ঢাকা     বুধবার   ০৩ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৯ ১৪৩১

টাকার লোভে যুগ্ম কমিশনারকে অপহরণ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:৪০, ২৪ আগস্ট ২০২৩   আপডেট: ১৮:৫৩, ২৪ আগস্ট ২০২৩
টাকার লোভে যুগ্ম কমিশনারকে অপহরণ

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ভুক্তভোগী নারী কর্মকর্তা মাসুমা খাতুন

৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ চেয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) এক নারী যুগ্ম কমিশনারকে অপহরণ করে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, নির্যাতনে তার বাম পা ভেঙে গেছে। চোখ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়া, মাথা ফেটে যায়। 

বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) বিকেলে রমনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল হাসান জানান, ওই নারীকে উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া এ ঘটনায় জড়িত তিন আসামিকে গ্রেপ্তারের পর তাদের বিরুদ্ধে ১৯ আগস্ট একটি মামলা হয়। মামলার তদন্ত হচ্ছে। 

তিনি আরও বলেন, গ্রেপ্তার মাসুদ তার সহযোগীদের জানিয়েছিল যুগ্ম কমিশনার মাসুমাকে অপহরণ করতে পারলেই মোটা অংকের টাকা আদায় করা যাবে। টাকার লোভেই এ অপহরণের ঘটনা ঘটানো হয়েছে। চক্রে একাধিক পেশাদার সদস্য রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের বর্ণনা অনুযায়ী মাসুদের অবয়বের একটি চিত্র তৈরি করা হয়েছে। তার মুখে দাঁড়ি আছে। আমরা তার বাসা খুঁজে বের করেছি। দ্রুতই তাকে ও তার সহযোগীদের গ্রেপ্তার করা যাবে বলে আশা করছি।

জানা গেছে, নির্যাতনে শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্ত জমাট বেঁধে যায় ওই নারীর। দেড় লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়ের পরও মন গলেনি অপরাধী চক্রের। মুক্তিপণের পুরো টাকা আদায়ের জন্য চলে তার ওপর শারীরিক নির্যাতন। দেওয়া হয় হত্যার হুমকি। হত্যার পর লাশ বস্তাবন্দী করে বুড়িগঙ্গায় ভাসিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়। ভাগ্যগুণে বেঁচে যান তিনি। ভুক্তভোগী ওই যুগ্ম কমিশনারের (ট্যাক্স) নাম মাসুমা খাতুন। তিনি এনবিআরের কর অঞ্চল-২ এ কর্মরত আছেন। নির্যাতনের শিকার মাসুমা খাতুন কোনও মতে বেঁচে যান। তিনি এখন রাজধানীর গ্রিন রোডে একটি বেসরকারি হাসপাতালে মুত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। 

ভুক্তভোগীর বরাতে জানা গেছে, গত ১৮ আগস্ট রাত ৮টার দিকে মাসুমা খাতুন মগবাজার থেকে নিজের গাড়িতে করে সিদ্ধেশ্বরীর বাসায় ফিরছিলেন। সোয়া ৮টার দিকে ভিকারুন্নেসা নুন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনের রাস্তায় গাড়িটি পৌঁছোলে একটি মোটরসাইকেল গাড়িতে ধাক্কা দেয়। চালক গাড়িটি থামালে অপহরণকারী চক্রের সদস্যরা জোরপূর্বক গাড়িচালকের কাছ থেকে চাবি কেড়ে নেয়। এরপর তারা মাসুমা খাতুন ও গাড়িচালক আনোয়ারকে মারধর শুরু করে। এক পর্যায়ে আনোয়ারকে গাড়ি থেকে বের করে দিয়ে মাসুমাকে তুলে অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে যায়। ওই রাতে সবুজবাগের একটি বাসার গ্যারেজে গাড়িটি ঢোকানো হয়। ওই গাড়িতেই আটকে রেখে তার ওপর রাতভর চলে নির্যাতন। 

নির্যাতনের সময় মাসুমা খাতুনের চিৎকার যাতে বাইরে না যায় সেজন্য তার মুখ কসটেপ নিয়ে আটকে দেওয়া হয়। পরে পানি চাইলে কসটেপ খুলে দেওয়া হয়। এভাবে পরদিন দুপুর ২টা পর্যন্ত থেমে থেমে চলে তার ওপর শারীরিক নির্যাতন। 

ঢাকা/মাকসুদ/এনএইচ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়