ঢাকা     রোববার   ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||  ভাদ্র ১৭ ১৪৩১

বিকেল ৩টা পর্যন্ত যেমন ছিলো যাত্রাবাড়ীর চিত্র

মামুন খান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:০১, ১৮ জুলাই ২০২৪  
বিকেল ৩টা পর্যন্ত যেমন ছিলো যাত্রাবাড়ীর চিত্র

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ডাকা ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ চলছে দেশজুড়ে। শাটডাউনে অচল হয়ে পড়েছে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকাও। ভোর থেকেই এ এলাকায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। রাস্তায় অবস্থান করছে আন্দোলনকারীরা। তাদের সমর্থন জানিয়ে রয়েছেন বিভিন্ন পেশার মানুষ। রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। এদিকে, যান চলাচল স্বাভাবিক করতে রাস্তায় নামে পুলিশ। এতেই শুরু হয় সংঘর্ষ। রণক্ষেত্রে পরিণত হয় যাত্রাবাড়ী, কাজলা এলাকা।

বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) বিকেল ৩টা পর্যন্ত দেখা গেছে, যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। আন্দোলনকারীরা রাস্তায় অবস্থান করছেন। তারা বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন।

মঙ্গলবার সকাল ১১টা থেকে যাত্রাবাড়ী এলাকায় ঢাকা-চিটাগংরোড অবরোধ করে আশপাশের এলাকার স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। প্রথম দিন মোটামুটি শান্তিপূর্ণভাবে অবরোধ শেষ করে সন্ধ্যার পর রাস্তা ছেড়ে দেয় তারা। বুধবার বেলা পৌনে ১টার দিকেও তারা ব্যস্ততম এ রাস্তা অবরোধ করে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। পুলিশ তাদের বুঝিয়ে অবরোধ তুলে নিতে বললেও তারা সেটা আমলে নেয়নি। বিকেলে পরিস্থিতি খারাপ হতে থাকে। সংঘর্ষে জড়ায় পুলিশ-আন্দোলনকারীরা। পুলিশের ছোড়া সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারসেলে আন্দোলনকারীসহ কয়েকজন আহত হয়। এরপর সন্ধ্যা থেকে রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে অবস্থান নেয় তারা। রাত ১০টার পর পুলিশ আবার অ্যাকশনে যায়। আন্দোলনকারীরাও অনড় অবস্থানে থাকেন। তারা মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারের টোল প্লাজা ভেঙে আগুন ধরিয়ে দেয়। রাস্তার পাশে থাকা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে হামলা চালায়। এভাবে চলে রাতভর। শিক্ষার্থীরা রাস্তায় অবস্থান নেয়। রাত তিনটার দিকেও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে পুলিশ। ভোরের দিকে ঢাকা-চিটাগংরোড নিয়ন্ত্রণে নেয় পুলিশ। এ সময় কিছু যানবাহনও চলাচল করে। তবে, ভোর থেকে আন্দোলনকারীরা আবার রাস্তায় আসেন। যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। পুলিশের হামলায় কয়েকজন আহত হওয়ার প্রতিবাদে তারা যাত্রাবাড়ী থানার দিকে আগাতে থাকে। পুলিশও তাদের প্রতিহত করে। সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে দুই পক্ষ। 

শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ হামলার প্রতিবাদে আন্দোলনকারীদের সমর্থন দিয়ে সকাল ৯টা থেকে বিভিন্ন পেশার মানুষ রাস্তায় নেমে আসেন। সড়কে আগুন জ্বালিয়ে বিভিন্ন স্লোগানে দিতে থাকেন তারা। এভাবে চলে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত। ধীরে ধীরে পুলিশ যাত্রাবাড়ী থেকে টিয়ারসেল, সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করতে করতে কাজলার দিকে আসতে থাকে। শিক্ষার্থীরা পাল্টা আক্রমণের প্রস্তুতি নেয়। তারা পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। পুলিশ মুর্হুমূর্হু সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করতে থাকে। আন্দোলনকারীরা পিছ হটে আবার পুলিশকে প্রতিহত করতে সামনে অগ্রসর হয়। এভাবেই চলতে থাকে। অলিগলিতেও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে পুলিশ। এরই মাঝে বিজিবি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের থামানোর চেষ্টা করে। কিন্তু তা বৃথা যায়। কিছুক্ষণ পর তারাও চলে যায়।

আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, তাদের কয়েকজন আহত হয়েছেন। এর প্রতিবাদে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে তারা রাস্তায় অবস্থান করছেন। বিকেল ৩টা পর্যন্ত তারা রাস্তায় থেকে বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন। এরই মাঝে আন্দোলনকারীরা কাজলায় আওয়ামী লীগ অফিসে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। এখনো থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। তারা ভাগ হয়ে কুতুবখালী বড় মসজিদ এলাকার সামনে, কাজলা বাসস্ট্যান্ডে, দনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সামনে অবস্থান করছেন।

এদিকে, রাস্তা অবরোধের কারণে ঢাকা-চিটাগংরোডে আটকা পড়েছে কয়েক শ গাড়ি। চালকেরা দুশ্চিতায় সময় পার করছেন। সকালের দিকে ভোগান্তিতে পড়েন কর্মে যাওয়া মানুষেরা। অনেকে পায়ে হেঁটে অফিসে দিকে রওনা করেন।

/এনএইচ/


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়