে বিদেশি মদ উদ্ধার করা হয়েছে সেই মদ কিভাবে বিদেশ থেকে আনে, কার কাছে বিক্রি করে, চোরাচালানের রুট/মাধ্যম এবং এই সংঘবদ্ধ চোরাচালান চক্রের সদস্যদের সনাক্তকরণ ও গ্রেপ্তারের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করেন। আদালত দুই জনের পাঁচ দিন করে ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি পাপিয়া এবং তার স্বামী এ তিন মামলায় ৫ দিন করে ১৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। তাদের দুই সহযোগীর এক মামলায় ৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

গত ২২ ফেব্রুয়ারি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে দেশত্যাগের সময় পাপিয়াসহ আসামিদের গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।

 

ঢাকা/মামুন/জেনিস/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়