প্রশ্নফাঁস: গাড়িচালক আবেদ আলীসহ গ্রেপ্তার ১৭
গাড়িচালক আবেদ আলী। ছবি: সংগৃহীত
পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় দুই উপপরিচালক ও গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলীসহ ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সোমবার (৮ জুলাই) তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানা গেছে। তবে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত পুলিশের এ সংস্থার দায়িত্বশীল কোনও কর্মকর্তা এখনও গণমাধ্যমকে কিছু জানাননি।
সিআইডি সূত্রে জানা গেছে, গ্রেপ্তারকৃতদের নিয়ে এখনও রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে আরও বেশ কয়েকজন জড়িত। এ কারণে তাদেরও আইনের আওতায় নিয়ে আসার চেষ্টা করছে সিআইডি। গ্রেপ্তারকৃতদের প্রাথমিক দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। অভিযান শেষে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।
রোববার (৭ জুলাই) রাতে বেসরকারি একটি টেলিভিশন চ্যানেলে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশের পর সাঁড়াশি অভিযানে নামে সিআইডি।
জানা গেছে, বহুল আলোচিত গাড়িচালক আবেদ আলীসহ পিএসসির সম্পতি প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করে বেসরকারি একটি টেলিভিশন। এরপরই এর তদন্তে নামে সিআইডি। আবেদ আলীর বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির খোঁজ পেয়েছে সংস্থাটি।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, অভিযুক্ত পিএসসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা হলেন উপপরিচালক মো. আবু জাফর, উপ-পরিচালক জাহাঙ্গির আলম, সহকারী পরিচালক এস এম আলমগীর কবির, সহকারী পরিচালক নিখিল চন্দ্র রায়, চেয়ারম্যানের সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী জীবন ও অফিস সহায়ক খলিলুর রহমান। বিপিএসসির কোনও নিয়োগ পরীক্ষা এলেই প্রশ্নফাঁস করে অর্থ লোপাটে মেতে উঠতো সংঘবদ্ধ চক্রটি।
প্রশ্নফাঁসকারী চক্রটি গত ৫ জুলাই (শুক্রবার) অনুষ্ঠিত রেলওয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলীর নিয়োগ পরীক্ষাকে বেছে নেয়। এই পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস ও জালিয়াতির তথ্য ফাঁস করতে ছদ্মবেশ ধারণ করে অনুসন্ধানী সাংবাদিক টিম। ছদ্মবেশী এক নিয়োগপ্রত্যাশী প্রার্থীকে তুলে দেওয়া হয় চক্রের সদস্যদের হাতে। এরপর ৫ জুলাই সকাল ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত যে প্রশ্নে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়, হোয়াটসঅ্যাপে তার একটা কপি পাঠানো হয় পরীক্ষার অন্তত এক ঘণ্টা আগে। আর অজ্ঞাত স্থানে রেখে চুক্তিবদ্ধ শিক্ষার্থীদের তা পড়ানো হয় আগের রাতেই।
পড়ুন: হোটেল-গাড়ির মালিক ড্রাইভার আবেদ আলী, চেয়েছেন উপজেলা চেয়ারম্যান হতে
চক্রটির প্রধান বিপিএসসির অফিস সহায়ক সাজেদুল ইসলাম বলেন, উপ-পরিচালক মো. আবু জাফরের মাধ্যমে ২ কোটি টাকার বিনিময়ে শুক্রবার (৫ জুলাই) অনুষ্ঠিত রেলওয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস করা হয়। তিনি বড় কর্মকর্তাদের ট্রাঙ্ক থেকে পরীক্ষার আগের দিন আমাকে প্রশ্ন সরবরাহ করেন। আমি এটাও জানি ৪৫তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রশ্নও ফাঁস করা হয়।
প্রকাশিত সংবাদে বিসিএস’র প্রশ্নফাঁসে জড়িত থাকার অভিযোগে আলোচনায় আসেন সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) সাবেক চেয়ারম্যানের গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী ও তার ছেলে সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়াম। সোমবার দুপুর থেকে বাবা-ছেলের দুজনের নানান কর্মকাণ্ডের ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়।
মাকসুদ/এনএইচ