ঢাকা     রোববার   ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  আশ্বিন ১৪ ১৪৩১

ফেরদৌস আরার হয়ে কারাগারে ময়না, অবশেষে ধরা

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২৩:০২, ৪ জুন ২০২৪  
ফেরদৌস আরার হয়ে কারাগারে ময়না, অবশেষে ধরা

চেক ডিজঅনারের মামলায় ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড এবং ৬ মাসের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ফেরদৌস আরা ওরফে আরিফার হয়ে আদালতে আত্মসমর্পণ করে কারাগারে যান ময়না বেগম (২৫)। 

গত ২৯ মে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারক আলী হোসাইনের আদালতে আত্মসমর্পণ করেন ময়না বেগম। তিনি ফেরদৌস আরা ওরফে আরিফা নামে ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করেন। আত্মসমর্পণের সময়ই আদালতের সন্দেহ হয়। কারণ, মামলার কাগজপত্রে আরিফার বয়স ৬২ বছর থাকলেও আত্মসমর্পণকারী আসামির বয়স ২৫ বছরের মতো মনে হয়। বিচারক জিজ্ঞাসা করলে তিনি নিজেকে ফেরদৌস আরা ওরফে আরিফা বলেই জোরালোভাবে উল্লেখ করেন। তখন বিচারক আলী হোসাইন আসামির আইনজীবী আকরাম হোসেনকে আত্মসমর্পণকারী মহিলাই যে ফেরদৌস আরা, সে মর্মে হলফনামা দিতে বলেন। আইনজীবী তাও তৈরি করে দেন এবং সেখানে ওই নারী ফেরদৌস আরা মর্মে স্বাক্ষর করেন। এর পর আদালত তার জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। কিন্তু, আদালতের সন্দেহ থেকেই যায়। তাই, আদালত কারা কর্তৃপক্ষকে আসামির ফিঙ্গার প্রিন্ট পরীক্ষার নির্দেশ দেন। সে নির্দেশ অনুযায়ী কারা কর্তৃপক্ষ ফিঙ্গার প্রিন্ট পরীক্ষা করে আত্মসমর্পণকারী নারী যে ময়না বেগম, তা নিশ্চিত করে আদালতে প্রতিবেদন পাঠায়।

আদালতের নির্দেশে মঙ্গলবার কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয় ময়না বেগমকে। তখন তিনি আদালতে স্বীকার করেন, প্রকৃত আসামি ফেরদৌস আরা তার আত্মীয়। ফেরদৌস আরার অনুরোধে তিনি তার পরিচয়ে আত্মসমর্পণ করেন। এর পর বিচারক প্রতারণার অভিযোগে ময়না বেগম, ফেরদৌস আরা, ইউনুছ আলী, আব্দুল মান্নান ও আইনজীবী আকরাম হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করার নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে প্রকৃত আসামি ফেরদৌস আরার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

এ সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট আদালতে স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর রফিক উদ্দিন বাচ্চু বলেন, চেক ডিজঅনারের মামলায় ২০১৪ সালে তার আদালত (ঢাকার ৩ নম্বর বিশেষ জজ) আসামি ফেরদৌস আরাকে ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড এবং ৬ মাসের কারাদণ্ড দেন। রায় ঘোষণার পর আসামি অর্থদণ্ডের ৫০ ভাগ টাকা জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করে আপিলের শর্তে জামিন নেন। এর পর তিনি হাইকোর্টে আপিল করেন। কিন্তু, আপিলটি হাইকোর্ট খারিজ করে বিচারিক আদালতের রায় বহাল রেখে আসামিকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশের পর ফেরদৌস আরার পরিবর্তে ময়না বেগম আত্মসমর্পণ করেন। 

তিনি বলেন, প্রথম থেকেই আসামিকে নিয়ে আদালতের সন্দেহ ছিল। অবশেষে সন্দেহই সত্য হলো।
 

মামুন/রফিক


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়