ঢাকা     শনিবার   ০৬ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ২২ ১৪৩১

মনজিল হত্যা মামলা: বাড়ির নিরাপত্তাকর্মীর সাক্ষ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:০৫, ১৬ আগস্ট ২০২৩  
মনজিল হত্যা মামলা: বাড়ির নিরাপত্তাকর্মীর সাক্ষ্য

ছয় বছর আগে রাজধানী বাড্ডার আফতাবনগরে নিজ ফ্ল্যাটে ও লেভেল পড়ুয়া একেএম মনজিল হককে হত্যা করা হয়। এই হত্যা মামলায় বাড়ির নিরাপত্তাকর্মী মো. আবুল কালাম সাক্ষ্য দিয়েছেন।

বুধবার (১৬ আগস্ট) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের আদালতে সাক্ষ্য দেন আবুল কালাম।

সাক্ষ্যে আবুল কালাম জানান, ২০১৭ সালের ১১ ডিসেম্বর আফতাব নগরে (ব্লক-বি, রোড-৩, ৫ নমর বাড়ি) দারোয়ান হিসেবে কর্মরত ছিলেন তিনি। ওইদিন সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১০টার দিকে চার জন লোক আসে। তারা বলেন, মনজিল ভাইয়ের বাসায় যাবেন। আমি জিজ্ঞাসা করি, মনজিল কি হয়? ইয়াসিন তখন বলেন, মনজিল তার সৎভাই। এরপর আমি গেট খুলে দিলে তারা মনজিলের বাসায় যান।

সাক্ষ্যে আবুল কালাম বলেন, কিছুক্ষণ পর একজন মহিলা আসে। তার নাম শারমিন আক্তার নিশা। ওই মহিলা প্রায়ই মনজিলের বাসায় আসতেন। শারমিন আক্তার  ৬ষ্ঠ তলায় যাওয়ার কিছুক্ষণ পর চিৎকার দিয়ে বলেন, মনজিল ভাইকে মেরে ফেলেছে, মনজিল ভাইকে মেরে ফেলেছে। আমি দৌড় দিয়ে সিঁড়িতে উঠি। তখন দেখি চারজন সিঁড়ি দিয়ে নামছে। এদের মধ্যে দুজন যে কাপড় পড়ে উঠেছিল সেই কাপড় পরিবর্তন করে নামে। একজনের সাথে কালো রংয়ের একটি ব্যাগ ছিল। সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় একজন আমাকে গলা চিপে ধরে বলে ‘একজনকে মেরেছি, দরকার হলে তোকেও মেরে ফেলবো।’ ওরা আমাকে ধাক্কা মেরে সিঁড়িতে ফেলে দিয়ে চলে যায়।

তিনি বলেন, পরে আমি দৌড়ে ৬ষ্ঠ তলায় যাই। মনজিল হকের বাসার দরজার ভিতরে যাই। ভিতরে গিয়ে দেখি দরজার ডান পার্শ্বে মনজিলের লাশ পড়ে আছে। এরপর আমি নীচে নেমে এসে ডেভেলপার কোম্পানির সাইট ইঞ্জিনিয়ার ও এমডি সাহেবকে ঘটনার বিষয়ে জানাই। পরে শুনেছি যে, আসামি ইয়াসিন তার মা লিপি আক্তার, চাচা ফারুক, মামা ইউসুফের সাথে পরামর্শ করে সে ভাড়াটিয়া তিন খুনির সহায়তায় ভিকটিম মনজিলকে হত্যা করেছে।

এ নিয়ে মামলাটিতে ২৪ জনের সাক্ষ্য শেষ হলো। আগামী ২২ আগস্ট আদালত পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ধার্য করেছেন বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আজাদ রহমান।

আসামিরা হলেন- মনজিলের সৎ মা লায়লা ইয়াসমিন লিপি, সৎ মামা আবু ইউসুফ নয়ন, সৎ ভাই একেএম ইয়াসিন হক, মামলার বাদী চাচা ফারুক মিয়া, রবিউল ইসলাম সিয়াম ও আবু ইউসুফ নয়ন। মাহফুজুল ইসলাম অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তার বিচার শিশু আদালতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

২০১৭ সালের ১১ ডিসেম্বর রাজধানী বাড্ডার আফতাবনগরে নিজ ফ্ল্যাটে হত্যার শিকার হন মনজিল হক। হত্যাকাণ্ডের পর চাচা ফারুক মিয়া (৫৮) বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের নামে মামলা করেন। পরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) তদন্তে উঠে আসে সম্পত্তির লোভে মনজিলকে সৎ মা লায়লা ইয়াসমিন লিপি, সৎ মামা আবু ইউসুফ নয়ন ও সৎ ভাই একেএম ইয়াসিন হক (২৫) ও মামলার বাদী চাচা ফারুক মিয়া (৫৮) হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা।

২০১৭ সালের ১১ ডিসেম্বর রাজধানীর বাড্ডা থানায় দায়ের করা এ মামলায় ২০২১ সালের ২৬ অক্টোবর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন সিআইডি পুলিশের ইন্সপেক্টর মো. শামসুদ্দিন।

/মামুন/এসবি/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়