বাবার বুকে অশ্রুসিক্ত বাবুল আক্তারের ছেলে-মেয়ে
ছবি: রাইজিংবিডি
ডান হাত দিয়ে দুই ছেলে-মেয়ে বুকে আগলে রেখেছেন। বাম হাত স্ত্রীর হাতের সাথে রেখে ভরসা দিচ্ছেন। মাঝেমধ্যে বোনকেও আদর করছেন। যা দেখে সবাই বিমোহিত। এক পলক হলেও তাকিয়ে দেখছেন তাদের।
বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরাফাতুল রাকিবের আদালতে এমনই এক দৃশ্য দেখা গেছে। ওই ব্যক্তির নাম পুলিশের সাবেক এসপি বাবুল আক্তার।
এদিন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) প্রধান বনজ কুমার মজুমদারের দায়ের করা মামলায় বাবুল আক্তারকে আদালতে হাজির করা হয়। তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদনসহ সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ধানমন্ডি মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) রবিউল ইসলাম।
শুনানি শেষে আদালত প্রথমে তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করে। পরে তার এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়।
এদিকে এদিন বাবুল আক্তারের সাথে দেখা করতে আসেন স্ত্রী, ছেলে-মেয়ে, বোনসহ আত্মীয়-স্বজন। সকাল থেকে তারা আদালত প্রাঙ্গণে ছিলেন। দুপুর দুইটার দিকে রিমান্ড শুনানির আগে তাকে এজলাসে তোলা হয়। তাকে একটি বেঞ্চে বসিয়ে রাখা হয়। তখনও আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়নি। তার বামপাশে মেয়ে তাবাসসুম ও ছেলে আক্তার মাহমুদ মাহি, ডান পাশে বসে ছিলেন লাবনী আক্তার। আর পিছনে একটি বেঞ্চে বসে ছিলেন স্ত্রী।
উল্লেখ্য, মিতু হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার দুই মাস আগে বিয়ে করেন বাবুল আক্তার।
আদালতে তারা নিজেদের মধ্যে কথাবার্তা বলেন। কথা বলার পুরোটা সময় ছেলে-মেয়ে বাবুল আক্তারের বুকেই ছিলেন। বাবুল আক্তার মাঝে মধ্যে ছেলে-মেয়ের মুখে হাত বুলিয়ে দেন। তারাও বাবার বাবার বুকে চুপটি করে বসে ছিল। এরই মধ্যে আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়। তারপক্ষে আইনজীবীরা শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষ থেকেও শুনানি করা হয়।
তবে ওইদিকে তেমন একটা লক্ষ্য ছিল না বাবুল আক্তারের। তিনি পরিবারের সাথে সময় কাটাচ্ছিলেন। বাবার সাথে ছেলে-মেয়ের এমন মমতাময়ী দৃশ্য সবাই উঁকি দিয়ে দেখছিলেন। তারাও সবার দিকে তাকাচ্ছিলেন। মেয়ে তাবাসসুম এক পর্যায়ে বাবার কোলে শুয়ে পড়েন। বাবা তাকে পরম মমতায় আদর করেন। এরই মধ্যে শুনানি শেষে হয়। তার এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়।
এবার পালা বিদায়ের। ছেলে-মেয়েকে আদর করে বিদায় নিচ্ছিলেন বাবুল। এতক্ষণ স্বাভাবিক থাকা বাবুল আক্তারের চোখ ভিজে আসে। তিনি কান্না করে দেন। এসময় ছেলে-মেয়েকে বুকে জড়িয়ে কাঁদেন বাবুল আক্তার। ৭ম শ্রেণিতে পড়ুয়া বাবার সমান লম্বা ছেলে মাহি এবার তাকে সান্ত্বনা দেন। এরপর বাবুল আক্তারকে নিয়ে যাওয়া হয় সিএমএম আদালতের কারাগারের উদ্দেশে। তারাও বাবার সাথে নামেন। বাবাকে নিয়ে যাওয়ার পর কান্নায় ভেঙে পড়ে মাহি ও তাবাসসুম। এসময় বাবুলের দ্বিতীয় স্ত্রীকেও কাঁদতে দেখা যায়।
ঢাকা/মামুন/এনএইচ