ঢাকা     সোমবার   ০১ জুলাই ২০২৪ ||  আষাঢ় ১৭ ১৪৩১

পুলিশ হেফাজতে বডিবিল্ডারের মৃত্যু: মামলা তদন্তে ডিবি

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:০৬, ৩১ জানুয়ারি ২০২৪  
পুলিশ হেফাজতে বডিবিল্ডারের মৃত্যু: মামলা তদন্তে ডিবি

পুলিশ হেফাজতে বডিবিল্ডার ‘মিস্টার বাংলাদেশ’ ফারুক হোসেনের মৃত্যুর অভিযোগে বংশাল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাইনুল ইসলামসহ পাঁচ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা তদন্ত করতে ডিবি-কে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার (৩১ জানুয়ারি) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামানের আদালত এ আদেশ দেন।

সংশ্লিষ্ট আদালতের অ্যাডিশনাল পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল জানিয়েছেন, আগামী ২৮ মার্চ গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার ফারুকের স্ত্রী ইমা আক্তার হ্যাপী আদালতে মামলার আবেদন করেন। মামলায় আরও যাদের আসামি করা হয়েছে তারা হলেন—বংশাল থানার উপ-পরিদর্শক ইমদাদুল হক, আবু সালেহ, মাসুদ রানা ও বুলবুল আহমেদ। 

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত ১২ জানুয়ারি রাত সাড়ে ৯টার দিকে ফারুক হোসেন লালবাগের খাজা দেওয়ান সিং লেনের বাসা থেকে ব্যক্তিগত কাজে বের হন। এর এক ঘণ্টা পর ফারুক হোসেন স্ত্রীকে ফোন দিয়ে জানান, কায়েতটুলী ফাঁড়ির পুলিশ তাকে সন্দেহজনকভাবে গ্রেপ্তার করে আটকে রেখে নির্যাতন করছে। দুই বছরের সন্তানকে কোলে নিয়ে সেখানে ছুটে যান হ্যাপী। তিনি দেখেন, ফারুককে পুলিশ সদস্যরা মারধর করে আটকে রেখেছে। হ্যাপী সেখানে উপস্থিত এসআই ইমদাদুল হক, মাসুদ রানা, বুলবুল আহমেদসহ অন্যদের পা ধরে তার স্বামীকে ছেড়ে দেওয়ার আকুতি জানান। তখন ইমদাদুল হক তাকে বলেন, ‘ফারুক অনেক বড় ক্রিমিনাল, আমাদের গালিগালাজ করেছে। এমনিতে ছাড়া যাবে না। ওকে ছাড়তে হলে ১ লাখ টাকা লাগবে।’ তখন হ্যাপী বলেন, ‘আমার স্বামী সিটি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শোয়েবের ব্যক্তিগত দেহরক্ষী। আগে বডিবিল্ডার ছিলেন। তিনটি ছোট ছোট সন্তান, তার ইনকামেই সংসার চলে। তাকে ছেড়ে দিন।’ পরে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন পুলিশ সদস্যরা। হ্যাপীকে কুপ্রস্তাবও দেন তারা। এতে রাজি না হওয়ায় আসামিরা ফারুককে ব্যাপক মারধর করে। পুলিশ অভিযোগ করে, ফারুক মাদক ব্যবসায়ী। তারা কিছু করতে পারবেন না। তাদের বড় স্যার জানেন, কী করা হবে। এর কিছুক্ষণ পর ফারুককে মোটরসাইকেলে করে বংশাল থানার দিকে নিয়ে যাওয়া হয়।

হ্যাপী তখন ওসি মাইনুল হোসেনের হাত-পা ধরে স্বামীকে ছেড়ে দিতে অনুরোধ করেন। কিন্তু, তাতে কোনো কাজ হয় না। পুলিশ হ্যাপীকে পরের দিন সিএমএম আদালতে যোগাযোগ করতে বলে। হ্যাপী কোর্টে যান স্বামীর খবর নিতে। সেখানে অনেক কষ্টে স্বামীর সাক্ষাৎ পান। স্ত্রীকে মারধরের কথা জানান ফারুক। তার কিছু হলে আদালতে বিচার চাইতে বলেন। ফারুকের বিরুদ্ধে ১৫০ গ্রাম গাঁজার মামলা দেওয়া হয়েছে বলে জানতে পারেন হ্যাপী। ১৫ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে এক ব্যক্তি হ্যাপীকে জানান, ফারুক মারা গেছেন। হাসপাতালের মর্গে গিয়ে তিনি স্বামীর লাশ দেখতে পান। ফারুকের গলায়, বুকে, পিঠে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পান হ্যাপী।

মামুন/রফিক

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়