জেএমবির ২ সদস্য রিমান্ডে
নারায়ণগঞ্জের জঙ্গি আস্তানার সন্ধান দেওয়া নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন নব্য জেএমবি দুই সদস্যের আবার দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
রোববার (১৮ জুলাই) পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে দুই আসামিকে আদালতে হাজির করে পল্লবী থানার সন্ত্রাস বিরোধ আইনের মামলায় আবার ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের বোম ডিসপোজাল ইউনিটের এসআই (নি.) গোলাম মর্তুজা।
আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতিকুল ইসলামের আদালত তাদের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এরা হলেন- কাউছার মিয়া ওরফে ওসামা এবং আব্দুল্লাহ আল মামুন ওরফে ডেভিড কিলার।
গত ৭ জুলাই রাজধানীর পল্লবীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামের পাশের নির্মাণাধীন ভবনের সামনে থেকে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের তিন সক্রিয় সদস্যকে বিস্ফোরক দ্রব্যসহ গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরা হলেন- সাব্বির আহম্মেদ ওরফে বামসি ব্যারেক ওরফে মেজর খালিদ, রবিউল ইসলাম ওরফে ওসমান এবং নাঈম মিয়া। ওইদিন কাউছার মিয়া ওরফে ওসামা নামে এক আসামি পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে কৌশলে পালিয়ে যায়।
এদিকে, ৮ জুলাই গ্রেপ্তার ওই তিন আসামির চারদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এরপর তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। রিমান্ডে সাব্বির আহম্মেদের তথ্যের ভিত্তিতে ১১ জুলাই বেলা দেড়টার দিকে ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ থানাধীন রুহিতপুর এলাকা থেকে কাউছার মিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাৎক্ষণিক জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, মামলার ঘটনার সাথে জড়িত আব্দুল্লাহ আল মামুন ওরফে ডেভিড কিলার বর্তমানে উত্তর যাত্রাবাড়ীতে অবস্থান করছে। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিকেল ৩ টা ২০ মিনিটের দিকে যাত্রাবাড়ী থেকে আব্দুল্লাহ আল মামুনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই নারায়ণগঞ্জের জঙ্গি আস্তানার খবর পায় পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কাউছার মিয়া নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর থানাধীন কাজীপাড়া এলাকায় তাদের সংগঠনের একটি আস্তানা রয়েছে বলে জানায়। আর আব্দুল্লাহ আল মামুন জানায়, নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজারের নোয়াগাঁও গ্রামের মিয়াছাবের বাড়ির মসজিদের পাশে তার থাকার ঘরে তিনটি শক্তিশালী আইইডি এবং বিপুল পরিমাণ বোমা তৈরির সরঞ্জাম রয়েছে।
পরে আড়াইহাজারের নোয়াগাঁও গ্রামের মিয়াছাবের বাড়ির মসজিদের পাশে আব্দুল্লাহ আল মামুনের থাকার ঘরে অভিযান চালিয়ে তিনটি শক্তিশালী বোমা, একটি মোটরসাইকেল ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে কাউছার মিয়ার দেখানো মতে বন্দর থানার কাজীপাড়ায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। সেখান থেকে বিপুল পরিমাণ বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।
১২ জুলাই কাউছার মিয়া এবং আব্দুল্লাহ আল মামুনের ৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এ মামলায় আসামি সাব্বির আহম্মেদ বোমা তৈরির অন্যতম কারিগর এবং সামরিক শাখা ময়মনসিংহ অঞ্চলের আঞ্চলিক কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিল। সে তার সহযোগী গ্রেপ্তারকৃত ও পলাতক আসামিদের নিয়ে ময়মনসিংহ, জামালপুর, শেরপুর, টাঙ্গাইল ও কুড়িগ্রামসহ ঢাকা শহরে দীর্ঘদিন যাবৎ তাদের সংগঠনের সদস্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যে দাওয়াতি কার্যক্রম পালন করে আসছিল। রবিউল ইসলাম ২০১৬ সাল থেকে জঙ্গি সংগঠনের সক্রিয়ভাবে কার্যক্রম করে আসছে এবং নাইম মিয়া এ বছর উগ্রবাদী জঙ্গি সংগঠনে যোগদান করে মর্মে পুলিশ জানায়।
১৩ জুলাই এ তিন আসামিকে চারদিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়। বর্তমানে তারা কারাগারে রয়েছে।
/মামুন/এসবি/