প্রশ্নফাঁস : আইডিয়ালের শিক্ষিকাসহ ৬ জন রিমান্ডে

মেডিক্যাল কলেজের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের মামলায় গ্রেপ্তার ১০ আসামির মধ্যে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলের গভর্নিং বডির সংরক্ষিত মহিলা শিক্ষক সদস্য এবং সমাজ বিজ্ঞান বিষয়ের বহিষ্কৃত শিক্ষিকা মাকসুদা আক্তার মালাসহ ৬ জনের বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। অপর চার আসামির রিমান্ড ও জামিনের আবেদন নামঞ্জুর হয়েছে।

রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মইনুল ইসলামের আদালত শুনানি শেষে আদালত রিমান্ডের আদেশ দেন।

রিমান্ডে যাওয়া অপর আসামিরা-ডা. অনিমেষ কুমার কুণ্ড, ডা. কে এম বশিরুল হক, ডা. ইউনুচ উজ্জামান, ডা. জাকারিয়া আশরাফ ও ডা. জাকিয়া ফাবিরা।

এদের মধ্যে অনিমেষ কুমার, বশিরুল হক ও ইউনুচের চার দিন এবং অপর তিন আসামির দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

ডা. মৈত্রী সাহা, ডা. সাবরিনা নুসরাত রেজা টুসী, ডা. মুস্তাহিন হাসান লামিয়া ও ডা. নাজিয়া মেহজাবিন টিশার রিমান্ড নামঞ্জুর করেছেন আদালত।

এর আগে, গত ১৪ সেপ্টেম্বর তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুয়েল চাকমা মিরপুর মডেল থানায় প্রশ্ন ফাঁসের মামলায় আসামিদের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। আদালত আসামিদের উপস্থিতিতে রিমান্ড শুনানির দিন ১৭ সেপ্টেম্বর ধার্য করেন।

এদিন শুনানিকালে আসামিদের আদালতে হাজির করা হয়। তাদের পক্ষে কাজী নজিবউল্যাহ হিরুসহ কয়েকজন আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে এর বিরোধিতা করা হয়।

উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তিন জনের ৩ দিন, তিন জনের ২ দিন এবং চার আসামির রিমান্ড নামঞ্জুর করেন আদালত।

মিরপুর মডেল থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখার সাব-ইন্সপেক্টর আলমগীর হোসেন এসব তথ্য জানান।

সিআইডি’র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজাদ রহমান জানান, চলতি বছরের ৩০ জুলাই থেকে ২০ আগস্ট পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন জেলায় অভিযান পরিচালনা করে মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত ১২ চিকিৎসকসহ ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি সাইবার টিম। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ১০ জন মেডিক্যাল প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের কাছ থেকে মেডিক্যাল প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত চক্রের অন্য সদস্য ও মেডিক্যাল প্রশ্নপত্রের মাধ্যমে অসাধু উপায়ে বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি অসংখ্য শিক্ষার্থীর নাম পাওয়া যায়। এ ছাড়াও এ চক্রের মাস্টারমাইন্ড জসীম উদ্দিন ভূঁইয়া মুন্নুর কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া গোপন ডায়েরি থেকে সারা দেশে ছড়িয়ে থাকা চক্রের সদস্যদের সন্ধান পাওয়া যায়। এরই ধারাবাহিকতায় গত রোববার হতে মঙ্গলবার পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে মেডিক্যাল প্রশ্নফাঁস চক্রের অন্যতম মূলহোতাসহ ৭ জনকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি সাইবার টিম। গ্রেপ্তারকৃত মাকসুদা আক্তার মালা ঢাকার মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষিকা। ২০১৫ সালে নিজের মেয়ে ইকরাসহ আরও ৭ জন শিক্ষার্থীকে ফাঁসকৃত প্রশ্নপত্রের মাধ্যমে বিভিন্ন সরকারি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করিয়েছেন। ডা. কে এম বশিরুল হক থ্রি ডক্টরস কোচিং সেন্টারের পরিচালক। দীর্ঘদিন ধরে প্রশ্নফাঁস চক্রের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। প্রশ্নফাঁসের মাধ্যমে অসংখ্য শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করিয়েছেন।