রাজধানীতে সাংবাদিক পেটালেন ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা

রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় সংবাদ সংগ্রহের সময় এক সাংবাদিককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। মারধরের শিকার ওই সাংবাদিকের নাম মো. নাহিদ হাসান (সাব্বির)। তিনি নিউজ পোর্টাল জাগো নিউজের নিজস্ব প্রতিবেদক।

সোমবার (২০ নভেম্বর) রাত ১০টার পর ধানমন্ডির নর্দান মেডিক্যাল কলেজের সামনে এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর সেই রাতেই ধানমন্ডি মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তিনি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রোববার রাত ১০টার দিকে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ২০-২৫ জনের একটি দল একজন সাংবাদিকের ওপর চড়াও হয়। সেসময় তাদের নেতৃত্বে ছিলেন ধানমন্ডি নিউ মডেল ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি রাকিবুল ইসলাম ও ধানমন্ডি থানার ১৫ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের উপ-প্রচার সম্পাদক তামজিদ রহমান। একপর্যায়ে তারা সাংবাদিক সাব্বিরকে বেধড়ক মারধর করতে শুরু করেন তারা। 

ভুক্তভোগী সাংবাদিক নাহিদ বলেন, সেদিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে আমি সংবাদ সংগ্রহের কাজে ধানমন্ডির কেয়ারী প্লাজার সামনে যাই। তখন ছাত্রলীগ নেতা রাকিবুল ইসলামকে ফোন করলে সে আমার অবস্থান জানতে চায়। আমি নর্দান মেডিক্যালের সামনে আছি বললে সে আমাকে ‘পাঁচ মিনিটের মধ্যে আসতেছি' বলে জানায়। এরপর রাকিবুল সেখানে আসে। 

^{মারধরের ঘটনায় ধানমন্ডি মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী সাংবাদিক} 

তিনি বলেন, পরে যুবলীগ নেতা তামজিদের নেতৃত্বে ১০-১৫টি মোটরসাইকেলে চড়ে ২০-২৫ জন এসে জিজ্ঞেস করে— এখানে সাংবাদিক কে? জিজ্ঞাসা করেই তারা এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে। তারা আমার মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে পরিচয়পত্র দেখাতে চাইলে আরও বেশি মারধর করে। পরে ঘটনাস্থল থেকে কোনোভাবে বেঁচে ফিরে ঢাকা মেডিক্যালে চিকিৎসা নিই। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজই সবকিছুর প্রমাণ আছে।

জানতে চাইলে অভিযুক্ত ধানমন্ডি নিউ মডেল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মো. রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, অভিযোগটি একেবারেই ভিত্তিহীন। পথচারীদের হাত থেকে আমি তাকে বাঁচাতে গিয়ে উল্টো হামলার শিকার হয়েছি।

আরেক অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা তামজিদ রহমান বলেন, আমি কেয়ারী প্লাজার সামনে দিয়ে যাচ্ছিলাম। সেখানে জটলা দেখে যাই এবং কয়েকজনকে হাতাহাতি করতে দেখি। আমি থামাতে গেলে উল্টো হামলার শিকার হই। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, এটি একেবারেই মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।

হামলার শিকার সাংবাদিক নাহিদ হাসান বলেন, আমি ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই। যেন পরবর্তীতে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে কোন সাংবাদিকের এরকম হামলার শিকার না হতে হয়। 

এদিকে, ঘটনার পরপরই সেদিন রাতেই আহত সাংবাদিক দেখতে আসেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সভাপতি রাজিবুল ইসলাম বাপ্পি। সেসময় তিনি বলেন, হামলাকারীরা অপরাধী হিসেবেই বিবেচিত হবে। ঘটনার তদন্ত করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের কোনও নেতাকর্মীর সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে ধানমন্ডি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পারভেজ ইসলাম বলেন, আমরা তদন্ত করতেছি। তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।