রাশিয়ায় বসে অনলাইন জুয়ার সাইট পরিচালনা, গ্রেপ্তার ৬
অনলাইন জুয়ার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। রাশিয়ায় বসে জুয়াড়িরা এসব অনলাইন সাইট নিয়ন্ত্রণ করে বলে পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে বেরিয়ে এসেছে।
শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) রাতে সিআইডি সদর দপ্তর থেকে আরও জানানো হয়, বৃহস্পতিবার (৩১ আগষ্ট) সিআইডি সাইবার ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড রিস্ক ম্যানেজমেন্টের একটি দল ঢাকার মোহাম্মদপুর, বনশ্রী ও আগারগাঁও এবং সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় রেজাউল করিম, সৈকত রহমান, সাদিকুল ইসলাম, নাজমুল আহসান, তৌহিদ হোসেন এবং জাকির হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, রাশিয়া থেকে মূলত এ সমস্ত অনলাইন জুয়ার ওয়েবসাইট নিয়ন্ত্রণ করা হয়। বিভিন্ন দেশে স্থানীয়ভাবে নিয়ন্ত্রণের জন্য ম্যানেজার নিয়োগ করা হয়। ম্যানেজার বাংলাদেশে জুয়ার এজেন্ট হিসেবে বিশ্বস্তদের নিয়োগ দেয়। জুয়ার এজেন্টরা এ সমস্ত অ্যাপস পরিচালনা করতে পারে দক্ষ এমন লোক রাখেন। গ্রেপ্তারকৃত রেজাউল করিম তার বাসায় ৭টি কম্পিউটার ও ৪টি ল্যাপটপ নিয়ে দক্ষ কয়েকজনকে সাথে নিয়ে আইটি ল্যাব তৈরি করে জুয়ার কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল। জুয়ার টাকা লেনদেনের জন্য তাদের সাথে যুক্ত হন গ্রেপ্তারকৃত সাদিকুল ও জাকির হোসেনের মতো এমএফএস এজেন্ট। নাজমুল, তৌহিদদের মতো এমএফএস ডিস্ট্রিবিউশন হাউজের কিছু অসাধু কর্মচারীর সহযোগিতায় এ চক্র এজেন্ট সিম সংগ্রহ করে অনলাইন জুয়ার কাজ নির্বিঘ্নে করতে পারে।
সিআইডি আরও জানায়, আটককৃত চক্রটি ঢাকার বিভিন্ন এলাকা এবং দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে এই জুয়ার কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। শরীয়তপুরের বাসিন্দা মতিউর রহমান যিনি রাশিয়ার মস্কোতে অবস্থান করছেন তিনি মূলত এই সাইটগুলোর বাংলাদেশের দায়িত্বে রয়েছেন। তার সহযোগী হিসেবে রয়েছেন যশোরের আশিকুর রহমান। এই দুজন এবং গ্রেপ্তারকৃত সৈকত ও রেজাউল ৪ জনের সমন্বয়ে বাংলাদেশে এ তিনটি ওয়েবসাইটের নিয়ন্ত্রণ করা হয়। তাদের মাধ্যমে জুয়ার এজেন্টরা ওয়েবসাইটে ব্যবহৃত এমএফএস (এজেন্ট সিম) ব্যবহার করে সারা বাংলাদেশ থেকে জুয়াড়িদের টাকা সংগ্রহ করে প্রতি মাসে চক্রটি এমএফএস এবং বিভিন্ন ব্যাংকের মাধ্যমে কয়েক কোটি টাকা লেনদেন করে। কমিশন বাবদ তারা টাকার একটা ক্ষুদ্র অংশ পেয়ে জুয়াড়িদের কাছ থেকে সংগৃহীত পুরো টাকা অ্যাপস পরিচালনাকারীদের কাছে হুন্ডি কিংবা ক্রিপ্টোকারেন্সিতে কনভার্ট করে রাশিয়াতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
পুলিশ জানায়, সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারের নিয়মিত মনিটরিংকালে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম Mel Bet, 1x Bet এবং Bet winner নামের বেটিং সাইটগুলো নজরে আসে। সিআইডি লক্ষ্য করে সেখানে বাংলাদেশের প্রচুর গ্রাহক বেটিং বা জুয়া খেলায় অংশগ্রহণ করছে। পরবর্তীতে সিআইডি প্রধানের দিক নির্দেশনায় উল্লিখিত সাইটগুলোর বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত এনালাইসিস করছে।
/মাকসুদ/এসবি/