ঢাকা     বুধবার   ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ৩ ১৪৩১

প্রেমিকের সঙ্গে অন্তঃসত্ত্বা তরুণীর বিয়ে দিলো পুলিশ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২২:০০, ৯ জুলাই ২০২১   আপডেট: ২২:১৩, ৯ জুলাই ২০২১
প্রেমিকের সঙ্গে অন্তঃসত্ত্বা তরুণীর বিয়ে দিলো পুলিশ

প্রতীকী ছবি

প্রেম ও পারিবারিক আয়োজনের পরও বিয়েতে অস্বীকৃতি, অবশেষে অন্তঃসত্ত্বা মেয়ের বিয়ের ব্যবস্থা করলো পুলিশ। 

শুক্রবার (৯ জুলাই) দুপুরে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।  

পুলিশ জানায়, মেয়েটির বাড়ি জামালপুরের সরিষাবাড়ি।  দীর্ঘ আট বছরের প্রেমের সম্পর্ক টাঙ্গাইলের ধনবাড়ি থানা এলাকার এক যুবকের সাথে।  সম্পর্কের সূত্র ধরে পারিবারিকভাবেও জড়িয়ে পড়ে দুই পরিবার।  পরবর্তী সময়ে পারিবারিকভাবেই মেয়েটির সাথে বিয়ে ঠিক হয়। বিয়ের খরচ যোগাতে জমিও বিক্রি করে দেয় মেয়েটির বাবা।  বিয়ের আশ্বাসে এবং ছেলেটির পীড়াপিড়িতে ছেলেটির সাথে শারীরিক সম্পর্কে জড়াতে বাধ্য হয় মেয়েটি। এক পর্যায়ে মেয়েটি অন্তসত্ত্বা হয়ে পড়ে। মেয়েটির সাথে বেশ কিছুদিন সম্পর্কের পর ছেলেটি বিয়ে নিয়ে মেয়েটির সাথে গড়িমসি করতে থাকে। বিয়ের তারিখ পেছাতে থাকে। একদিন জানিয়ে দেয়, মেয়েটিকে সে বিয়ে করবে না। বিয়ের জন্য বিভিন্ন জায়গায় দেনদরবার করে মেয়েটি ও তার পরিবার।  এতে করে দুই পরিবারের মধ্যে সম্পর্ক আরও খারাপ হয়। ছেলের পরিবারও এক পর্যায়ে ছেলেটির পক্ষে অবস্থান নেয়। ছেলেটির পরিবার অত্যন্ত প্রভাবশালী। তার বড় ভাই এলাকার প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধিও। বাচ্চা নিয়ে মেয়েটি অসহায় হয়ে পড়ে। একপর্যায়ে মেয়েটির পরিবারও এই লড়াইয়ে তাকে সমর্থন দিতে অস্বীকৃতি জানায়। একা হয়ে পড়ে মেয়েটি। আর কোনো উপায় না দেখে বাংলাদেশ পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্সকে জানায়। পুলিশের সহযোগিতা চায় সে। ছেলে বা তার পরিবারের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করতে অস্বীকৃতি জানায়। সে চায় তাকে বিয়ে করে সম্মানজনকভাবে ঘরে তুলে নেওয়া হোক। 

পুলিশ আরও জানায়, বার্তাটি গ্রহণ করে মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং টাঙ্গাইলের ধনবাড়ি থানার ওসি মো. চান মিয়ার কাছে পাঠিয়ে এ বিষয়ে তাকে উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা দেয়।  নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে, ওসি ধনবাড়ি ছেলেটির পরিবারের সাথে যোগাযোগ করেন। স্থানীয় অন্যান্য জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদেরকে সম্পৃক্ত করেন। ওসি ধনবাড়ি মো. চান মিয়ার অসাধারণ উদ্যোগ ও আয়োজনে এলাকার ব্যক্তিবর্গ ও অন্যান্য জনপ্রতিনিধিদের সহায়তায় ছেলে ও মেয়ে উভয় পরিবারের সম্মতিতে ৮ জুন বিয়ে হয়। 

বিয়ে হওয়ার পর মেয়েটির পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, ‘সব আশা ভরসা যখন শেষ হয়ে গেছে, বাঁচার ইচ্ছা পর্যন্ত শেষ হয়ে গিয়েছিল, মানসিক ডিপ্রেশনে চলে গিয়েছিলাম, সেই মুহূর্তে আপনারা আমাকে নতুনভাবে বাঁচার অনুপ্রেরণা দিয়েছেন।  একজন সাধারণ মেয়ের পাশে থেকে, আপনাদের একান্ত প্রচেষ্টায় আমার স্বপ্ন পূরণ হলো।

/মাকসুদ/এসবি/ 

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়