বিবিএ করে মাছের প্রজেক্টের আড়ালে ইয়াবা ব্যবসা, এরশাদুল গ্রেপ্তার
গ্রেপ্তার এরশাদুল হক
কক্সবাজারের ইয়াবার গডফাদার এরশাদুল হককে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। এ সময় তার কাছ থেকে ৩৩ হাজার পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়। এরশাদ উখিয়ায় মাছের প্রজেক্টের আড়ালে ইয়াবার ব্যবসা করছিলেন।
বুধবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর উত্তর কার্যালয়ের সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএনসি ঢাকা মেট্রো (উত্তর) উপ-পরিচালক রাশেদুজ্জামান।
তিনি বলেন, উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে প্রায় এক কোটি টাকা মূল্যের ইয়াবা জব্দ করা হয়। এরশাদ নিজেকে ধরা-ছোয়ার বাইরে রাখার জন্য বিমানে যাতায়াত করতেন এবং যোগাযোগের জন্য বিভিন্ন এনক্রিপটেড অ্যাপস ব্যবহার করেন। তার মোবাইল ফোন বিশ্লেষণ করে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। পরবর্তীতে অনুসন্ধানপূর্বক এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
রাশেদুজ্জামান বলেন, পাইকারি দরে ইয়াবা সংগ্রহের জন্য এরশাদুল নিজে মিয়ানমারে থাকা ডিলারদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করতো এবং নৌপথে মিয়ানমার থেকে ইয়াবা সংগ্রহের জন্য সে একাধিক রোহিঙ্গাকে ব্যবহার করতো। প্রায় এক মাস আগে এরশাদুলের ইয়াবা সিন্ডিকেট সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়। তার সাথে সক্ষতা তৈরির জন্য সোর্স নিয়োগ করা হয়।
তিনি বলেন, ২৪ অক্টোবর রমনা সার্কেলের পরিদর্শক তমিজ উদ্দিন মৃধা ক্রেতা সেজে ২ হাজার পিস ইয়াবা কেনার দেন-দরবার করার সময় সিন্ডিকেটের সহযোগী সদস্য হুমায়ুনকে তার স্ত্রীসহ ঢাকার দক্ষিণখান এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। হুমায়ুন ও তার স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদে এরশাদুলের অবস্থান সম্পর্কে জানা যায় এবং জিজ্ঞাসাবাদে হুমায়ুন জানায় এরশাদুল ইয়াবার একটি বড় চালান নিয়ে ঢাকায় অবস্থান করবে। প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত বিশ্নেষণ করে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে রাতে এরশাদুলকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর উত্তর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন
ব্যবসার কৌশল
গ্রেপ্তার এরশাদুল একটি সরকারি কলেজ থেকে বিবিএ সম্পন্ন করেছে বলে জানায় এবং সে নিজেকে কক্সবাজার জেলা ক্রিকেট টিমের সাবেক ক্যাপ্টেন বলে দাবি করে। উখিয়ায় একাধিক মাছের প্রজেক্ট রয়েছে। মাছের প্রজেক্টের আড়ালে সে ইয়াবার ব্যবসা করতো।
গ্রেপ্তার এরশাদুল মাছ পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত ট্রাকের মধ্যে বিশেষ কায়দায় ম্যাগনেট ব্যবহার করে ঢাকায় ইয়াবার বড় চালান নিয়ে আসতেন। এ কাজে তার একাধিক সহযোগী সদস্য রয়েছে। তবে সে এ সিন্ডিকেটের প্রধান।
এক প্রশ্নের জবাবে রাশেদুজ্জামান বলেন, এরশাদুল সরাসরি মিয়ানমারের ইয়াবার ডিলারদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতেন। নৌপথে অবৈধভাবে মিয়ানমারে যাতায়াত করা রোহিঙ্গা নাগরিকদের সহায়তায় ইয়াবার চালান আনতেন টেকনাফে। এরপর তা তিনি নির্ভরযোগ্য সোর্স ও বাহকের মাধমে ঢাকায় পাঠাতেন কখনো বাসে কখনো ট্রাকে। তিনি নিজে কখনো ইয়াবা বহন করতেন না।
ইয়াবার চালান ঢাকায় পাঠিয়ে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থাকতে নিজে ঢাকায় যাতায়াত করতেন প্লেনে। ঢাকা ও মিয়ানমারের ইয়াবা ডিলারদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য বিভিন্ন এনক্রিপটেড অ্যাপস ব্যবহার করতেন। তার মোবাইল ফোন বিশ্লেষণ করে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। জব্দ চালানের আগেও একাধিকবার ইয়াবার বড় চালান ঢাকার পাইকারি ব্যবসায়ীর কাছে সরবরাহ করেছেন। নিজে করতেন লেনদেন।
/মাকসুদ/সাইফ/