মাদকে ভাসছে উত্তর বাড্ডা
![মাদকে ভাসছে উত্তর বাড্ডা মাদকে ভাসছে উত্তর বাড্ডা](https://cdn.risingbd.com/media/imgAll/2019October/bg/Badda_Map20191003191529.jpg)
মাদকে ভাসছে রাজধানীর উত্তর বাড্ডা এলাকা। সহজেই মাদকদ্রব্য পাওয়ায় অনেক তরুণ-তরুণী বিপথগামী হয়ে পড়েছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন।
সরেজমিন গিয়ে জানা গেছে, স্থানীয় হোসেন মার্কেট সংলগ্ন এলাকা ও আশপাশে বিভিন্ন গ্রুপ গোপনে মদ-গাঁজা, হেরোইন ও ইয়াবা বিক্রি করছে। এর মধ্যে ইয়াবার বিস্তার সবচেয়ে বেশি ঘটেছে।
উত্তর বাড্ডা এলাকায় চিহ্নিত প্রভাবশালী ‘দুই ভাই গ্রুপ’ মিলে হোসেন মার্কেটের সামনে চারতলা একটি বাড়িতে ইয়াবার রমরমা ব্যবসা করছে বলে অভিযোগ দীর্ঘদিনের। চারতলা এই বাড়িটিকে তারা ইয়াবা বিক্রির নিরাপদ স্থানে পরিণত করেছেন। বাড়িটির নিচতলায় ইয়াবা বিক্রি করা হচ্ছে। মাদকাসেবী ক্রেতা এলে তারা বাইরে বের হয় এবং ইয়াবা বিক্রি করে। সাংকেতিক ভাষা হিসেবে তারা কুকুর, বিড়াল এমনকি গরুর ডাকও ব্যবহার করে। দিনের বেলা মাদকাসক্তদের আনাগোনা তেমন না থাকলেও সন্ধ্যা হলে বেড়ে যায়। বাসার ভেতর রাতে চলে জুয়ার আসর।
হোসেন মার্কেটের একজন ব্যবসায়ীর অভিযোগ, এদের (গ্রুপের) সঙ্গে অসাধু কতিপয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যের সখ্য রয়েছে। মাদক ব্যবসা, মাদকসেবীদের উৎপাত ও এহেন কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ কেউ প্রতিবাদ করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যের দিয়ে ভয় দেখানো হয়।
স্থানীয় ভুক্তভোগীরা এই মর্মে অভিমত পোষণ করেছেন, বাড়িটির দিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারি করা দরকার। এতে ঘটনার সত্যতা বেরিয়ে আসবে।
স্থানীয়রা জানান, উত্তর বাড্ডা এলাকায় হোসেন মার্কেট ও আশপাশে মাদ্রাসা, এতিমখানাসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা সহজে ইয়াবা পাওয়ায় মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে যা উদ্বেগজনক। গত ২৩ সেপ্টেম্বর বাড্ডা লিংক রোডে ইয়াবার দাম কম-বেশি নিয়ে হাসান গ্রুপ ও রাব্বি গ্রুপের মধ্যে মারামারি হয়। পুলিশ আসার আগেই সবাই সরে পড়ে। চলতি মাসে হাসানের ভাগ্নে সুহাদকে ৩০ টি ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সদস্যরা। মাদক বিক্রির প্রতিবাদ করায় দিদার নামের একজন বাসিন্দাকে পুলিশ দিয়ে হয়রানি করা হয়।
অভিযোগ আছে, শুধু এই বাড়ি নয়, উত্তর বাড্ডার কিছু বাড়িতে এ ধরনের মাদকদ্রব্য বিক্রি ও জুয়ার আসর বসে। অলিগলিতে মাদক কারবারিদের এজেন্টরা ঘোরাফেরা করে। তারা মোবাইল ফোনে যোগাযোগের মাধ্যমে ইয়াবা বিক্রি করছে। গাঁজা ও বিদেশি মদ এই এলাকায় বিক্রি হয় যার নেপথ্যে আছে প্রায় ১৫ টিগ্রুপ। এদের মূল হোতারা সব সময় গোপনেই থেকে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে বাড্ডা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা মাদকবিরোধী অভিযান প্রতিনিয়ত পরিচালনা করছি। তারপরও যদি মাদকের ব্যবহার হয়ে থাকে তাও নির্মূল করা হবে। আপনার কাছে তথ্য থাকলে দিন ব্যবস্থা নেব। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যের তথ্য-প্রমাণ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
ঢাকা/মাকসুদ/সাইফ
রাইজিংবিডি.কম