ঢাকা     শুক্রবার   ২০ ডিসেম্বর ২০২৪ ||  পৌষ ৫ ১৪৩১

জুলহাস-তনয় হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ সাজার অপেক্ষায় স্বজনরা

মামুন খান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৫৭, ৩০ আগস্ট ২০২১   আপডেট: ১২:০১, ৩০ আগস্ট ২০২১
জুলহাস-তনয় হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ সাজার অপেক্ষায় স্বজনরা

রাজধানীর কলাবাগানে জুলহাস মান্নান ও তার বন্ধু মাহবুব রাব্বী তনয় হত্যা মামলায় রায় ঘোষণার দিন মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) ধার্য রয়েছে। ঢাকার সন্ত্রাস বিরোধ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমানের আদালত এ মামলার রায় ঘোষণা করবেন।

২৩ আগস্ট রাষ্ট্রপক্ষ এবং আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের এ তারিখ ধার্য করেন আদালত।

এদিকে রায়ে আসামিদের সর্বোচ্চ সাজার প্রত্যাশায় জুলহাস মান্নান এবং তনয়ের স্বজনরা। রাষ্ট্রপক্ষ বলছে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। তাই তারা আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা আশা করছেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবীরা বলছেন, রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি। তাই তারা খালাস পাবেন।

সাজা বা খালাস যাই হোক এর জন্য অপেক্ষা করতে হবে আগামিকাল মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত।

মামলার বাদী মিনহাজ মান্নান ইমন বলেন, ‘আমরা এ হত্যাকান্ডের ন্যায়বিচার চায়। যে হত্যাকাণ্ডটা ঘটানো হয়েছে তা জঘন্য অপরাধ। দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী প্রকৃত অপরাধীদের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাশা করছি।’

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী গোলাম ছারোয়ার খান (জাকির) বলেন, ‘রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে পেরেছি। কাজেই আশা করছি, আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড দিবেন আদালত।’

আসামি আরাফাত রহমানের আইনজীবী এম এ বি এম খায়রুল ইসলাম (লিটন) বলেন, ‘রাষ্ট্রপক্ষ এ মামলায় ২৪ জনের সাক্ষী হাজির করেন। কোনো সাক্ষী আরাফাতের বিষয়ে কিছু বলেনি। এ মামলায় চার আসামি পলাতক। আর চারজন কারাগারে আছে। এদের মধ্যে এক আসামির আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আরাফাতের নাম আসে।’

তিনি বলেন, ‘আরাফাতের বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি ঘটনার আগে ওই এলাকায় রেকি করেছেন আর জঙ্গী সংগঠনের সদস্য। কেউ জঙ্গী হলে তো তার নাম সংগঠনে থাকবে। আমরা সেটা দেখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তা দেখায়নি। তিনি ঘটনার সাথে জড়িত নন। আশা করছি, তিনি খালাস পাবেন।’  

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ২৫ এপ্রিল রাজধানীর কলাবাগানের লেক সার্কাস রোডের বাড়িতে প্রবেশ করে ইউএসএইড কর্মকর্তা জুলহাস মান্নান ও তার বন্ধু থিয়েটারকর্মী মাহবুব তনয়কে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।

ওই ঘটনায় কলাবাগান থানায় জুলহাসের বড় ভাই মিনহাজ মান্নান ইমন হত্যা মামলা এবং সংশ্লিষ্ট থানার এসআই মোহাম্মদ শামীম অস্ত্র আইনে আরেকটি মামলা দায়ের করেন।

এরআগে ২০১৯ সালের ১২ মে মেজর জিয়াসহ আটজনের বিরুদ্ধে কলাবাগান থানায় দায়ের করা মামলায় আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের পরিদর্শক মুহম্মদ মনিরুল ইসলাম। গত বছরের ১৯ নভেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। মামলার বিচার চলাকালে আদালত ২৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।

মামলার আসামিরা হলেন-সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল হক ওরফে মেজর জিয়া (চাকরিচ্যুত মেজর), আকরাম হোসেন, সাব্বিরুল হক চৌধুরী, জুনাইদ আহমদ ওরফে মওলানা জুনায়েদ আহম্মেদ ওরফে জুনায়েদ, মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন, আরাফাত রহমান, শেখ আব্দুল্লাহ ও আসাদুল্লাহ।

আসামিদের মধ্যে প্রথম চারজন পলাতক রয়েছেন। অপর চারজন কারাগারে আছেন।

নিহত জুলহাস বাংলাদেশে নিযুক্ত প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজিনার প্রটোকল কর্মকর্তা ছিলেন। নিহত তনয় নাট্য সংগঠন লোক নাট্যদলের শিশু সংগঠন পিপলস থিয়েটারে জড়িত ছিলেন।

ঢাকা/মামুন/টিপু


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়