সঠিকভাবে আমার চিকিৎসার প্রয়োজন: আদালতকে শাহরিয়ার কবির

একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির আদালতকে জানিয়েছেন, সঠিকভাবে আমার চিকিৎসার প্রয়োজন। গত চার মাস ধরে আমি অসুস্থ। 

রোববার (১৯ অক্টোবর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আলী হায়দারের আদালতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে রফিকুল ইসলাম হত্যা মামলায় রিমান্ড শুনানিতে তিনি একথা বলেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা যাত্রাবাড়ী থানার সাব-ইন্সপেক্টর মাহাবুল ইসলাম তার ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ডের পক্ষের শুনানি করেন। শুনানিতে তিনি বলেন, শাহরিয়ার কবির এজাহারভুক্ত ৩৯ নং আসামি। আসামিদের নির্দেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলি চালানো হয়। এতে অনেক শিক্ষার্থী আহত হয়। নিহত হয় যাত্রাবাড়ীতে রফিকুল ইসলাম নামে ওই ব্যক্তি। এই আসামি একজন নাস্তিক। মুসলমানদের বিরুদ্ধে উনি অনেক কথা বলেছেন। নাস্তিকেরা আবার আওয়ামী লীগ সরকারকে পছন্দ করতেন। আ.লীগ সরকারও নাস্তিকদের ভরণ-পোষণ করে। তাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললে তারা আবার রুখে দাঁড়াতেন।

ওমর ফারুক বলেন, এই হত্যার সাথে আসামি জড়িত। মামলার তদন্তের স্বার্থে প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করছি। 

এরপর আসামি পক্ষের আইনজীবী শ্রী প্রাণনাথ রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন শুনানি করেন। তিনি বলেন, আসামির বিরুদ্ধে মামলায় সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নেই। তিনি একজন শিক্ষক, কলামিস্ট। সারাজীবন শিক্ষকতা করেছেন। আসামির হার্টের সমস্যা, ডায়াবেটিস, পায়ে রড লাগানো। তিনি অসুস্থ ব্যক্তি। যেহেতু তিনি অসুস্থ, তাই এ মামলার জিজ্ঞাসাবাদ করার প্রয়োজন হলে তাকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে। 

শুনানি শেষে বিচারককে উদ্দেশ্য করে এই আইনজীবী বলেন, শাহরিয়ার কবির কিছু বলতে চায়। আপনি অনুমতি দিলে। 

আদালত অনুমতি দিলে শাহরিয়ার কবির বলেন, আমি এর আগে রিমান্ডে গিয়েছি। হুইল চেয়ার ছাড়া হাঁটতে পারি না। আমার পায়ে সমস্যা। মামলার বিষয়ে আমি কিছুই বলতে চায় না। তবে সঠিকভাবে আমার চিকিৎসার প্রয়োজন। গত চার মাস ধরে আমি অসুস্থ। আমি এখনো চিকিৎসার জন্য কারা হাসপাতালে রয়েছি। কাশিমপুর কারাগারে আমার ট্রিটমেন্ট হচ্ছে না। আমি সর্দি, কাশি, জ্বরসহ নানা রোগে আক্রান্ত। আমার ভালো ট্রিটমেন্টের জন্য একটু পুলিশ সুপারকে বলে দিতেন, তাহলে ভালো হতো। যদিও আইনজীবী এই বিষয়ে বলেছেন। 

এ সময় এক বিএনপিপন্থী আইনজীবী চিৎকার করে বলেন, অনেক বলেছেন, আর না। থামেন এবার থামেন। 

এরপর ওমর ফারুক বলেন, যখন বাইরে কোনো মিছিলে তাকে দেখি, তখন তিনি সুস্থ থাকেন। আদালতে আসলে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এগুলো সব টালবাহানা।

এ সময় শাহরিয়ার কবির রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, গত চার মাস আমাকে বাইরে কোথায় দেখেছেন। কোন ছবি/ভিডিও দেখাতে পারবেন। তবে এই প্রশ্নে জবাব দেননি রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী। 

পরে আদালত তার দুই দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।