পরীমনি মাদকে, রাজ গ্রেপ্তার পর্নোগ্রাফি মামলায়
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম
ফাইল ছবি
চিত্রনায়িকা পরীমনির বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ও তার বন্ধু নজরুল ইসলাম ওরফে রাজের বিরুদ্ধে মাদক ও পর্নোগ্রাফি আইনে দুটি মামলা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) বিকেলে উত্তরার র্যাব হেড কোয়ার্টার্সের সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান আইন ও গণমাধ্যম শাখার প্রধান কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
পরীমনি ও রাজকে বুধবার (৪ আগস্ট) তাদের বাসা থেকে আটক করে র্যাব।
খন্দকার মঈন বলেন, ‘পরীমনি ২০১৬ সাল থেকে নিয়মিত মাদক সেবন করতেন। তার বাসা থেকে যেসব মাদক পাওয়া গেছে তা তিনি নিজেই সেবন করতেন বলে স্বীকার করেছেন। তার মাদক সেবনের বৈধ কাগজপত্র আছে কি না তা এখনও জানা যায়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃত দুজনের বাসায় মাদকসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালিত হতো। বসানো হতো মাদকের আসর থেকে ডিজে পার্টি। ডিজে পার্টিতে গভীর রাত অবধি মাদক সেবনসহ অসামাজিক কার্যকলাপ হতো। প্রতিটি পার্টিতে ১৫ থেকে ২০ জন করে সদস্য থাকতো। পার্টিতে অংশগ্রহণকারীদের তারাই মদ কিংবা চাহিদামতো সুন্দরী তরুণী সরবরাহ করতো। অনেক সময় তারা বিদেশেও এ ধরনের পার্টির আয়োজন করেছে। যেসব পার্টিতে এদেশের তরুণীদেরও নিয়ে যাওয়া হতো। তবে এরকম কোনো তরুণী পাচারের শিকার হয়েছে কি না সে বিষয়েও আমরা তদন্ত করব।’
তিনি বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও তারা পরিকল্পনা মাফিক অগ্রসর হয় এবং নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করে। এজন্য তারা বিশেষ করে গ্রেপ্তারকৃত নজরুল ইসলাম ওরফে রাজ বিভিন্ন কনটেন্ট ব্যবহার করতেন। রাজের মাল্টিমিডিয়ার কার্যালয়টি অনৈতিক কাজে ব্যবহৃত হতো। সেই অবৈধ অর্থ দিয়ে তিনি নামে-বেনামে বিভিন্ন ব্যবসা, আমদানি-রপ্তানি, ঠিকাদারি, ওষুধ ব্যবসায় বিনিয়োগ করেছেন। এসব অর্থ সম্পর্কে আমাদের তথ্য দিয়েছেন রাজ। ডিজে পার্টিতে কারা কারা অংশগ্রহণ করতেন এবং বিভিন্নভাবে অনৈতিক কাজে লিপ্ত হতেন এ সংক্রান্ত আমরা বিভিন্ন তথ্য পেয়েছি। এ ধরনের তথ্য উদ্দেশ্য প্রণোদিত কি না সেটা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। পরবর্তীতে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমরা তদন্ত করছি। তদন্তের স্বার্থে এখন আমরা আপনাদের সব বলছি না। পার্টিতে কারা কারা অংশগ্রহণ করতেন তাদের সম্পর্কে আমরা কিছু তথ্য পেয়েছি। তবে তথ্যগুলো আসামিরাই দিয়েছে। এ কারণে একটু যাচাই-বাছাই করা প্রয়োজন। পরবর্তীতে তদন্ত করে আমরা আপনাদের বিস্তারিত বলতে পারব।’
অপর এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘রাজ একজন প্রতারকও। পাশাপাশি আমরা আরও কিছু ব্যক্তিগত তথ্য পেয়েছি। গ্রেপ্তারকৃত মিশু তার ব্যাপারে আমাদের সব ধরনের তথ্য দিয়েছে। রাজের বিরুদ্ধে মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনের পাশাপাশি আমরা কিছু ডিজিটাল কনটেন্ট পেয়েছি। সে পর্নোগ্রাফির সঙ্গেও জড়িত। আর এ কাজে তিনি নিজের মাল্টিমিডিয়া অফিসকে ব্যবহার করতেন। এ কারণে ওই অফিস তালা মেরে রাখা হয়েছে। এ সম্পর্কিত মামলা প্রক্রিয়াধীন।
‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আমরা জেনেছি, নজরুল ইসলাম রাজের ২০১৪ সাল পর্যন্ত নিজের নামে কোনো মাল্টিমিডিয়া ছিল না। সে নামে-বেনামে ভিন্ন ভিন্ন মিডিয়ার সঙ্গে যুক্ত ছিল। ২০১৮ সালে তিনি মাল্টিমিডিয়ার কার্যক্রম শুরু করেন। যার মাধ্যমে তিনি ইতোমধ্যে সিনেমা প্রযোজনা করেছেন। পাশাপাশি রাজের ১৪টি ব্যাংক একাউন্টের সন্ধান মিলেছে। যেসব একাউন্টে ইতোমধ্যে ৯কোটি টাকা লেনদেনের তথ্য মিলেছে।
‘পরীমনি ও রাজকে পৃথক মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হবে। প্রয়োজনে তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন।”
মাকসুদ/এমএম/সনি