ঢাকা     রোববার   ১৩ এপ্রিল ২০২৫ ||  চৈত্র ৩০ ১৪৩১

যেভাবে জানা যায় নারায়ণগঞ্জের জঙ্গি আস্তানার খবর

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:৩৮, ১২ জুলাই ২০২১   আপডেট: ১৯:৩৮, ১২ জুলাই ২০২১
যেভাবে জানা যায় নারায়ণগঞ্জের জঙ্গি আস্তানার খবর

গত ৭ জুলাই রাজধানীর পল্লবীতে শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামের পাশের নির্মাণাধীন ভবনের সামনে থেকে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের তিন সক্রিয় সদস্যকে বিস্ফোরক দ্রব্যসহ গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারা হলো— সাব্বির আহম্মেদ, রবিউল ইসলাম এবং নাঈম মিয়া। ওই দিন কাউছার মিয়া নামের আরেকজন পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে কৌশলে পালিয়ে যায়। ৮ জুলাই গ্রেপ্তার ওই তিন আসামির চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। সাব্বির আহম্মেদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ১১ জুলাই বেলা দেড়টার দিকে ঢাকার কেরানীগঞ্জ থানাধীন রুহিতপুর থেকে কাউছার মিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে যাত্রাবাড়ী থেকে আব্দুল্লাহ আল মামুনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকেই নারায়ণগঞ্জের জঙ্গি আস্তানার খবর পায় পুলিশ।

সোমবার (১২ জুলাই) কাউছার মিয়া এবং আব্দুল্লাহ আল মামুনকে আদালতে হাজির করে পল্লবী থানায় দায়ের করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের বোম ডিসপোজাল ইউনিটের এসআই (নিরস্ত্র) গোলাম মর্তুজা। ওই রিমান্ড আবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

এদিকে, ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ধীমান চন্দ্র মন্ডল তাদের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

আরো পড়ুন:

রিমান্ড আবেদনে তদন্ত কর্মকর্তারা বলেন, ‘আসামিরা নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের সক্রিয় সদস্য। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কাউছার মিয়া জানায়, নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর থানাধীন কাজীপাড়া এলাকায় তাদের সংগঠনের একটি আস্তানা আছে। আব্দুল্লাহ আল মামুন জানায়, নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজারের নোয়াগাঁও গ্রামের মিয়া সাবের বাড়ির মসজিদের পাশে তার থাকার ঘরে তিনটি শক্তিশালী আইইডি এবং বিপুল পরিমাণ বোমা তৈরির সরঞ্জাম আছে।’

তাৎক্ষণিকভাবে তদন্ত সংস্থা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করে। পরে সঙ্গীয় অফিসার ও ফোর্স, সোয়াট সদস্যসহ নারায়ণগঞ্জ থানা পুলিশের সহায়তায় আড়াইহাজারের নোয়াগাঁও গ্রামের মিয়া সাবের বাড়ির মসজিদের পাশে আব্দুল্লাহ আল মামুনের থাকার ঘরে অভিযান চালিয়ে তিনটি শক্তিশালী বোমা, একটি মোটরসাইকেল ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম জব্দ করা হয়। পরবর্তী সময়ে কাউছার মিয়ার তথ‌্য অনুযায়ী বন্দর থানাধীন কাজী পাড়ায় অভিযান চালানো হয়। সেখান থেকে বিপুল পরিমাণ বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।

রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, ‘আসামিরা উগ্র জঙ্গিবাদী সংগঠনের সক্রিয় সদস্য। কাউছার মিয়া নব্য জেএমবির সামরিক শাখার প্রশিক্ষক এবং বোমা তৈরির অন্যতম কারিগর। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছে, এজাহারনামীয় অন্যতম আসামি মাহাদী হাসান জনের নির্দেশে তারা দীর্ঘদিন ধরে জঙ্গি সংগঠনের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল।’

পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তার, তাদের কাছে থাকা বিস্ফোরক জাতীয় পদার্থ ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম জব্দ এবং বাংলাদেশের জঙ্গিবাদের মূল হোতাদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে আসামিদের ১০ দিন রিমান্ড মঞ্জুরের আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা।

আদালতে আসামিদের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না।

এ মামলায় রিমান্ডে থাকা সাব্বির আহম্মেদ বোমা তৈরির অন্যতম কারিগর এবং সামরিক শাখার ময়মনসিংহ অঞ্চলের কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিল। সে তার সহযোগীদের নিয়ে ময়মনসিংহ, জামালপুর, শেরপুর, টাঙ্গাইল ও কুড়িগ্রামসহ ঢাকা শহরে দীর্ঘদিন ধরে সংগঠনের সদস্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যে দাওয়াতি কার্যক্রম চালাচ্ছিল। রবিউল ইসলাম ২০১৬ সাল থেকে জঙ্গি সংগঠনে সক্রিয়। নাইম মিয়া এ বছর উগ্রবাদী জঙ্গি সংগঠনে যোগ দেয়।

ঢাকা/মামুন/রফিক

সম্পর্কিত বিষয়:


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়